বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি ॥
বাকেরগঞ্জের ভরপাশা ইউনিয়নে এক বিধবা নারীকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ ও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার পায়তারা করার অভিযোগ করেছেন অসহায় রাশিদা বেগম (৫০)।
তার স্বামী মুনসুর সিকদার মারা যাওয়ার পরে রাশিদা বেগম ও তার তিন সন্তানকে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা পরিকল্পিতভাবে তার বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ ও জাল দলিলের মাধ্যমে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ করেন তিনি। এ বিষয়ে রাশিদা বেগম গত ১৪ নভেম্বর ২০১৬ তে ভরপাশা ইউনিয়ন পরিষদে, গত ১২ এপ্রিল ২০১৭ তে বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি জালিয়াতি মামলা করেন তিনি। মামলা নং-সিআর-৪৬৯/১৬। পর্যায়ক্রমে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।
পরে তিনি তার জমি রক্ষার্থে গত ২৪ নভেম্বর ২০১৭ তে বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪/১৪৫ ধারা মোতাবেক একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩৬৬/১১৭। মামলাটি চলমান রয়েছে। স্থানীয় গন্যমান ব্যক্তিবর্গ ও পুলিশের ধারে ধারে ঘুরেও কোন সুবিচার পাচ্ছেন না রাশিদা বেগম। সূত্রে জানা যায়, রাশিদা বেগম বছর তার স্বামী মৃত মুনসুর সিকদারের সংসার করেন।
প্রায় ২০ বছর আগে তার স্বামী মারা যায়। স্বামী মুনসুর সিকদার মারা যাওয়ার পর থেকেই রাশিদা বেগম ও তার সন্তানদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ ও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পরিকল্পনা করে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা। ভূমিদস্যুরা হলেন মৃত আক্কেল আলী শিকদারের পুত্র মোনজেত শিকদার, মোনজেত শিকদারের তিন ছেলে মন্টু, জাকির ও আফান। রাশিদ বেগমকে তার বসতভিটা থেকে চলে যেতে বলে ভূমিদস্যুরা। সে যেতে না চাইলে কয়েক দফা মোনজেত বাহিনী ও তার ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে তার বসত ঘরে হামলা চালিয়ে আসছে তারা। ভূমিদস্যুদের ভয়ে রাশিদা বেগম তার বসত ঘরে ছেড়ে বরিশালের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছো। একপর্যায় গত ২৪ জুন সন্ধ্যায় সে বাড়িতে আসলে দেখতে পায় তার স্বামীর বসত ঘরটি মাটিতে ফেলে রাখে দেয় ওই ভূমিদস্যুরা।
এ বিষয়ে রাশিদা বেগম জানায়, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পরে কৃষ্ণকাঠী মৌজার ৬০নং খতিয়ানের ৬২৯৪ দাগের ৫০ শতাংশ ও ৬১ নং খতিয়ানের দাগ নং-৬৩৯৪ (বাড়ি), ৬৩৯৮ (বাগান), ৬৩৭৪ (নাল জমি) ও ৬৪০৮ নং দাগে মোট ৪৬ শতাংশ জমি পাই। যার মধ্যে ওয়ারিশ সূত্রে পাই ২০ শতাংশ ও বাকী ২৬ শতাংশ সম্পত্তি আমি নিজে ক্রয় সুত্রে মালিক হই। আমাকে ও আমার পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ ও সম্পত্তি দখল করতে অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও পায়তারা চালিয়ে আসছিল তারা। তাদের ভয়ে আমি আমার স্বামীর বসত ভিটা ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াতাম।
একপর্যায় ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বাড়ি এসে দেখতে পাই আমার ঘরটি ভেঙ্গে চুরে মাটির সাথে মিশিয়ে রেখে দেয় ভূমিদস্যুরা। আমার ঘর ভাঙ্গার বিষয়ে স্থানীয় আশে-পাশের লোকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, মোনজেত ও তার তিন ছেলে মন্টু, জাকির এবং আফান তাদের লোকজন নিয়ে ভেঙ্গে মাটিতে ফেলে দেয়। তাদের ভয়ে আমার পক্ষে এলাকার কোন লোক মূখ খোলে না বরংচ তাদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের বিপক্ষে স্বাক্ষী দেয়ায়।
আমার পক্ষে কোন স্বাক্ষী না পাওয়ায় পুলিশ আমার অভিযোগ আমলে না নিয়ে হালকা করে দেখে। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবারবর্গ স্বামীর বসত ভিটা ও সম্পত্তি হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। তার জমি রক্ষার্থে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছে ভূক্তভোগীর পরিবারটি।