• ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বরিশালে সকালে সূর্যের হাসির পরে দুপুর থেকে বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত জুলাই ১০, ২০২৫, ১৭:২৩ অপরাহ্ণ
বরিশালে সকালে সূর্যের হাসির পরে দুপুর থেকে বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত

বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল॥ টানা চারদিনের প্রবল বর্ষণের পরে সূর্যালোক নিয়ে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে অনেকটা সচ্ছ দিনের সূচনা হলেও বেলা বাড়ার সাথে মাঝারি কালো মেঘে দিগন্ত ঢেকে মাঝারী বর্ষণে জনজীবনে আবার বিপর্যয় নেমে আসে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশালে ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পরে দুপুর ৩টা পর্যন্ত আরো ৮ মিলি বৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে গত ৪দিনে বরিশালে প্রায় সাড়ে ৩শ মিলিমিটার বৃষ্টি হল।

বিকেল সাড়ে ৩টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বরিশাল ও সংলগ্ন উপক’লভাগ যুড়ে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। তবে বরিশাল অঞ্চলে প্রায় সর্বত্রই নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার নিচে প্রবাহিত হবার পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বৃষ্টিপাতের পরিমান কিছুটা কম থাকায় আমন বীজতলা ও উঠতি আউশ সহ ফসলী জমি থেকে পানি কিছুটা সরে যেতে শুরু করেছে।

এতে করে আমন বীজতলার বেশীরভাগ রক্ষা পাবার আশা করছেন কৃষিবীদগন। তবে নিমজ্জিত প্রায় ৮০ হাজার হেক্টরের পাকা আউশের ভাগ্যে কি ঘটবে তা বলতে পারছেন না কেউ।

চলতি খরিপ-২ মৌসুমে বরিশাল অঞ্চলে প্রায় ২৪ লাখটন আমন চাল ঘরে তোলার লক্ষ্যে কৃষিযোদ্ধাগন যে প্রায় ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরী করেছেন, তার প্রায় ১৬ হাজার হেক্টরই গত ৪ দিনের বৃষ্টিতে প্লবিত হয়েছে।

এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার সকালে তার সর্বশেষ হিসেবে গত ৪ দিনের প্রবল বর্ষণে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের মাঠে থাকা ১ লাখ ৯৫ হাজার হেক্টর ফসলের মধ্যে বৃষ্টিপাতের ফলে প্রায় ৩৯ হাজার হেক্টরের ফসল প্লবনের শিকার বলে জানিয়েছে।

নিমজ্জিত ফসলের মধ্যে আমন বীজতলা ও রোপা আউশ ছাড়াও পান ও পাট সহ গ্রীষ্মকালীন সবজীর পরিমানই উল্লেখযোগ্য বলে জানা গেছে। আবহাওয়া বিভাগ গত ৪ দিনের মত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পরবর্তি ২৪ ঘন্টায়ও বরিশাল সহ উপক’লীয় এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সমতর্কতা জারী রেখেছে।

একই সাথে বরিশাল সহ এ অঞ্চলর সব নদী বন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত জারী রেখে লঘুচাপের প্রভাবে বায়ুচাপের তারতম্যের কারণে পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেতের আওতায় রাখা রয়েছে। এদিকে গত ৪ দিনের প্রবল বর্ষণে বরিশাল মহানগরীর অনেক এলাকা এখনো পানির তলায়।

অতিভারী বর্ষণের সাথে ভঙ্গুর পয়ঃ নিস্কাশন ব্যবস্থায় নগরীর বেশীরভাগ এলাকার পানি খুব ধীরে সেকেন্ডারী ড্রেন হয়ে নদীতে যাচ্ছে। ফলে নগরী পানিমূক্ত হতে সময় লাগছে বলে নগর ভবনের দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে।

তবে নগর ভবনের পরিচালনা বিভাগ তাদের পুরো টিম নিয়ে গত তিনদিন ধরে নগরীর ড্রেন সহ ময়লা আবর্জনার স্তুপ পরিস্কারে দিনরাত কাজ করছে।

গত জুনমাসে বরিশালে স্বাভাবিক ৪৬৫ মিলিমিটারের স্থলে ৫২৩ মিলি বৃষ্টি হয়েছে। যা ছিল স্বাভাবিকের ১২.৩% বেশী।

এমনকি চলতি মাসেও বরিশালে স্বাভাবিক ৪৩৫ মিলিমিটারের স্থলে ৪৯০ থেকে ৫৭০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়ে রখেছে আবহাওয়া বিভাগ।