• ৩রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১০ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

শেবাচিমে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে মানববন্ধন

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত আগস্ট ১৮, ২০২৫, ১৭:১৫ অপরাহ্ণ
শেবাচিমে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে মানববন্ধন

বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল॥ স্বাস্থ্য খাত সংস্কার নিয়ে বরিশালে পক্ষে-বিপক্ষে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। সংস্কারের পক্ষে আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করেছেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে মানববন্ধন করেছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা।

একই সাথে তারা হামলাকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন। অন্যথায় কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে পৃথক স্থানে এসব কর্মসূচি পালিত হয়।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করেন ডাক্তার, নার্স, ফার্মাসিস্ট, কর্মচারীরা। তবে তার আগে বহির্বিভাগের চিকিৎসা বন্ধ করে দেন দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রোগী ও স্বজনরা হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিল্ববাড়ি থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ফাতেমা বেগম বলেন, আগেও ডাক্তাররা রোগীর কথা না শুনেই ওষুধ লিখে দিতো। এখন এসে দেখি ডাক্তারই নাই। হাসপাতালের কোথাও ডাক্তার নাই। তারা মিছিল মিটিং নিয়া ব্যস্ত।

আরেক রোগীর স্বজন আব্দুল সালাম হাজী বলেন, খুব সকালে এসে টিকেট নিয়েছি। সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ডাক্তারের রুমের সামনে আছি। কোন ডাক্তার নেই। বরিশালবাসীকে জিম্মি করে ফেলেছে হাসপাতালের ডাক্তাররা।

এদিকে মানববন্ধনে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল মোনায়েম সাদ বলেন, আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি।

কিছু অযৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনের নামে চিকিৎসকদের ওপর হামলা, কর্মচারীদের আহত করার ঘটনা ঘটেছে। এমতাবস্থায় চিকিৎসা সেবা দেওয়া দুঃসাধ্য ব্যাপার।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র জনস্বার্থে আগামী ৪৮ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। এর মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হলে আমরা দায়িত্ব পালন বন্ধ রাখবো।

মিড লেভেল ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. শাখাওয়াত হোসেন সৈকত বলেন, গতকাল মহিউদ্দিন রনির নেতৃত্বে হাসপাতালের প্রবেশ পথে অবস্থান নিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তারা মেডিসিন ইউনিট-২ এর মেডিকেল অফিসার ডা. দিলিপ রায়কে মারধর করে।

চিকিৎসকের ওপর এমন নির্যাতন ও হাসপাতালের সামনে তারা অবস্থান নেওয়ায় রোগীরা যেমনিভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তেমনি আমাদের চিকিৎসকরা কর্মস্থলে নিরাপত্তা না থাকায় ঘটনার পর থেকেই কর্মস্থল ত্যাগ করেন।

এর কারণে হাসপাতালের চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়। তবে মুমূর্ষু রোগীদের স্বার্থে আমরা মিড লেভেল চিকিৎসকরা বিকেল ৫টার পর থেকে শুধু মাত্র জরুরি সেবা চালিয়ে যাচ্ছি।

ওদিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বেলা সাড়ে ১১টায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে শিক্ষার্থীরা। টানা ২১তম দিনের মতো এই কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন তারা।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মহিউদ্দিন রনি বলেন, শের-ই-বাংলাসহ সারাদেশের মেডিকেল সেক্টরের অব্যবস্থাপনা দূর করাসহ তিন দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে, অনশন করছে।

অথচ আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বারবার আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। শেবাচিম হাসপাতালের সিন্ডিকেটের সদস্যরা আমাদের ওপর হামলা করে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করছে।

যারা হামলা করেছে আমরা চিহ্নিত করেছি, তারা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ছিল। এই রকমের নিষিদ্ধ সংগঠনের লোকজনই সিন্ডিকেট পরিচালনা করছেন।

তিনি বলেন, আমাদের উত্থাপিত তিন দফা দাবি মেনে নেওয়া হোক এবং শিক্ষার্থীদের ওপর যারা হামলা করেছে তাদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হোক।