বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল॥ পটুয়াখালীর পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় এক যুবদল নেতার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৫ আগস্টের পর চাঁদা দাবি, মানুষের ঘরবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর ও মারধরের।তার ভয়ে অভিযোগ নিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতাও চাইতে পারছে না ভুক্তভোগীরা।
তাই প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কুয়াকাটার অনেক ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ। প্রকাশ্যে এমনসব ঘটনা ঘটালেও তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নিচ্ছে না স্থানীয় বিএনপি ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ‘আওয়ামী শাসনামলে রাজনীতিতে পুরোটাই নিষ্ক্রিয় ছিলেন কুয়াকাটা পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নজির আকন। দলের রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক কার্যক্রমে না থাকলেও সক্ষতা ছিল আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে ।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত পাঁচ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ঘটে। এর পরপরই দলীয় পরিচয় কাজে লাগিয়ে চাঁদাবাজি, দখল এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন পৌর যুবদল নেতা নজির আকন।
তার নেতৃত্বে গত ৯ আগস্ট হামলা করা হয় কুয়াকাটার বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেনের বাড়ি-ঘরে। সাদ্দামের অভিযোগ ঘটনার দিন নজির আকনের নেতৃত্বে মোস্তাফিজ আকন, আফজাল আকন, সোহরাব মোল্লা, নুর ইসলাম মোল্লাসহ অন্য সহযোগিতা তাদের বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর, সদর দরজা কুপিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এবং বাড়ি লুটপাট করে।
এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাদ্দাম হোসেন। এর আগে ৬ আগস্ট কুয়াকাটায় হোটেল ব্যবসায়ী রনি বেগমের মালিকানাধীন আবাসিক হোটেল কাম বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর এবং মালামাল লুট করে নজির আকন ও তার লোকেরা।
একইভাবে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন নিউ কুয়াকাটা হোটেলে হামলা-ভাঙচুর করা হয়। সবশেষ গত ৩ অক্টোবর কুয়াকাট সৈকতে মারধর করা হয় সজিব নামের এক ঘোড়া চালককে।
সজিব বলেন, সাগরপাড়ে পর্যটকদের ঘোড়ায় চড়িয়ে বিনোদন দিয়ে টাকা উপার্যন করেন তিনি। সেই উপার্যনে ভাগ বসাতে চান নজির আকন। দাবি করেন মোটা অংকের চাঁদা।
চাঁদা না দেওয়ায় আমাকে মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছে। এখন আর বিচে যেতে পারি না বিধায় উপার্যনও বন্ধ । অভিযোগকারীরা দাবি করেন, হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের পর তাদের এলাকা ছাড়া করেছেন পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নজির আকন ও তার লোকেরা ।
এখন এলাকায় যেতে পারছেন না তারা। তাই সেনাবাহিনী এবং বিএনপির হাইকমান্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানা যায়নি অভিযুক্ত যুবদল নেতা নজির আকনের। একাধিকবার কল দিলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অবশ্য কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন সিকদার বলেন, ‘নজিরের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে কেউ করেনি।
তাছাড়া কেন্দ্রের নির্দেশনা রয়েছে, দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, দখল, ভাঙচুর-লুটপাটের সুযোগ নেই। কেউ এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে থাকলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।