• ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ভোটারদের টাকা দিতে বাঁধা দেওয়ায় প্রতিপক্ষের কর্মীকে ছুকিাঘাতে হত্যা

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত এপ্রিল ১১, ২০২৪, ২০:৩২ অপরাহ্ণ
ভোটারদের টাকা দিতে  বাঁধা দেওয়ায়  প্রতিপক্ষের কর্মীকে ছুকিাঘাতে  হত্যা

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : আমতলীর এক ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোটারদের টাকা দিতে বাঁধা দেওয়া ঘোড়া প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোতাহার উদ্দিন মৃধার এক কর্মী হিরন গাজীকে (৫০) ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার সময় পূর্বমহিষডাঙ্গা গ্রামে এঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে পাঠিয়েছে। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুয়ায়ী আগামী ২৮ এপ্রিল আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ভোটকে ঘিরে ইউনিয়ন ব্যাপী চলছে প্রচার প্রচারনা। এর মধ্যেই বুধবার রাতে ঘটেছে এক হত্যা কান্ডের ঘটনা।

ঘটনার দিন বুধবার রাতে চেয়ারম্যান পদের প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী অটোরিকসা প্রতিকের আবুল বাশার নয়ন মৃধার নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন কর্মী সমর্থক নিয়ে বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার সময় পূর্ব মহিষডাঙ্গা গ্রামে ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে টাকা দিচ্ছেন। এ খবর পেয়ে ওই গ্রামের বাসিন্দা ঘোড়া প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোতাহার উদ্দিন মৃধার কর্মী হিরন গাজী ১০-১২ জন কর্মী সমর্থক নিয়ে পূর্ব মহিষডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বসে বাঁধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আবুল বাশার নয়ন মৃধা। এসময় বাকবিগন্ডার এক পয়ায়ে আবুল বাশার নয়ন মৃধার কর্মী সমর্থকরা হিরন গাজীর বুকে ছুরিকাঘাত করে। তাৎক্ষনিক সে মাটিতে লুটিয়ে পরে। গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত রক্তাত্ব হিরন গাজীকে তার সহযোগিরা উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক কাঙ্খিতা মন্ডল তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই রাতেই পুলিশ হিরন গাজীর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে তার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে প্রেরন করে।

হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বরগুনার জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম, বরগুনা পুলিশ সুপার আব্দুস ছালাম পিপিএম, সহকারী পুলিশ সুপার রুহল আমিন ও ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহত হিরন গাজীর স্ত্রী তাসলিমা বেগম বলেন, মোর স্বামীরে আবুল বাশার নয়ন মৃধার নেতৃত্বে হামলা কইর‌্যা মাইর‌্যা হালাইছে। মুই এইয়ার বিচার চাই। ঘোড়া প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, আবুল বাশার নয়ন মৃধার নেতৃত্বে তার ভাই এজেড এম ছালেহ পাননু মৃধা, সফিউল আজম সোহেল গাজী, সোহাগ প্যাদা ও আজাদসহ ৪০-৫০ জন পূর্ব মহিষডাঙ্গা গ্রামে ঢুকে টাকা বিতরন করছিল।

ওই সময় আমার কর্মী হিরন গাজীর নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে প্রতিবাদ করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে হিরন গাজীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যাকা-ের বিচার চাই। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল বাশার নয়ন মৃধা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই হত্যা কান্ডের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নাই। প্রয়োজনে আমার মোবাইল ট্রাকিং করা হোক এবং ওই সময় আমি বাসায় ছিলাম সেখানে আমার বাসার সিসি ক্যামেরারর ফুটেজ পরীক্ষা করা হোক। এতে যদি খুনের সাথে আমার জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া যায় তাহলে যে শাস্তি হবে আমি তা মাথা পেতে নেব। এমনকি আমার কোন কর্মী সমর্থকও যদি এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকে তাহলেও আমি এর কঠিন বিচার দাবী করছি। আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক কাঙ্খিতা মন্ডল বলেন, নিহত হিরন গাজীর বুকে ছুরির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এতেই তার মৃত্যু হয়েছে।

আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, নির্বাচনে দুই প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বাগবিতন্ড হয়। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে হিরন গাজী নিহত হয়। তাকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেছেন। লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে পাঠঅনো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার জোর চেষ্টা চলছে।#