• ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ভোলায় মধ্যরাত থেকে দুই মাস ইলিশসহ সব মাছ ধরা নিষিদ্ধ

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৫, ২০:০১ অপরাহ্ণ
ভোলায় মধ্যরাত থেকে দুই মাস ইলিশসহ সব মাছ ধরা নিষিদ্ধ

ইলিশের নিরাপদ প্রজনন ও বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রতি বছরের মতো এবারও ১ মার্চ মধ্যরাত থেকে আগামী দুই মাস ভোলার ইলিশা ও মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আয় বন্ধ হওয়ায় নিবন্ধিত জেলেদের জন্য সরকার প্রতিজনের মাসিক ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য অফিস। তবে, নিবন্ধনের বাইরে থাকা লক্ষাধিক জেলে পরিবার সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত থাকবে। উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রমজান ও ঈদ কীভাবে কাটবে, তা নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জেলে পরিবারগুলো।

প্রাকৃতিক নিয়মে শুরু হয়েছে ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এ সময় ডিম ছাড়ার জন্য সাগরের লোনা পানি থেকে মা ইলিশ ঝাঁকে ঝাঁকে মিঠা পানির সন্ধানে উঠে আসে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে। মা ইলিশের নিরাপদ প্রজননের স্বার্থে সরকার মেঘনা নদীর ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা থেকে চরপিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এবং তেঁতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার—মোট ১৯০ কিলোমিটার এলাকাকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে। ১ মার্চ রাত ১২টা থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মাছ ধরা, কেনাবেচা, পরিবহন ও সংরক্ষণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।

জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ভোলায় ৮৯ হাজার ৬০০ নিবন্ধিত জেলের জন্য ৭ হাজার ১৬৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস ধরে প্রত্যেক নিবন্ধিত জেলেকে মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। ১০ মার্চের মধ্যে ভিজিএফের চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে এবং ইতোমধ্যে প্রত্যেক উপজেলায় বরাদ্দের চাল পৌঁছে গেছে।

সাধারণ জেলেরা অভিযোগ করেন, বিগত বছরগুলোতে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেক অযথার্থ ব্যক্তিও সরকারি সহায়তা পেয়েছেন, অথচ প্রকৃত জেলেদের অনেকেই বঞ্চিত হয়েছেন। এ ছাড়া দুই মাসে মাত্র ৮০ কেজি চাল দেওয়া হলেও তেল, লবণ, লাকড়ির মতো প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যবস্থা নেই। তাই তারা চান, সরকার চালের পরিবর্তে নিবন্ধিত জেলেদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (বিকাশ/নগদ) মাধ্যমে নগদ সহায়তা দিক।

জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ভোলার ১২৪টি মাছঘাটে প্রায় ৪০ হাজার ইঞ্জিনচালিত নৌকা বা ট্রলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরতে যায়। এ ছাড়া ১০ হাজার ৫৯৩টি সমুদ্রগামী ট্রলার রয়েছে। তবে, সমুদ্রগামী ট্রলারগুলো এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকলেও সাগরে মাছ ধরতে যেতে হলে জেলা মৎস্য অফিসের অনুমতি নিতে হবে।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, এ বছর মা ইলিশ প্রচুর পরিমাণে ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে। তাই মেঘনা, তেঁতুলিয়া ও সাগর মোহনার অভয়াশ্রমে দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকলে চলতি মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।’’