নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীর মৎস্য দপ্তরের ঢিলেমীতে ঠেকানো যাচ্ছেনা বাজারে জাটকা বিক্রি। জনবহুল বাজার গুলোতে মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে জাটকা চিহ্নিতকরণে ব্যবস্থা না থাকার পাশাপাশি কোন নিয়ন্ত্রণ কক্ষও নেই। আর এ সুবাদে অবাদে জাটকা কিনছে অসংখ্য ক্রেতা। যেকারণে ইলিশ সম্পদ আহরনে ৫০ হাজার মেট্রিক টনে পৌছতে পারছেনা বরিশাল মৎস্য দপ্তর। বরিশাল মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস ইলিশ নিয়ে বলেন, আমরা বাজারগুলোতে কমিটির সাথে সভা করেছি এবং ব্যানার লাগিয়েছি। কিন্তু এরপরও তো বাজারে জাটকা বিক্রি হচ্ছে দেধারছে। এসময় তিনি আরো বলেন, বাজারগুলোতে বিক্রেতারা যাতে জাটকার পসড়া নিয়ে বসতে না পারে সে লক্ষ্যে আমরা পরিকল্পনা করিছ এবং কয়েকদিনের মধ্যেই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হবে। সরেজমিন সূত্রে, জনবহুল মাছের বাজারগুলোতে অধিকাংশ ক্রেতাই জানেনা জাটকা নির্ণয় পরিমাপ। এ ব্যাপারে অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে, নগরীর পোর্ট রোড, হাতেম আলী চৌমাথা, কাশিপুর পোস্ট অফিস বাজার, তালতলী, নতুনবাজার, বাজার রোড, বেলতলা, সাগরদী, কালিজিরাসহ তালিকাভুক্ত বাজারগুলোর একটিতেও জাটকা নির্ণয়ের তথ্য সম্বলিত কোন ব্যানার পোস্টার বা সাইনবোর্ড সহ অন্য কোন ব্যাবস্থা নেয়া হয়নি মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে। এমনকি বাজার গুলোর অধিকাংশ কমিটিও এ ব্যাপারে মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে তেমন কোন তোড়-জোড়ের কথা জানাতে পারেনি। এর মধ্যে পোর্ট রোড এলাকার ইলিশ আড়তদার সমিতির মুখ্য প্রতিনিধি নিরব হোসেন টুটুল বলেন, জাটকা বিক্রি বন্ধে আমরা বিক্রেতাদের বলি কিন্তু শোনেনা, এখন আমরা তো কারো বিক্রি বন্ধ করতে পারিনা। কারণ তারা আমাদের আড়তেরই মাছ বিক্রি করে। এছাড়া এ কাজটি করতে পারে আইনী কর্মকর্তা, আমরা পারিনা। এসময় আরো বলা হয়, আপানাদের আড়তদার সংগঠনের পক্ষ থেকে জাটকা বিক্রি বন্ধের লক্ষ্যে কোন সচেতনতামুলক প্রচারণা চালোনো হয় কিনা? এর কোন সদুত্তর মেলেনি। বাজার গুলোতে জাটকা বিক্রির ধুম পড়ার সময় খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, কাক ডাকা ভোর থেকে পাইকারী ক্রয়-বিক্রয় শেষে সকাল দশটার মধ্যে খুচরা বাজারে জাটকা বিক্রির ধুম পড়ে। এরপর বিকাল সাড়ে চার টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত পুনরায় চলে জাটকা বিক্রি। হাতেমআলী চৌমাথা ও পোর্ট রোড মাছ বাজারের ক্রেতা আমিনুল ইসলাম ও রহিম শেখ জানান, আমরা বুঝবো কি করে এটা ইলিশের মধ্যে পড়েনা বরং জাটকা। বাজারে কোথাওতো লেখা দেখিনি কতটুকু সাইজকে জাটকা বলা হয়। আর বিক্রেতাদের জিজ্ঞেস করলে বলে, না এটা জাটকা না ছোট ইলিশ। এনিয়ে অত্র বাজারের মাছ বিক্রেতা শামসুল হক বলেন, জাটকা একটু কম দামে বিক্রি করতে পারি আর একারণে ক্রেতাও বেশি থাকে। এছাড়া জেলেরা নিয়ে আসলে আমরা কি করবো মাছ তো বিক্রি করতে হবে নয়তো খাবো কি। দৈনিক কি পরিমাণ জাটকা ইলিশ বিক্রি হয় এব্যাপারে বিক্রেতা আরো বলেন, কম নয় প্রায় ৪/৫ টন বিক্রি হয়। জাটকা চিহ্নিতকরণের ব্যাপারে ইলিশ কর্মকর্তা বিমল আরো বলেন, ২৫ সেমি এর নিচে জাটকা কিন্তু ২৫ সেমি হয়ে গেলে তা ইলিশ হিসেবে পরিগণিত হবে এবং এ কথায় দশ ইঞ্চির নিচে জাটকা আর দশ ইঞ্চি হয়ে গেলে ইলিশ। কোন পদ্ধতিতে জাটকা পরিমাপ করা হবে এসময় তিনি বলেন, মাছটির ঠোট থেকে শুরু করে লেজের শেষ মাথা পর্যন্ত পরিমাপ হবে। কিন্তু ক্রেতাদের সহসাই নজড়কারে বাজারগুলোতে এধরণের কোন তথ্য দেয়া নাই এবং সরকারি ভাবে পরিমাপের কোন ব্যবস্থা নেই। তবে এ ব্যাপারে উক্ত মৎস্য কর্মকতা জানান এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আইডিয়া আমাদের নুতন বিভাগীয় কর্মকর্তা ২/১দিনের মধ্যে যোগদান করবে তখন এনিয়ে বিস্তার আলোচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে। যাতে বাজারগুলোতে কোন বিক্রেতা জাটকা বিক্রি করতে না পারে। এ সময় তিনি আরো বলেন এছাড়া কোন ক্রেতা আমাকে সরাসরি ০১৭১২৭১২৭৬২ নাম্বারে ফোন করে জাটকা বিক্রির তথ্য দিলে তাৎক্ষণিক ব্যাবস্থা নেয়া হবে।