এম ফোরকান ॥ ৩০ লাখ শহীদ’র রক্তে আর লাখো মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের প্রানপ্রিয় বাংলাদেশ, স্বাধীন বাংলাদেশ, আমাদের বিজয়ের পতাকা। আগামীকাল মহান বিজয়দিবসে সকল সরকারী, বেসরকারী, ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান সহ বাসা বাড়ীতে টানানো হবে আমাদের জাতীয় পাতাকা। পতাকার সঠিক মাপ, রং, টানানোর সঠিক নিয়ম, সময় ইত্যাদি বিষয়ে মনিটরিং করার জন্য মাঠে থাকছে ভ্রাম্যমান আদালত। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে এ রকম ভ্রাম্যমান আদালত বরিশাল জুড়ে সক্রিয় থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান। পতাকা ক্রয় কিংবা তৈরীর সময় রং, সঠিক মাপ ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য রাখার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন। যত্রতত্র ব্যবহারসহ সঠিক সময়ের প্রতিও খেয়াল রাখার কথা বলেছেন। এদিকে বিষয়টি মাথায় রেখে সকলের কাছে পতাকা পৌছে দেওয়ার জন্য নগরীতে কঁঅধে বহন করে নগরীসহ প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ভ্রাম্যমান পতাকা বিক্রেতারা। জাতীয় পতাকা সহ বিজয় দিবসের লোগো সম্বলিত মাথার ব্যাজ, বিক্রি সম্পর্কে ভ্রাম্যমান বিক্রেতাদের বক্তব্য, যদিও আপাত দৃষ্টিতে বিষয়টি ব্যবসা হলেও মনে প্রানে কাজটি সেবা মনে করেই করা হচ্ছে। অনেকের পক্ষেই সঠিক মাপের ও পছন্দের সাইজের পাতাকা সংগ্রহ সম্ভব হয় না। হাতের নাগালে তৈরী জাতীয় পতাকা পেয়ে শিশু তেকে বয়ষ্ক সকল শ্রেণীর মানুষ কিনছেন। আগামীকাল বিজয়ের এ অর্জনের পতাকা টানানো আবার কারো হাতে শোভা পাবে হ্যান্ড জাতীয় পতাকা। যা দেখে আমাদেরও এক ধরনের গর্বের অনুভূতি জাগে। সূত্র জানায়, জাতীয় পতাকা টানানোর ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের থাকবে কড়া নজরদারী। টানানো নিয়ম, সময় ইত্যাদির বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে যেন জাতীয় পতাকার অবমাননা না হয়। যাহোক, গতকাল নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ড সোনামিয়ার পুল বাজারে আলাপ হয় ভ্রাম্যমান পতাকা বিক্রেতা মোঃ ওহদুল ইসলাম’র সাথে। তার বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার দক্ষিণ চরকামারকান্দির ইউপি মেম্বার। এলাকায় তেমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ না থাকায় ৯ জনের একটি দল জাতীয় পতাকা বিক্রির জন্য ১২ ডিসেম্বর নগরীতে আসেন। সকলে একটি মেসে উঠেছেন। ভোর হলেই এক কাঁধে বাঁশের সাথে ঝোলানো জাতীয় পতাকা অন্য কঁঅধে পতাকা ভরা ব্যাগ আর হাতে মাথায় ব্যাজ নিয়ে নেমে পড়েন। ঘুরে বেড়ায় নগরী থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত। বিক্রিও বেশ ভালো। প্রতিদিন গড়ে লাভ আসে ৫০০ টাকার ওপরে। আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের উৎসব পালনের জন্য নিজ এলাকায় ফিরে যাবেন। গত বছর থাকা খাওয়া বাদে নীট লাভ ৭ হাজার টাকা নিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। এবার আরো বেশি হবে বলে আশা মেম্বার ওহিদুল ইসলামের। তার কাছ থেকে আরো জানা গেলো ফরিদপুর ঢাকার বিক্রমপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শতাধিক লোক পতাকা বিক্রির জন্য বর্তমানে নগরীতে অবস্থান করছেন। জাতীয় পতাকাগুলো ঢাকা থেকে কিনে আনা হয়। জাতীয় পতাকার সাইজ হিসেবে মূল্য ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। হ্যান্ড জাতীয় পতাকার খুচরা মূল্য ১০ টাকা আর মাথার ব্যাজ ১০ টাকা। এদিকে জেলা প্রশাসন ২০১৫ সালের মন্ত্রিপরিষদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় পতাকা সঠিক ভাবে টানানো, সময়, রং, মাপ, নামানো ইত্যাদি বিষয়ে নজরদারী রাখার জন্য ইতোমধ্যে ভ্রাম্যমান টিম। প্রস্তুত রেখেছেন। যারা আগামীকাল সহ পরবর্তী দিনগুলোতে মাঠে সক্রিয় থাকবেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, আমাদের প্রস্তুতিমূলক সভায় আলোচনা শেষে দাওয়াত পত্র দেওয়া হয়েছে। সেখানে জাতীয় পতাকার মাপ, রং সহ কিভাবে কি করতে হবে তা পরিষ্কার ভাবে উল্লেখ করা আছে। প্রস্তুতি মূলক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রম্যমান দল থাকবে। কেউ কোনো অনিয়ম করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।