দীর্ঘ দিন ধরে ফাঁকা পড়ে আছে বরগুনা পৌর বাস টার্মিনালের টিকিট কাউন্টার। পরিবহনগুলোর টিকিট কাউন্টারে টিকিট বিক্রি না করে যত্রতত্র বিক্রি করা হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
তবে বিষয়টি অবগত নয় জানিয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক জানান, যাত্রী হয়রানি বন্ধে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সরেজমিনে বরগুনা পৌর বাস টার্মিনালে ঘুরে দেখা যায়, অর্ধশতাধিক বাস পার্কিং করে রাখার সুবিধা রয়েছে এখানে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য ১৬টি টিকিট কাউন্টার, দুটি ওয়েটিং রুমসহ রয়েছে অন্যান্য প্রয়োজনীয় জায়গা। এছাড়া টার্মিনালের চারপাশে রয়েছে নানা প্রজাতির সৌন্দর্যবর্ধক গাছ, দৃষ্টি নন্দন ফুটপাত। তবে এই দৃষ্টিনন্দন বাস টার্মিনালে এসে যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। কাউন্টারে টিকিট বিক্রি না হওয়ায় পরিবহন শ্রমিকদের টানা হেঁচড়ায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।
বাস টার্মিনালে আসা যাত্রী শিমুল বলেন, টিকিট কাটতে টার্মিনালের এসেছি। কিন্তু এখানের টিকিট কাউন্টারগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। তাই টিকিট কাটতে পারিনি। এখানে টিকিট কাউন্টার খুঁজে বের করে তারপর টিকিট কাটতে হবে।
অপর যাত্রী ইসমাইল বলেন, টিকিট কাউন্টারের টিকিট বিক্রি না করে পরিবহনগুলো তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী যত্রতত্র টিকিট বিক্রি করেন। এতে আমাদের ভোগান্তি বেড়েছে। আমরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি।
আলী হোসেন নামের আরেক যাত্রী বলেন, শহরের এক এক স্থানে এক একটি টিকিট কাউন্টার। যা সকল যাত্রীর পক্ষে খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। এই টিকিট কাউন্টারগুলো যদি বাস টার্মিনাল থাকতো, তাহলে খুব সহজেই আমরা টিকিট কাটতে পারতাম। এতে আমাদের ভোগান্তি হত না।
বরগুনা জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা কিসলু বলেন, টার্মিনালে যতগুলো টিকিট কাউন্টার আছে তার থেকে বেশি কোম্পানির বাস বরগুনায় চলাচল করে। এজন্য টিকিট কাউন্টারগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। তাই টিকিট কাউন্টারগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। পরিবহন কোম্পানিগুলো তাদের সুবিধাজনক স্থানে কাউন্টার স্থাপন করে টিকিট বিক্রি করছেন। তবে এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাব।
জেলা যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম টিটু মোল্লা বলেন, উদ্বোধনের দুই বছর হয়েছে এই টার্মিনালের। এখনও বরগুনা পৌর বাস টার্মিনালের টিকিট কাউন্টার চালু করা সম্ভব হয়নি। এজন্য আমি বাস মালিক সমিতি এবং পৌরসভাকে দায়ি করব। পৌরসভা যথাযথ পদক্ষেপ নিলে এতদিনে টিকিট কাউন্টার চালু করা যেত। যাত্রী হয়রানি কমে যেত।
বরগুনা পৌরসভা মেয়র অ্যাড. কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, কাউন্টারগুলো বাস মালিক সমিতির কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। কিন্তু কেন তারা এগুলো ব্যবহার না করে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিভিন্ন স্থানে টিকিট বিক্রি করছে— তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে আমি বাস মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবো।
জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে এর আগে আমি অবগত ছিলাম না। এ বিষয়ে বাস মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে কাউন্টারের টিকেট বিক্রির ব্যবস্থা করব।