• ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বরিশাল জেলখানা চলে মানুষ বেচাকেনা

admin
প্রকাশিত জানুয়ারি ১৩, ২০১৯, ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ
বরিশাল জেলখানা চলে মানুষ বেচাকেনা

এস এন পলাশ।।
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে চলে মানুষ বেচাকেনা আমদানি রফতানির যাতাকলে কয়েদি ও হাজতি। হাসপাতালে সিট বানিজ্য, ওয়ার্ডে সিট বানিজ্য, পিসি বানিজ্য, ঔষুধ বানিজ্য, রাইটার বানিজ্য, কারাগার বদলীর মিথ্যা ভয় দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা আদায়, ক্যাশ টেবিল নামক মানবতা বিবর্জিত কান্ড। নিন্মমানের খাবার সাপ্লাই, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কারাগারের ভিতর মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ সহ এমন কোন বানিজ্য নেই যা জেল সুপারের নির্দেশে হয়না। এমনকি টাকা দিলে মিলে মাদক ও বন্দী নির্যাতন, অনিয়ম-দুর্নীতি, মাদক বাণিজ্য থেকে শুরু করে নানা রকম অপরাধের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার । ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে দাগি অপরাধীরা নিয়ন্ত্রণ করছে কারাগারের সব কিছু। উন্নত খাবার, স্বজনদের একান্ত সাক্ষাৎ, অভিজাত জীবনযাপন, সুস্থ হয়েও হাজতি-কয়েদিদের মাসের পর মাস হাসপাতালে অবস্থানসহ এসবই চলছে অহরহ। তবে গরীবের জন্য আরেক জাহান্নাম বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার। তবে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে জেল সুপার অস্বীকার করে। সূত্র মতে টাকা ছাড়া কিছুই হয় না বরিশাল কারাগারে। এই কারাগারে ইট-বালু, চেয়ার-টেবিল, সব কিছুতেই টাকা চায়। অফিসার, কারারক্ষী, থেকে দালাল পর্যন্ত সবার নজর পকেটের দিকে, খোঁজে শুধু টাকা। কারাবন্দিদের সাক্ষাৎ পেতে প্রতিদিন কারা গেটে হাজির হন পাঁচশতাধিক দর্শনার্থী। কিন্তু দালাল চক্রের হাতে টাকা না দিয়ে কারাগারের বাইরের প্রধান গেইট পেরিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। ভিতরে টাকা বাহিরেও টাকা। আসামি দেখতে টাকা লাগে খাবার দিতে টাকা লাগে আসামির আরাম-আয়েশ নিশ্চিত করতেও লাগে মোটা অঙ্কের টাকা এমনকি দর্শনার্থীদের মোবাইল জমা রাখার জন্যও লাগে টাকা। মোট কথা প্রতিমাসে জেল সুপারের মাসিক অনিয়ম আয় ১০ লাখ টাকা বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে ধারন ক্ষমতার চেয়ে প্রায় কয়েকগুন হাজতি কয়েদী অবস্থান করছে। জেলা কারাগার এখন অনিয়মের মাধ্যমে টাকা কামানোর মেশিন বলেও জানান জেল ফেরত আসামীরা। গরুর মত হাজতি কয়েদি বেচা বিক্রি হয় পিসির মাধ্যমে। ঠাশা কয়েদিরা নিজেকে কিছুটা রক্ষা করতে পেতে চায় সামান্য থাকার যায়গা। এজন্য টাকা দিয়ে কিনে নিতে হয় নড়াচড়ার জায়গাটুকু। তাছাড়া জেলে ঢুকে টাকা না দিলে ইলিশ ফাইল কপালে জুটবেই। এ ছাড়াও কারা হাসপাতাল, রান্নাঘর (চৌকা), দর্জিদফা, বাগানদফা, ও কারাক্যান্টিনসহ সুবিধাজনক বিভিন্ন দফায় কাজ দিতে হাজতী-কয়েদীদের কাছ থেকে প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা আদায় করে কর্মকর্তারা। এসবের মধ্যে সবচেয়ে লোভনীয় পদ হল আমদানি ওয়ার্ড । উপরোক্ত সব দফা ও পদ প্রতিমাসে নবায়ন করতে হয়। ওয়ার্ডে সিট বানিজ্যের জন্য মেট নামক একধরনের দালালের নাম। এ মেটরাই ওয়ার্ডে সিট বানিজ্যের প্রধান। যারা কম আদায় করে পরবর্তী মাসে তাকে আর মেটও রাখেনা। ১ মাস পর পর এর মুল্যায়ন। তাছাড়া কারা হাসপাতালের অবস্থা আরো খারাপ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দখলে কারা হাসপাতাল। এ বানিজ্য সবাইকে ছাড়িয়ে যায়। এদের কেউ রোগী নয়। হাসপাতালে থাকার জন্য ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেওয়া হয় মাসে ১০/১২ হাজার টাকা। সে হিসাবে শুধু কারা হাসপাতালে অনিয়মের আয় হয় মাসে লাখ লাখ টাকা। জেল ফেরত উজিরপুরে রামু বলেন দেশের সবচেয়ে মানুষ নির্যাতন ও অনিয়মের স্থান বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার। টাকা ছাড়া সেখানে কিছুই বুঝেনা অসহায়দের জন্য এক প্রকার জাহান্নাম।