• ৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২২শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অসহায় রুমা

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত মে ২৯, ২০২৪, ১৭:৫৬ অপরাহ্ণ
মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অসহায় রুমা

আরশাদ মামুন, লালমোহন॥ ভোলার লালমোহন পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বালুরচর এলাকার জাকির হোসেনের স্ত্রী মোসা. রুমা বেগম। ছোট ছোট এক ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন একটি জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে। জরাজীর্ণ সেই টিনশেড ঘরটিও এখন আর দাঁড়ানো নেই। মাটিতে দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে আছে। মাথা গোঁজার একমাত্র সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অসহায় রুমা বেগম।

রুমা বেগম জানান, আমার স্বামী শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবুও জীবিকার তাগিদে ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালান। গ্রামে সন্তানদের নিয়ে একটি জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে একাই থাকতাম।

তবে সোমবারের ঝড়ে সেই ঘরটি ভেঙে পড়ে গেছে। ঝড়ের ভয়াবহতা দেখে সন্তানদের নিয়ে দৌড়ে দেবরের ঘরে আশ্রয় নিয়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচাই।

সন্তান আর নিজের প্রাণ বাঁচাতে পারলেও ঘরটি রক্ষা করতে পারিনি। নতুন করে এই ঘর তোলা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। কারণ আমাদের অন্য কোনো আয় নেই।

আমি নিজেও মানুষের বাড়িতে গিয়ে কাজ করি। তাই সরকারের কাছে দাবি করছি, নতুন করে আমাদের ঘরটি তুলতে যেন প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেন।

লালমোহন পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন বলেন, রুমা এবং তার স্বামী জাকির খুবই অসহায়। তার ওপর ঝড়ে তাদের ঘরটিও ভেঙে গেছে।

খবর শুনে আমি তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছি। যথাসাধ্য তাদের আর্থিক সহযোগিতাও করেছি। দিন এনে দিন খাওয়া রুমা-জাকির দম্পতির পক্ষে কোনোভাবেই নতুন করে তাদের মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁই বসতঘরটি নতুন করে তোলা সম্ভব হবে না। তাদের ঘরটি নতুন করে তুলতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান করছি।

এদিকে, সোমবার লালমোহন উপজেলায় আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয় ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়া ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে ২৭১টি। যার মধ্যে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে ৫২টি ঘরবাড়ি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাঘ ঘোষ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে এই উপজেলায় অনেক ঘরবাড়ি-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়েছে।

তবে আমরা ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করে এরইমধ্যে জেলায় পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে। এছাড়া আমরা ৫০ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। অন্যদিকে, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া ৭০০ জন মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।