নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা ৩ মামলায় বরিশাল থেকে প্রকাশিত দৈনিক সময়ের বার্তা পত্রিকার সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদককে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন আদালত। গতকাল বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শামীম আহমেদ তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ আদেশ দেন।
জেলে যাওয়া ব্যক্তিরা হচ্ছেন- দৈনিক সময়ের বার্তা পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক এম লোকমান হোসাইন এবং ব্যবস্থাপনা সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী। মামলার বাদী মো. কামরুল হাসান মামলায় উল্লেখ করেন, গত ১৮ মার্চ দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা পত্রিকার ১ম পাতায় বড় আকারে শিরোনামে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে জড়িয়ে কুৎসামুলক ও বিদ্বেষজনক এবং মানহানিকর সংবাদ পরিবেশন করে।
একই সঙ্গে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর ফেইসবুক আইডির প্রোফাইল পিকচার থেকে ছবি ডাউন লোড করে উদ্দেশেমূলক ভাবে তাচ্ছিল্য করে ছবিসহ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন।
আসামীরা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট’র বিরুদ্ধে সংবাদ পরিকল্পিতভাবে পরিবেশন করেছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে আসামী মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করেছে।
এ ব্যাপারে চলতি বছরের ১৯ মার্চ মো. কামরুল হাসান বাদী হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা পত্রিকার এম লোকমান হোসাইন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী হাইকোটে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ এক আদেশে ২০১৯ সনের ৮ এপ্রিল ১০ দিনের মধ্য বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হবার নির্দেশ দেন।
অপর দিকে অন্য ১টি মামলায় ৪ সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হবার নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যথা সময়ে আদালতে হাজির হয়নি আসামিরা।
যা আদালতকে অপমানের সামিল। জামিনের আদেশে উচ্চআদালত আসামীদের মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। গতকাল এম লোকমান হোসাইন ও রিয়াজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
লোকমানের বিরুদ্ধে ৩টি এবং রিয়াজ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১টি মামলা দায়ের করা হয়। অপরদিকে কোতয়ালি মডেল থানার এসআই মহিউদ্দিন আহমেদ গতকালই মামলার চাজশির্ট প্রদান করেন আদালতে।
৫০০/৫০১/৫০২/১০৯ পিসি তৎসহ ২৬ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ আইনে চাজশির্ট দেওয়া হয়েছে। অপর মামলায় বাদী হচ্ছেন বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মইদুল ইসলাম। আসামীরা বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করে এবং মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে দুর্নীতি মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে বাদীর নিকট এক লাখ টাকা চাদা দাবি করে।
বাদী আসামীদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি আইনের ৩৮৫/৩৮৬/৩৮৭/৩৮৯/৫০০/৫০১/৫০২ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা হবার পর আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৯ সনের ১৮ মার্চ দৈনিক সময়ের বার্তা পত্রিকায় চেয়ারম্যান মইদুলকে বাচাতে বিচারক কবিরের জালিয়াতি শীর্ষক মানহানিকর অসত্য সংবাদ প্রকাশ করেন। আসামীরা বাদীর ও চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছবি ছাপায় যা আদালতের অবমাননার সামিল।
বাদী মইদুল ইসলাম ২০১৯ সনের ২৪ মে মার্চ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ে করেন। গতকাল মামলার আসামীরা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবদেন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন।