ফুল উপহার ভালোবাসার প্রকাশ। কিন্তু উপহার দেয়ার ধরণটাই ফয়সাল আহমেদের জন্য সমস্যা তৈরি করেছে! প্রিয় তারকা সাকিব আল হাসানকে ভালোবেসে ফুল দিতে মাঠে প্রবেশ করেছিলেন ফয়সাল। যদিও তার এমন আচরণটি ছিল নিরাপত্তার বিষয়টি তোয়াক্কা না করেই। যেখানে সফররত দলগুলোকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয় বিতর্ক এড়ানোর কৌশল হিসেবে। সেখানে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে স্টেডিয়ামের কড়া এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। শঙ্কা জাগানিয়া এমন আচরণে ভক্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিসিবি।
পেশায় ফুল বিক্রেতা ফয়সাল আহমেদের বসবাস চট্টগ্রামের এনায়াত বাজারে। শুক্রবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের ম্যাচের ১০৭তম ওভারে পূর্বগ্যালারিতে নিরাপত্তার ফাঁক গলে মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন। এরপর এক দৌড়ে সোজা চলে যান বল করতে থাকা সাকিবের কাছে। গিয়েই সাকিবকে স্যালুট দেন। তারপর হাঁটু গেড়ে সাকিবের দিকে হাতে থাকা গোলাপটি বাড়িয়ে দেন তিনি।বাম হাতখানা পেছনে রেখে।
হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, এটাকে বলে প্রপোজ স্টাইল। সাধারণত পশ্চিমা দেশে বিয়ে করার প্রস্তুাব নিয়ে প্রেমিক তার প্রেমিকার কাছে হাঁটুগেড়ে এমন কায়দায় বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে থাকেন।
সেই সময়কার ঘটনা এবং পরিস্থিতির উল্লেখ করে সাকিব বলছিলেন-‘ফুল দেয়ার সময় সেটা নিতে বলেছে শুধু, আমি ভাবলাম বিয়ের প্রস্তুাব দিচ্ছে কিনা…! তবে আমি চাই না মাঠে খেলার সময় এমন কিছু হোক। কেউ হঠাৎ করে ঢুকে পড়ুক। খেলার মাঠে এমন কোনো ঘটনা না হওয়াটাই আমার কাছে ভালো মনে হয়।’
এদিকে সাকিব ভক্তের এমন কর্মকাণ্ডের পর পাহাড়তলী থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিসিবি। বিসিবির নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান মেজর (অব.) হোসেন ইমাম জানিয়েছেন গ্যালারিতে দায়িত্ব পালনরত সেই এসআইকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে ওই ছেলে পাহাড়তলী থানায় আছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছি না আমরা। হয়তো কিছু ঘাটতি ছিল, পরবর্তী দিন থেকে এ ব্যাপারে আমরা সচেতন থাকবো। এছাড়া পূর্ব গ্যালারিতে দায়িত্ব পালন করা এসআই মান্নানকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।’
নিজের কৃতকর্মের ভুল বুঝতে পেরে অনুশোচনা আছে ফয়সালের। ভবিষ্যতে এমন আর করবেন না বলে জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাকে মাফ করে দেন। আমি ভুল করেছি।’
তবে নিরাপত্তা বলয় ভঙ্গটা যে অপরাধ ছিল তা স্বীকার করেছেন তিনি, ‘আমার ভুল হয়েছে, ছেড়ে দেন। আমি আর এমনটি করবো না।’
স্টেডিয়ামের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রামের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এএএম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ছেলেটাকে ছেড়ে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড মামলা করায় সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর পুলিশের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা ভাঙার অপরাধে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়ায় যাওয়া হচ্ছে। তাকে আদালতে তোলা হবে।’