• ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

জমির ব্যবসার কথা বলে প্রবাসীর ২৩ লক্ষ টাকা আত্মাসাৎ

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত মে ৫, ২০২৪, ১৯:৫১ অপরাহ্ণ
জমির ব্যবসার কথা বলে প্রবাসীর ২৩ লক্ষ টাকা আত্মাসাৎ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: আমতলীর কুকুয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের সৌদি প্রবাসী নূর আলমের নিকট থেকে জমির ব্যবসার কথা বলে ২৩ লক্ষ টাকা নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর টেপুরা গ্রামের মো. ইউনুছ মিয়ার বিরুদ্ধে। সব টাকা হারিয়ে এখন নি:শ্ব হয়ে আদায়ের জন্য আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন নূল আলম। মামলা সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের আব্দুল মন্নান মুন্সির ছেলে মো. নূর আলম ২০০৮ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দুবাই এবং সৌদি প্রবাসী ছিলেন।

এসময় তার ছোট বেলার বন্ধু হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর টেপুরা গ্রামের আর্শেদ আলী মৃধার ছেলে গ্রামীন ব্যাংকে কর্মরত কর্মী মো. ইউনুছ মিয়াকে জমি কিনে যৌথ ব্যবসা করার জন্য ২০০৮ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখে জনতা ব্যাংক কলাপাড়া শাখা (হিসাব নং ০১০০০৩৩৯৪৪৭৩৪ এবং মোবাইল বিকাশ ০১৭৪০৮০৪৫৮২) মাধ্যমে মোট ২৩ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। বিদেশে থাকা অবস্থায় ইউনুছ মিয়া নূর আলমকে জানান, দুজনের নামে ব্যবসার জন্য আমতলী শহরের ফায়ার সার্ভিসের নিকট ৪.৪০ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়েছে। ২০২১ সালে নূর আলম দেশে এসে জমির দলিল এবং তার পাঠানো টাকার হিসাব চাইলে মো. ইউনুছ মিয়া আজ নয় কাল দেব বলে ঘুরাতে থাকে।

এসময় নূর আলম অফিস হতে জমির দলিল তুলে দেখেন এ জমি তার নামে রাখা হয়নি। জমির দলিল করা হয়েছে মো. ইউনুছ মিয়ার নামে। এনিয়ে বিরোধ দেখা দিলে ২০২২ সালে এক সালিশ বৈঠকে ২৩ লক্ষ টাকা গ্রহনের কথা স্বীকার করে মো. ইউনুছ মিয়া নূর আলমকে এক মাসের মধ্যে সমুদয় টাকা ফেরত দিবে মর্মে একটি অঙ্গীকার নামা প্রদান করে। অঙ্গীকার অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইউনুছ মিয়া নূর আলমকে টাকা ফেরত প্রদান না করায় নূর আলম ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক মো. আরিফুর রহমান কুকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম তালুদারকে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান চলতি বছরের ৬ মার্চ সরেজমিনে তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে ইউনুছ মিয়া নূর আলমের ২৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে উল্লেখ করেন।

বিদেশে থাকা অবস্থায় আয় করা সব টাকা হারিয়ে নি:শ্ব হয়ে এখন কখনো ইউপি চেয়ারম্যান আবার কখনো গ্রাম্য সালিসদ্বারের নিকট ঘুরছেন। তারপরও টাকা আদায় না হওয়ায় নূর আলম এখন নিরুপায় হয়ে আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

0ভূক্তভোগী নূর আলম আবেগ তারিত হয়ে বলেন, আমি ৮-১০ বছর বিদেশে শ্রমিকের কাজ করে টাকা আয় করে ছোট বেলার বন্ধু ইউনুছ মিয়াকে জমির ব্যবসার জন্য বিভিন্ন সময়ে ২৩ লক্ষ টাকা দিয়েছি। আমার সব টাকা আত্মসাৎ করায় আমি এখন পথের ফকির হয়ে গেছি। আমি এখন কি করবো উপায় খুজে পাচ্ছি না। স্ত্রী পোলা মাইয়া লইয়া এখন না খাইয়া দিন কাটাই। আমি এইয়ার ন্যায্য বিচার চাই।

অভিযুক্ত মো. ইউনুছ মিয়া বলেন, নূর আলমের কোন টাকা পয়সা আমি অত্মসাৎ করি নাই। যে টাকা আমাকে দিয়েছিল সব টাকা আমি তাকে বুঝিয়ে দিয়েছি। কুকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম তালুকদার বলেন, আদালতের নির্দেশ পেয়ে আমি সরেজমিন উপস্থিত হয়ে তদন্ত করে জানতে পারি যে ইউনুছ মিয়া প্রবাসী নূর আলমের ২৩ লক্ষ টাকা অত্মসাৎ করেছেন। এই মর্মে আমি আদালতে প্রতিবেদনও দিয়েছি।