মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাইশকুড়া বাজার থেকে তেঁতুলতলা সংযোগ সড়কের সেতুর নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে। অথচ এখনো কাজ সম্পন্ন হয়নি।
গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও কয়েকটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষকে ভোগান্তিতে পড়ছে হচ্ছে। ৫ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু নির্মাণে ৩ কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার ৫৮৬ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে সেতু নির্মাণের কাজ পায় টিএনঅ্যান্ডএএসআই লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
চুক্তি অনুযায়ী সেতুটির কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে, শেষ করার কথা ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু গত দুই বছর ধরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ রেখেছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা গেছে, সেতুটি দৃশ্যমানই হয়নি। সেতু নির্মাণস্থলে কাজ আংশিক শেষ হয়ে পিলারের কতগুলো রড দাঁড়িয়ে আছে। পরবর্তী কাজের জন্য ঠিকাদারের কোনো মালপত্র সেখানে নেই। নেই কাজের কোনো সাইনবোর্ডও। পূর্ব পাশ দিয়ে যে বিকল্প সাঁকো করা হয়েছে চলাচলের জন্য, সেটিও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। নির্মাণস্থলে কোনো শ্রমিককেও পাওয়া যায়নি।
এ সময় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা লাল মিয়া (৬০) হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি জানান, গত দুই বছর ধরে কাজ ফেলে রাখা হয়েছে। স্থানীয় মানুষ খুব দুর্ভোগে আছে। তারা প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। অটোরিকশা-ভ্যানে চলাচলের সময় বিকল্প রাস্তার এক প্রান্তে নেমে অন্য প্রান্তে গিয়ে ওঠে। বৃষ্টির সময় পথ প্রচণ্ড পিচ্ছিল হয়ে যায়। তখন ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে।
বাইশকুড়ার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম (৩৫) বলেন, দুই বছর ধরে ব্রিজটি এভাবে পড়ে আছে। মানুষ খুব ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বারবার বলার পরও কোনো লাভে হচ্ছে না। দুই বছরের অধিক সময় ব্রিজ না থাকায় হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত ব্রিজের কাজ শেষ করার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
বাইশকুড়া এলাকার বাসিন্দা অটোরিকশা ড্রাইভার ইউসুফ আলী (৪০) জানান, আমরা চাইলেও দূরে ভাড়া নিয়ে যেতে পারি না। ব্রিজ না হওয়ার কারণে নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছি আমরা।
মঠবাড়িয়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. জিয়ারুল ইসলাম জানান, ৩৭ মিটার ব্রিজটি ২০২০ সালে শুরু হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু জায়গা জটিলতা ও বামনার রোডের দিকের অ্যাপ্রোজে জায়গা নিয়ে জটিলতা থাকার কারণে কাজটি শুরু করতে দেরি হয়। আমি ২০২২ সালে সেপ্টেম্বরে জয়েন করি।
তার পর পাইলিংয়ের কাজ শেষ করে ঠিকাদারের কিছু বকেয়া বিল পাঠাই সেখান থেকে তিনি কিছু বিল পেয়েছেন, সম্পূর্ণ বিল পাননি। ঠিকাদারের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে।
বর্তমানে তিনি আর্থিক সংকটে আছেন। বিল পেলে কাজটি দ্রুত শেষ করবেন এমনটা জানিয়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ের ভেতরে ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ করতে।