রিপন হাওলাদার ॥ বরিশাল সদর উপজেলার ৮নং চাঁদপুরা ইউনিয়নের প্রায় ৩৩ শ ১৪ দরিদ্র পরিবার বঞ্চিত হয়েছে সরকারের ঈদের ভিজিএফ এর চাল থেকে। জানা গেছে, সরকার প্রতি বছর ঈদের আগে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য ভিজিএফ এর মাধ্যমে চাল বিতরন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবছরও ১৫ কেজি করে চাল বরাদ্ধ দেয় সরকার। কিন্তু চাঁদপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ আমান দুর্নীতির মামলায় জেল হাজতে থাকায় তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়। সে বরখাস্ত হওয়ার পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান প্যানেল চেয়ারম্যান সূর্য বেগম। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পাওয়ার পরে জোড়াতালী দিয়ে চলতে শুরু করে চাঁদপুরা ইউনিয়ন পরিষদ। গত ২৩ মে ভিজিএফ এর চাল বরাদ্ধ দেয় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সূর্য বেগম চাল উত্তোলন করতে গেলে সেখানে বাধা দেয় বরখাস্তকৃত ইউপি চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ আমান। বাধা দেয়ার পরে বন্ধ হয়ে যায় উত্তোলনের কার্যক্রম। গত ২৮ মে বরখাস্তাদেশ স্থগিত করে মহামান্য হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ফিরে পান আমানুল্লাহ আমান। আমানুল্লাহ দায়িত্ব ফিরে পাওয়ার পরে চালের বরাদ্ধ নিয়ে চলে নয়-ছয়। কোন কোন ইউপি সদস্য চালের তালিকা নিয়ে রয়েছে সংশয়। বরিশাল খাদ্য অধিদপ্তর সদর উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৪৯ টন ৭৭০ কেজি চাল বরাদ্ধ হয় চাঁদপুরা ইউনিয়নে। বরাদ্ধ হওয়ার পরে ইউপি সদস্য আর চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্বের কারনে বরাদ্ধের চাল এখন খাদ্য গুদামে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানদের ভাষ্য মতে চাল পাবে আজ অথবা কাল। আসলে সরকারের বরাদ্ধের ঈদের আগে পৌছে যাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠির ঘরে কিন্তু এখনো সেই চাল খাদ্য গুদামে। বিষয়টি নিয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সূর্য বেগম জানান, আমাকে এখনো মেম্বাররা তালিকা দেয় নাই। আমি সে জন্য চাল বিতরন করতে পারি নাই। ঈদের আগে আমি চাল উত্তোলন করতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ মামলার হুমকি দিয়েছে। সে জন্য চাল উত্তোলন কার্যক্রম স্থগিত অবস্থায় আছে। আমাকে ইউপি সদস্যরা তালিকা দিলে হয়তো এত দিনে চাল উত্তোলন হত। বিষয়টি নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, আমি বরাদ্ধ দিয়েছি চেয়ারম্যান মেম্বারদের দ্বন্দ্বে চাল বিতরন করা হয়নি। সরকারের এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত দরিদ্ররা এমনটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুবিধা থেকে বঞ্চিত কোথায়? ঈদের আগে পায় নি পরে পাবে এটা কোন বিষয় না। সুশিল সমাজ জানায়, তিনি বুঝাতে চেয়েছেন বরাদ্ধ দেয়া দরকার, বরাদ্ধ দিয়েছি। এখন এটা ইউনিয়ন পরিষদের বিষয়। এদিকে চাঁদপুরা ইউনিয়নের ভুক্তভোগীরা জানান, আমরা যে কোন সময় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য চেয়ারম্যানসহ সংশ্লীষ্টদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাবে। কারন বর্তমান সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চাঁদপুরা ইউনিয়নের সাধারন মানুষ।