স্টাফ রিপোর্টারঃবরিশাল নগরীর চিহ্নিত প্রতারকের পক্ষে এক নারীর পরিবারকে খুন করার হুমকি দিয়ে এসেছেন দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার বরিশাল ব্যুরো প্রধান দাবীকারী, বরিশাল টাইমস ডটকমের বার্তা সম্পাদক এবং বির্তকিত নিউজ এডিটরস কাউন্সিল, বরিশালের সভাপতি হাসিবুল ইসলাম। এ ঘটনায় হাসিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরী করেছেন ভূক্তভোগী নারী। ডায়েরী নং ৪১।
স্থানীয়রা দাবী করেছে, প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা ওই নারীর বাসায় হুমকি দিতে গিয়ে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন হাসিবুল। এসময়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে স্থানীয় একটি দৈনিকের ফটোগ্রাফার আল আমিন সাগরকে মারধর করেন হাসিবুল ও তার সহযোগী ছাত্রদল নেতা খন্দকার রাকিবসহ বেশ কয়েকজন। আহত সাগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
খবর পেয়ে বরিশাল কাউনিয়া থানা পুলিশের ওসি আজিমুল করিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আর পুলিশ আসার খবর পেয়ে পালিয়ে যান হামলাকারীরা।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নগরীর চরমোনাই ট্রলারঘাট এলাকায় মাদক ব্যবসা করে আসছিল ছাব্বিশ বছর বয়সী এক নারী। বিগত কয়েকদিন ধরে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে আত্মসর্ম্পনের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। বিষয়টি জানতে পেরে কাউনিয়া থানার পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা রুস্তুম হাওলাদারের পুত্র রানা হাওলাদার ও সুমন নামে দুইজন ওই নারীর কাছে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আত্মসর্ম্পন বাবদ টাকা দাবী করেন।
রানা ও সুমন জানায় মাদক ব্যবসায়ীদের আত্মসর্ম্পন করতে হলে টাকা দিতে হয়। তারা সাবেক ওই মাদক ব্যবসায়ী নারীর কাছ থেকে সতেরো হাজার ৭শ’ টাকা নেন। কিন্তু আত্মসর্ম্পনের কোন ব্যবস্থা না করায় সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে ওই নারী জানতে পারেন তিনি প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন। শেষে আত্মসর্ম্পণ বাবদ প্রদত্ত টাকা ফেরত চাইলে রানা এবং সুমন বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখায়। মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনায় ৩০ আগস্ট কোতয়ালী মডেল থানায় প্রতারক রানা এবং সুমনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ৬৮। জি.আর ৫৩০/২০২০।
মামলার খবর শুনে মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর ) সন্ধ্যায় হাসিবুল ইসলাম তার বন্ধু ছাত্রদল নেতা খন্দকার রাকিব সহযোগীদের নিয়ে স্ব-রোড মোহনা কমিউনিট সেন্টারের বিপরীত পাশে ওই নারীর ভাড়া বাসায় উপস্থিত হন। হাসিব সাবেক ওই মাদক ব্যবসায়ী নারীকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিতে থাকেন। সেই সাথে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। মামলা তুলে না নিলে প্রাণে শেষ করে দিবে বলেও হুংকার দেন হাসিব।
বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পেরে অভিযুক্ত প্রতারক রানা হওলাদারের পক্ষে হুমকি দিতে আসা হাসিবুলকে নারীর কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন তার স্বজনরা।
খবর পেয়ে ফটোগ্রাফার আল আমিন সাগর কয়েকজন সহকর্মীসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হাসিবের নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতা খন্দকার রাকিবসহ কয়েকজন সাগরকে ব্যাপক মারধর করেন। এতে তার মুখম-ল, মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাট বেধে যায়। তাকে সহকর্মীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।
সাগর জানান, ঘটনাস্থলে ওই এলাকার উৎসাহি অনেক লোক ছিল। তাদের ঠেলে ভিতরে গিয়ে দাড়িয়ে ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা বের করি। এসময়ে হাসিবুল এবং খন্দকার রাকিব আমার ওপর হামলা চালান। আমি আত্মরক্ষার্থে সেখান থেকে চলে গিয়ে মূল সড়কে উত্তর দিকে একটি চায়ের দোকানে অবস্থান করি। কিন্তু রাকিব বাহিনী আমার পিছনে পিছনে এসে সেখানে আমার ওপর আবার হামলা চালিয়ে আমার ক্যামেরা ও মোবাইল ভাংচুর করে নিয়ে যান।
ওদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন কাউনয়িা থানার ওসি আজিমুল করিম। বিষয়টি জানতে পেরে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। তবে অবরুদ্ধ হাসিব নারীর ঘরে আটকা থেকে যান। শেষে ক্ষমা চেয়ে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। অবরুদ্ধদশা থেকে বের হয়েই উপস্থিত সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি।