বিডি ডেস্ক ॥
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দরিদ্র পরিবারের সন্তান দুখু মিয়া। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। হাত বা পা দিয়ে পারেন না নিজের কোন কাজ করতে। অন্যের সাহায্যে সব সময় চলতে হয় তাকে। মায়ের কোলে চড়ে স্কুলে যায় দুখু মিয়া।
দুখু মিয়ার কষ্ট দেখে স্কুল থেকে তাকে দেয়া হয় একটি হুইল চেয়ার। এখন হুইল চেয়ার দিয়েই স্কুলে যাওয়া আসা করেন দুখু মিয়া।
দুখু মিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী তিনি। তাকে অনেক চিকিৎসাও দেয়া হয়েছে কিন্তু তাকে আর সুস্থ করা সম্ভব হয় নি। মনের জোরই তাকে উৎসাহ যোগিয়েছে। স্কুলে ভর্তি হয়ে করছেন লেখাপড়া। জয় করেছেন শিক্ষকদের মন। রেজাল্টও ভালো। লেখাপড়া শেষ করে হতে চায় সরকারি কর্মকর্তা।
অন্যের ঘাড়ে বোঝা হয়ে থাকতে চান না দুখু মিয়া। প্রতিনিয়ত প্রকৃত মানুষ হয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখেন তিনি। তাই স্বাভাবিক জীবনের পাশাপাশি শুরু করেছেন পড়ালেখা। বড় হয়ে সরকারি চাকরি করতে চান তিনি। দাঁড়াতে চান প্রতিবন্ধীদের পাশে।
তার সঙ্গে কথা বললে বোঝা যায় সমস্যাগুলো। এত প্রতিবন্ধকতা দুখু মিয়ার স্বপ্ন দেখার সাহসটাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। তার লক্ষ্য, ভবিষ্যতে সরকারি কর্মকর্তা হয়ে জাতি গঠনে ভূমিকা রাখবে।
দুখু মিয়ার মা বলেন, ছেলেকে লেখাপড়া করাচ্ছি। কষ্টের কাছে হার মানব না। সিয়ামের জন্য অনেক কষ্ট হয়। আমি মা হয়ে তার কষ্ট মনেপ্রাণে উপলব্ধি করছি। সমাজে সে অবহেলার পাত্র হয়ে থাকুক এটা আমি কখনোই চাই না। তাই আমার ছেলেকে লেখাপড়া করার জন্য উৎসাহ দিচ্ছি। ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করানোর পর সবসময় আমি কোলে করে স্কুলে নিয়ে যেতাম। এখন স্কুল থেকে একটা হুইল চেয়ার দিয়েছে। আমিই স্কুলে দিয়ে আসি আবার নিয়ে আসি। লেখাপড়া করে বড় হতে আমাদের যতদূর যাওয়া প্রয়োজন আমরা যাব, চেষ্টা করব।