নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বসার স্থান হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়া দলিল লেখক ও স্ট্যাম্প ভেন্ডারদের সুবিধার্থে স্টল নির্মাণ নিয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত ওই দলিল লেখক ও ভেন্ডাররা যেন কোনভাবেই আর পেশায় যুক্ত থাকতে না পারে সে জন্য বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তবে জেলা প্রশাসনের মানবিক দৃষ্টি ও সুনজর এবং দলিল লেখক ও ভেন্ডার সমিতির উদ্যোগে দ্রুত সময়ের মধ্যেই বসার স্থান হারানোদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। সেই উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসকের মৌখিক নির্দেশ অনুযায়ী দলিল লেখক সমিতি ও ভেন্ডার সমিতির ফান্ডের অর্থায়ন থেকে কালেক্টর কম্পাউন্ডের খালি জায়গায় স্টল নির্মাণ কাজ চলছে। তবে ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, স্টল বরাদ্দ পেতে তাদের অগ্রিম কোন টাকা দিতে হচ্ছে না। কিন্তু দুই সমিতির অর্থায়নে নির্মাণ কাজ শেষে প্রতি স্টল বাবদ যে খরচ হবে তা স্টল গ্রহীতারা উক্ত সমিতিকে পরিশোধ করবেন।
একাধিক দলিল লেখক ও স্ট্যাম্প ভেন্ডারের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, নগরীর কালেক্টর কম্পাউন্ডে পাশাপাশি অবস্থিত বিভাগীয় হিসাব রক্ষণ কার্যালয় ও সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয়। রেজিস্ট্রি অফিসের আশপাশেই দীর্ঘ প্রায় ৬০/৬৫ বছর ধরে ছোট ছোট ঘর তুলে দলিল লেখক ও স্ট্যাম্প ভেন্ডাররা তাদের পেশাগত কাজ চালিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি হিসাব রক্ষন কার্যালয়ের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হলে প্রায় শতাধিক দলিল লেখক ও ভেন্ডার ঘরশূন্য হয়ে পড়েন। তাদের বসার স্থান না থাকায় সেবা প্রত্যাশীরাও আর তাদের কাছে যান না। এছাড়া যেসব সেবা প্রত্যাশীরা ইতিমধ্যে তাদের হাতে দলিলের কাজ দিয়েছেন তারাও পড়েছেন বিপাকে। এমতাবস্থায় বসার স্থান হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়া দলিল লেখক ও ভেন্ডাররা দলিল লেখক সমিতি ও ভেন্ডার সমিতির কাছে গিয়ে তাদের বসার স্থানের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানালে দুই সমিতির নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান সমস্যা সমাধানে কালেক্টর কম্পাউন্ডের খালি স্থানে ঘর তুলে বসার মৌখিক অনুমতি দেন বলে জানিয়েছেন দলিল লেখক সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান খোকন। জেলা প্রশাসকের অনুমতি পেয়ে দলিল লেখক ও ভেন্ডার সমিতির ফান্ডের টাকা দিয়ে বিপদগ্রস্ত দলিল লেখক ও ভেন্ডারদের জন্য স্টল নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু ওই ঘর হারানো দলিল লেখক ও ভেন্ডাররা যাতে আর সুষ্ঠুভাবে এ পেশায় কাজ করতে না পারে সেজন্য তাদের অভ্যন্তরীন একটি মহল শুরু করে ষড়যন্ত্র। তারা বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে স্টল নির্মাণ কাজ বন্ধের পায়তারা করছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দলিল লেখক শাহীন, শামীম, রেজভী, সুমন, বাবুল হাওলাদারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তারা বলেন, আমরা বসার স্থান হারিয়ে আজ পথে পথে ঘুরছি। দলিল লেখক সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান খোকনের প্রচেষ্টায় খুব শীঘ্রই আমরা নতুন বসার স্থান পাবো বলে আশা করছি। স্টল বরাদ্দ পেতে কোন অগ্রিম টাকা দিতে হয় কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত এক টাকাও কাউকে দেইনি। দুই সমিতির নেতারা আমাদের বলেছেন, তাদের ফান্ডের টাকা দিয়ে নির্মাণ কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে হিসেব করে স্টল প্রতি যা খরচ হয়েছে তা দিলেই হবে। এদিকে বিগত ২৭ মে স্থানীয় দৈনিক কলমের কণ্ঠ পত্রিকায় রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ও দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান খোকনকে জড়িয়ে ‘খোকনের কোটি টাকার মিশন’ শিরোনামে একটি ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করে। যা দেখে ক্ষতিগ্রস্ত দলিল লেখক ও ভেন্ডার সদস্যরা বিস্মিত হয়েছেন। তারা উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
স্ট্যাম্প ভেন্ডার আব্দুল খালেক, আব্দুল কাদের খান, মকবুল হোসেন, আব্দুল জব্বার খান, আশরাফ আলী হাওলাদার, মজিবর রহমান মনু, আবুল হোসেন বলেন, দলিল লেখক সমিতি ও ভেন্ডার সমিতির নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে নির্মাণাধীন স্টল পেয়ে ভবিষ্যতে আয়-রোজগারের পথ সৃষ্টি করে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারব। এ জন্য জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান ও দলিল লেখক সমিতির সভাপতি, রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান খোকনের কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।