• ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৩শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

রাজাপুরে প্রবাসী নাঈমের আত্মহত্যা, কথিত প্রেমিকাসহ ৪ আসামি কারাগারে

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩, ১৮:০৯ অপরাহ্ণ
রাজাপুরে প্রবাসী নাঈমের আত্মহত্যা, কথিত প্রেমিকাসহ ৪ আসামি কারাগারে

বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল ॥ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বারবাকপুর এলাকার ছিদ্দিক মৃধার ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী নাঈমকে (২৩) আত্মহত্যায় প্ররোচনায় করা মামলায় ৪ আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে রাজাপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করে। রোববার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে তাদের আদালতে সোপর্দ করলে আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুত্র হারানোর শোকে মুহ্যমান পিতা সিদ্দিক মৃধা বাদী হয়ে রাজাপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেছিলেন। নাঈমের বাবা ছিদ্দিকুর রহমান গত সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি রেকর্ড করে। মামলার আসামিরা হলো- কথিত প্রেমিকা ফারজানা আক্তার (২১), ফয়সাল (২৪), ফারুক হাওলাদার (৫৭), রেবা বেগম (৪৫), লুৎফর রহমান (৫৫)।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাঈম সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছিলেন। কথিত প্রেমিকা ফারজানার সাথে নাঈমের ৮ বছরের প্রেম। ২০১৭ সালে প্রেমিকা ফারজানাকে অন্যত্র বিয়ে দেয় তার পরিবার। কিন্তু ফোনের মাধ্যমে নাঈমের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে ফারজানা।

সর্বশেষ সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে পুনরায় চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর তার কর্মস্থল সিঙ্গাপুর চলে যায় নাঈম। কথিত প্রেমিকা ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে ২৭ নভেম্বর দেশে ফিরিয়ে আনে নাঈমকে।

পরিবার দেশে এত দ্রুত ফেরার কারণ জানতে চাইলে, ফারজানার সাথে ৮ বছর ধরে প্রেম এবং তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে বলে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায় নাঈম। নাঈমের বাবা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে নাঈমের ভবিষ্যৎ জীবন নষ্ট না করার অনুরোধ জানান। এতে অভিযুক্ত কথিত প্রেমিকার পরিবার নাঈমের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ধরনের দোষারোপ করে।

১৪ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ১২টার দিকে কথিত প্রেমিকা ফারাজানার মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে বাড়িতে নাঈমকে ডেকে নেয় ও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মিলে মারধর করে এবং বলতে থাকে সকাল হলেই সমস্ত এলাকাতে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে। এতে নাঈম ও তার পরিবারের মান সম্মান নষ্ট হয়ে যাবে। কারও কাছে মুখ দেখাতে পারবে না। মরে যাওয়াই ভালো এসব বলতে থাকে।

এ সময় নাঈমের চিৎকার শুনে নাঈমের দুলাভাই ইকবাল গিয়ে তাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক এলাকার পল্লীচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়।

এ সময় ঘরে কেউ না থাকায় আসামিরা নাঈমের বাবার বসতঘরে আগুন দিয়ে ভস্মীভূত করে দেয়। পরে আসামিরাই থানায় অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে।

৮ বছর প্রেম করে বিয়ে করতে না পারা ও প্রেমিকার বাবা-ভাই বেধড়ক মারধরের ১ দিন পর বিচার না পেয়ে মানুষের নানা রকম অপমান সইতে না পেরে বিষ পান করে নাঈম। বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৬ ডিসেম্বর মারা যায় সে।

রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান নিশ্চিত করে বলেন, মামলার আসামিদের অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।