বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল॥ স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনে হামলার বিচার চেয়ে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। হামলার ঘটনায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১টায় নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার আন্দোলন। মিছিলটি শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এসে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে স্লোগান দেন।
হাসপাতালে অরাজক পরিস্থিতি যেন না হয় এজন্য মূল ফটক আগে থেকেই বন্ধ করা ছিল। পুলিশ ও আনসার সদস্যরা অবস্থান নিয়ে আন্দোলনরতদের হাসপাতাল কম্পাউন্ডে প্রবেশ ঠেকায়। শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালের কর্মচারীদের মধ্যে। তাদের লাঠিসোটা নিয়ে জড়ো হয়ে মূল ভবনের মাঝখানের গেটে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হলে শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইট-পাটকেলে হাসপাতালের তিনজন আহত হন। যার মধ্যে বাহাদুর ও দীপক নামে দুজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ওদিকে শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের সামনে এক ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে বসেন।
হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ফয়সাল রাব্বি বলেন, আজকে শিক্ষার্থীরা আমাদের কয়েকজনকে আহত করেছে। তারা হামলা করার জন্যই সংঘবদ্ধভাবে এসেছে। হাসপাতালের কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। বিগত তিনদিন ধরেই নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে কাজ করছি। বিষয়টি আমরা পরিচালক স্যারকে জানিয়েছি। আমরা কাজ চালিয়ে যাব। আগামীকাল সকালে মিটিং রয়েছে। মিটিংয়ের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত।
আন্দোলনকর্মী মহিউদ্দিন রনি বলেন, আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনে হাসপাতালের কর্মচারীরা জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা করেছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আহত করেছে। আমরা এই হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি। স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার ও হামলাকারীরা যতদিনে আইনের আওতায় না আসবে ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা: মশিউল মুনীর বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার যে অভিযোগ উঠেছে তা আমরা তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতের সংস্কারের আন্দোলনে আমাদের দ্বিমত নেই।
আপনারা জানেন ইতোমধ্যে ৯৫টি বিকল যন্ত্র চালু করা হয়েছে। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ টিম পাঠিয়ে এসব চিকিৎসা যন্ত্র চালু করেছে।
তিনি বলেন, আজ শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের সামনে এসেছিলেন। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কাল সকাল ১০টায় সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম কিছুটা বিঘ্নিত হলেও বন্ধ হওয়ার সুযোগ সেই।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার ইমদাদুল হোসেন বলেন, অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনকারীরা সড়ক ছেড়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।
আন্দোলনকারীরা হাসপাতালের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসনের কার্যলয়ের অভিমুখে মিছিল নিয়ে যান।
উল্লেখ, স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে বিগত ২১ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে একদল শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১৪ আগস্ট হাসপাতালে অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় কর্মচারীরা।