• ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

শেখ হাসিনা আমার মা, খেলার মাঠ ছাড়বো না

admin
প্রকাশিত মার্চ ৫, ২০১৯, ১৩:০১ অপরাহ্ণ

শফিক বাবু ॥ আশ্রয় পেয়েও এখনও অনিরাপত্তায় রয়েছে শেখ রাসেল শিশু পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষন কেন্দ্রের নিবাসীরা। এর মধ্যে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটির ক্যাম্পাসে ভবন নির্মান কেন্দ্রীক উদ্ভুত পরিস্থিতি। গতকাল আশ্রয় নেয়া বালিকাদের উদ্যোগে বিক্ষোভ করা হয় খেলার মাঠ ছেরে ভবন নির্মানের জন্য। এসময় প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় গণমাধ্যমের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। শেখ রাসেল শিশু পরিবারের নিবাসীদের বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি বলেন, আমি এখনই ওখানে লোক পাঠাচ্ছি। এরপরে সমাজসেবার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এসে বিক্ষোভকারীদের খাবার খাইয়ে নিবাসীদের শান্ত করেন। সূত্রমতে বরিশাল শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুর্নবাসন কেন্দ্রের খেলার মাঠে বহুতল ভবন নির্মাণ প্রস্তুতির খবরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিশুরা। গতকাল সোমবার বেলা ১২টার দিকে কেন্দ্রের ভেতরে এই বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে তারা বরিশাল সমাজসেবার উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদারকে রাখে। ওই কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে- ১০ তলা বিশিষ্ট জেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গতকাল নির্মাণসামগ্রী পাঠায় কর্তৃপক্ষ। এসময় ওইখানের বসবাসরত শিশুরা স্কুল বন্ধ থাকার কারনে মাঠে খেলাধুলা করছিল। তখন ভবন নির্মান সামগ্রী ট্রাকে করে মাঠে স্তুপ করে এবং প্লান মাফিক ফিতা ধরে। ওই ফিতা শিশুদের পায়ে লাগলে ঠিকাদারের পক্ষের লোকজন শিশুদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে যায়। পরক্ষনে বাকবিতন্ডার বিষয়টি ছড়িয়ে পরলে পুনর্বাসন কেন্দ্রের শাতাধিক শিশু ভবন নির্মানের প্রস্তাবিত স্থানে জড় হয়ে ওদের অস্থায়ী বাসভবন ও ক্যাম্পাসে দাবীতে শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে বিক্ষোভ করে বলে, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার মা, খেলার মাঠ ছাড়বো না”। সংশ্লিষ্ট পুনর্বাসন কেন্দ্রে কর্মরত উপ- প্রকল্প পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা শিশুদের মাঠ থেকে রুমে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু পুনর্বাসনের শিশুরা তখন পুনর্বাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পায়ে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পরে এবং আহাজারী করে খেলার মাঠটি রাখার জন্য। পরবর্তীতে সমাজসেবা দপ্তরের বিভাগীয় এক কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিশুদেরকে তাদের খেলার মাঠ এবং থাকার স্থান যাতে হয় সেমর্মে আশ্বাস দেয়। এতে শেখ রাসেল প্রশিক্ষন ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের শিশুরা যার যার কক্ষে ফিরে যায় এবং ওই কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে শিশুদের দুপুরের খাবার খাইয়ে ঘটনাস্থল থেকে বিদায় নেন। এরপরেও নিরাপদে থেকেও অনিরাপদের ভুগছে শিশুরা। ওই সময় তারা মাঠ রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে। এই খবর বরিশাল সমাজসেবার উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদার সেখানে ছুটে গেলে তাকে শিশুরা খেলার মাঠ রক্ষা করার জন্য অনুরোধ করে। পরবর্তীতে খবর পেয়ে সমাজসেবার বরিশাল বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বরিশাল সমাজসেবার উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদার বলেন- দুই বছর আগে ১০ তলা বিশিষ্ট জেলা কমপ্লেক্স ভবনের ভিত্তিপ্রস্থর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ভবন নির্মাণসামগ্রী গতকাল সোমবার প্রেরণ করা হয়েছে। শিশুরা হয়ত না বুঝে মাঠ রক্ষা করার জন্য বিক্ষোভ করেছে। তবে পুনর্বাসন কেন্দ্রের উপ- প্রকল্প পরিচালক শুভঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, আমি অফিসে দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ শুনছি শিশুরা বিক্ষোভ করছে, সাথে সাথে আমি মাঠে নেমে আসলে শিশুরা আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পরে এবং মাঠ রক্ষা করার জন্য অমাকে অনুরোধ করে। তিনি আরো বলেন, সমাজসেবা দপ্তরের সরকারি জমি, আমি কিভাবে শিশুদের খেলার মাঠ বানিয়ে দেবো। এটা কর্তৃপক্ষের বিষয়, কর্তৃপক্ষ যা করবে তা সকলেরই মেনে নেয়া উচিত।