• ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে সংঘর্ষে থমথমে গৌরনদী

পাল্টাপাল্টি মামলায় আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মী আসামি

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত মে ৫, ২০২৪, ১৯:৪৭ অপরাহ্ণ
পাল্টাপাল্টি মামলায় আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মী আসামি

শামীম আহমেদ, ॥ তৃতীয়ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বরিশালের গৌরনদীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ইউপি চেয়ারম্যানসহ চার নেতাকর্মী আহতের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গৌরনদী মডেল থানায় দায়ের করা পাল্টাপাল্টি মামলায় আওয়ামী লীগের ৬৪ জন নেতাকর্মীর নামোল্লেকসহ ১০৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সদ্য সাবেক পৌর মেয়র হারিছুর রহমানের সমর্থক আহত দেলোয়ার হোসেন দিলু হাওলাদারের স্ত্রী আফরোজ আক্তার মুন্নি বাদি হয়ে আওয়ামী লীগের ৩৮ জন নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অপরটি চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মনির হোসেন মিয়ার সমর্থক আহত উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর মা তাপসী রানী গুহ বাদি হয়ে আওয়ামী লীগের ২৬ নেতাকমীর নামোল্লেখসহ ৬৬ জনকে অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

আফরোজ আক্তার মুন্নির দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখযোগ্য অভিযুক্ত আসামিরা হলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু, তার ছোট ভাই যুবলীগ নেতা সলিল গুহ পিন্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম মল্লিক খোকন, আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন সান্টু, পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন হাওলাদার, পৌরসভার প্যানেল মেয়র, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সির ও পৌর যুবলীগের সহসভাপতি মোঃ ইখতিয়ার হোসেন হাওলাদার। তাপসী রানী গুহর দায়ের করা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ্যযোগ্য অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলু, তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ মাহমুদ, বাটাজোর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রেমন তালুকদার কালু। হামলা ও সংঘর্ষের পর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এরইমধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়েরের পর থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে পুরো গৌরনদীজুড়ে। অপরদিকে হামলায় গুরুত্বর আহত উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু তার মোটরসাইকেল চালক পলাশ হাওলাদার ও প্রতিপক্ষের দেলোয়ার হোসেন দিলু হাওলাদারকে প্রথমে গৌরনদী ও পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার চালককে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং দিলু হাওলাদারকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গৌরনদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুসহ ১০/১৫ জন সমর্থকদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যার পর পর বাটাজোর বাসষ্টান্ডের ব্যবসায়ীদের সাথে আমি সৌজন্য সাক্ষাত করছিলাম। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারিছুর রহমানের সমর্থক দেলোয়ার হোসেন দিলু তার লোকজন নিয়ে হারিছুর রহমানের নির্দেশে ৩৫/৪০ জন সহযোগি নিয়ে দেশীয় ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান পিকলু, তার মোটরসাইকেল চালক পলাশ হাওলাদারকে কুপিয়ে ও মামুন খানকে পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করে। এ অভিযোগ অস্বীকার করে বাটাজোর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রেমন তালুকদার কালু পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু পিস্তল দিয়ে গুলি করে দেলোয়ার হোসেন দিলু ও তার পুত্র ইমতিয়াজ মাহমুদকে আহত করে।

তবে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মোঃ শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথায় ধারাল অস্ত্রের আঘাত গুরুত্বর এবং দেলোয়ার হোসেনের জখমে গুলিবিদ্ধ হওয়ার কোন আলামাত পাওয়া যায়নি। গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক ( তদন্ত) মোঃ মাজাহারুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে কেউ গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের পৃথক দুইটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।