• ১৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

১০ ঘন্টায়ও জেষ্ঠ্য চিকিৎসকের দেখা পায়না শেবাচিমের রোগীরা

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ১৭, ২০১৭, ১৭:০৯ অপরাহ্ণ
১০ ঘন্টায়ও জেষ্ঠ্য চিকিৎসকের দেখা পায়না শেবাচিমের রোগীরা

সৈয়দ বাবু ॥ দক্ষিন বাংলার চিকিৎসার সর্বোচ্চ ভরসা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দশ ঘন্টায়ও জেষ্ঠ্য চিকিৎসকের দেখা পায়না রোগীরা। একারণে শিক্ষানবিস চিকিৎসককে পুরোমাত্রায় নির্ভর করতে বাধ্য হয় অসংখ্য রোগীরা। আর এতে হাসপাতালটিতে প্রায় প্রতিদিনই চিকিৎসকও স্বজনদের মধ্যে বাকবিতন্ডা থেকে হাতাহাতা এমনকি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে জেষ্ঠ্য চিকিৎসকদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা একাধিক বার ব্যর্থ হয়েছে হাসপাতাল র্কতৃপক্ষ। কিন্তু এ ব্যর্থতার কোন র্নিদৃষ্ট কারন জানতে পারেনাই হাসপাতাল প্রশাসন। হাসপাতালের পরিচালক পরিবর্তন হলে কিছুদিন জেষ্ঠ্য চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিয়মিত থাকে আবার যেমন তা তেমন হয়। সরে জমিন ঘুরে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৪শত থেকে সাড়ে ৪শ’ রোগী ভর্তি হয়। জরুরী বিভাগে ভর্তি হওয়ার পরে রোগীকে পাঠানো হয় বিভিন্ন বিভাগে। জরুরী বিভাগ থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত যেতে একজন রোগীর সময় লাগে ৩০ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট। এর পরে বিভাগে যেয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকের দেখা পেতে সময় লাগে আরো ৩০মিনিট। অনেক সময়ে রোগীকে নিয়ে ডাক্তারের রুমে যেতে হয় রোগীর স্বজনদের। পটুয়াখালী থেকে বুকে ব্যাথা নিয়ে আসা আনোয়ার হোসেন বলেন, বিকাল ৪টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ৫টা ১০মিনিটের সময়ে ডাক্তার আসছেন আমাকে দেখতে। এর আধাঘন্টা পরে তিনি ৫/৬ টি পরীক্ষার একটি কাগজ দরিয়ে দিয়ে লাইফ এইড ডায়গনস্টিক থেকে পরীক্ষা গুলো করিয়ে আনতে বলেছেন। এর ১ ঘন্টা পরে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে কিছু ঔষধ লিখে দেন। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ইন্টার্ন চিকিৎসক বলেন, “জেষ্ঠ্য চিকিৎসকরা কিছু নিদৃষ্ট ঔষধ কম্পানীর নাম বোর্ডে লিখে দিয়ে যান। রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে শুধুমাত্র ঐসকল কোম্পানীর ঔষধ লিখতে হয়। যে কারনে রোগীদের ভর্তির কাগজ এনে আমাদের কক্ষে বসে লিখতে হয়। এতে অনেক সময় রোগীর হয়রানী যেমন বাড়ে, তেমনি চিকিৎসা সেবায়ও বিলম্ব হয়। এ বিষয়ে সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ শরফুজ্জামান রুবেল বলেন,‘আমাদের পক্ষে সার্বক্ষনিক হাসপাতালের রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়না। কারণ আমাদের হাসপাতালের অন্যান্য বিষয়েও খেয়াল রাখতে হয়।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ছাড়া অন্য কোন চিকিৎসক ওয়ার্ডে থাকবেন কিনা সেটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিষয়।’ এ দিকে বর্তমান সরকার চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নের জন্য প্রতিটি সরকারী হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগের একজন করে জেষ্ঠ্য চিকিৎসক থাকার জন্য আদেশ দেয়া আছে। তবে এ আদেশ মানছেন না বরিশাল শেবাচিম হাসাপাতালের চিকিৎসক ও হাসপাতাল প্রশাসন। এ বিষয়ে শেবাচিম হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান দেশ জনপদ কে বলেন, নিয়মিত ভাবে প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে জেষ্ঠ্য চিকিৎসক রাখার জন্য প্রস্তুতি চলছে। শীঘ্রই এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। এছাড়াও রোগীদের চিকিৎসা সেবায় যাতে কোন বিলম্ব না হয় সে বিষয়েও নজর দেয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, যে সকল চিকিৎসকরা নিদৃষ্ট কোন ডায়াগনষ্টিক ল্যাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে পাঠায় সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।