• ১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বরিশালে পুলিশের কাছে চিরকুট

admin
প্রকাশিত জুলাই ৩, ২০১৯, ১৭:৫৫ অপরাহ্ণ
বরিশালে পুলিশের কাছে চিরকুট

বিডি ডেস্ক ॥

ভোলায় গরম কমাতে আবেদন জমা পড়েছে পুলিশের কাছে। রয়েছে বজ্রপাত বন্ধেরও আবেদন। শুধু তাই নয়, প্রতিদিনই এমন বিচিত্র অনেক আবেদন আসে বলে জানিয়েছে বরিশাল রেঞ্জ পুলিশ।

তবে শুধু এমন বিচিত্র অভিযোগই নয় রয়েছে নানা গুরুতর অভিযোগ। যে কারণে অনেক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের হাত থেকেও রক্ষা পাচ্ছে সাধারণ জনগণ।

অভিযোগ বক্সে পাওয়া দু’টি চিরকুটে দেখা যায়, যার একটিতে লেখা: ‘ভোলায় অনেক গরম পড়ছে। পুলিশ ভাইয়েরা যে কোনো ব্যবস্থা নিন।’ আরেকটি চিরকুট যায় যেখানে লেখা: ‘বজ্রপাত বন্ধ করার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।’

তবে বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন পুলিশে কর্মরতরা। এটাকে তারা পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন।

প্রায় বছর দু’য়েক আগে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো: শফিকুল ইসলামের উদ্যোগে বরিশাল বিভাগের সব জেলায় অভিযোগ বক্স স্থাপন করা হয়। শুধু জেলায় জেলায় নয়। বিভিন্ন থানা, শহর-গ্রাম, বাজার, স্কুলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাখা হয় অভিযোগ বক্সগুলো। যাতে সহজেই সাধারণ মানুষের চোখে সেগুলো পড়ে।

এ উদ্যোগের পেছনের গল্পটা কী? এ প্রশ্নের উত্তরে ডিআইজি মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষের অনেকে পুলিশের সামনে আসতে চায় না। পুলিশের সামনে যেতে একধরনের ভীতি কাজ করে তাদের মাঝে। অনেকের বাড়ি আবার থানা থেকে দূরে হওয়ায় তারা তাদের সমস্যার কথা নিয়ে পুলিশের কাছে যেতে পারে না। এ কারণে এ ধরণের একটা উদ্যোাগ নেই, যাতে সহজেই মানুষের সমস্যার কথা, প্রয়োজনের কথা আমরা জানতে পারি এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারি।

রাজশাহীতে বিভাগীয় কমিশনার থাকাবস্থায় নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন: এই অভিযোগ বক্সের প্রতি জনগণের আস্থা এতটাই যে, রাজশাহীতে পুলিশ কমিশনার থাকাকালে একজনের জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছিলাম এই বক্সে। পরে সেই ব্যক্তির ঠিকানা ধরে তাকে আমরা তার ন্যাশনাল আইডি কার্ডটি পৌঁছে দেই। এছাড়া এলাকায় মাদকের বিস্তার করে যারা অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদের বিপথে নেয়ার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জমা পড়ে। আমরা খুব সহজেই সত্য-মিথ্যা যাচাই করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারি। নিজের নাম ঠিকানা গোপন রেখে অভিযোগ জমা দেয়া যায় সেই বক্সে। যে কারণে দেখা যাচ্ছে অনেক অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটার আগেই পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে ব্যবস্থা নিতে পারছে।

জানা গেছে, পুরো বিষয়টির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছেন জেলার পুলিশ সুপাররা। প্রতিদিনই এ বক্সগুলো খোলা হয়। জমা পড়া অভিযোগগুলো বিশ্লেষণ করে পরবর্তীতে সেই অনুযায়ী আইনী পদক্ষেপ নেয় পুলিশ। গত প্রায় দেড় বছরে এই বক্সগুলোতে অভিযোগ জমা পড়েছে প্রায় ১২৯০টি।

বরিশাল ডিআইজি রেঞ্জ কার্যালয়ের সহকারি পুলিশ সুপার মো: মাসুম বলেন, প্রতিদিনই এ বক্সগুলোতে জমা পড়ে অসংখ্য অভিযোগ। খোলা হয় বক্সগুলো এবং অভিযোগগুলোর বিশ্লেষণ করে পরবর্তীতে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হয়।

এর মাধ্যমে অনেক বড় বড় অপরাধ সংঘটনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, কিছুদিন আগে জমি-জমা নিয়ে বিরোধের একটি অভিযোগ জমা পড়ে। সেখানে তড়িৎ গতিতে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এরকম অহরহ ঘটনা ঘটছে।

তিনি বলেন, অভিযোগ আমলে নিয়ে খুব দ্রুত গতিতে সমস্যা সমাধান করা হয়। এর মাধ্যমে প্রো-অ্যাকটিভ পুলিশিং এর চর্চা হচ্ছে।

– চ্যানেল আই অনলাইন