• ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৩শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বরিশালসহ দিনভর মুষলধারে বৃষ্টি, কাদা-পানিতে ভোগান্তি

admin
প্রকাশিত জুলাই ৮, ২০১৯, ১৯:৪৭ অপরাহ্ণ
বরিশালসহ দিনভর মুষলধারে বৃষ্টি, কাদা-পানিতে ভোগান্তি

বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকায় সকাল থেকেই বর্ষণ শুরু হয়েছে। কখনও ঝিরিঝিরি, কখনও মুষলধারে নামছে আষাঢ়ের বৃষ্টি। অলিগলিতে পানি। পথ চলতে ভোগান্তি। পাহাড়ধসের আশঙ্কা। নদীতে এক নম্বর সর্তক সংকেত।

সোমবার (৮ জুলাই) ভোরবেলা রাজধানীবাসী ঘুম ভেঙেই দেখেছে বর্ষার মেঘলা আকাশ। সেই সঙ্গে সকাল শুরু হয় ভোগান্তি দিয়েই। সকাল বেলাই স্কুল-কলেজ, অফিসগামী সাধারণ মানুষ বৃষ্টিতে ভিজেই ভোগান্তির শিকার হন। এরপর সারাদিন থেমে থেমে চলছে বর্ষণ। দুপুরের পর বেড়ে যায় বৃষ্টির পরিমাণ। এরইমধ্যে রাজধানীর বহু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক রাস্তায় কাদা। খানাখণ্ড ভরা রাস্তাগুলোতে চলতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়ছে মানুষ। সোমবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ঢাকায় ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

সকালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাহাত আহমেদ ভিজে ভিজেই স্কুলে রওনা দেন। সঙ্গে থাকা রাহাতে মা শান্তিনগরের বাসিন্দা নাজমা আক্তার বলেন, উপায় নেই। স্কুলে তো যেতেই হবে। এখন রিকশা পাচ্ছি না। তাই পায়ে হেঁটেই রওনা দিয়েছি।

বিকেলের দিকে অফিস ফেরত চাকরিজীবী মিতু আক্তার বলেন, ‘অফিস ছুটি হয়ে গেছে। কতক্ষণ বসে থাকবো। তাই বাধ্য হয়ে বৃষ্টির মধ্যেই অফিস থেকে বের হলাম। এখন ভিজে ভিজে বাসায় যাচ্ছি।’

আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘বাংলাদেশের আকাশে এখন মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে। এর প্রভাবেই বৃষ্টি হচ্ছে। আগামীকাল এই বৃষ্টি কমতে পারে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টি স্বাভাবিক।’ এ ধরনের বৃষ্টি এই মাসে আরো হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতরের এক সর্তকবার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার ) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ।

এদিকে, নদীবন্দরগুলোর জন্য জারি করা হয়েছে এক নম্বর সর্তক সংকেত। আজ দিনগত রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরগুলোর জন্য এই সংকেত জারি করা হয়েছে। বার্তায় বলা হয়, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ময়মনসিংহ, টাংগাইল, সিলেট, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খূলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, রাজধানীর অলিগলিতে পানি জমে যাওয়ার বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৃষ্টিতে কিছু কিছু এলাকায় পানি জমেছে। আমাদের ইমার্জেন্সি রেন্সপন্স টিমগুলোসহ পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা তাদের রুটিং অনুযায়ী কাজ করছে। কোথাও দীর্ঘক্ষণ পানি জমে থাকতে দেওয়া হবে না।’

সোমবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে রাঙ্গামাটিতে ১৭০ মিলিমিটার। এছাড়া, ময়মনসিংহে ২৩, চট্টগ্রামে ৭৮, শ্রীমঙ্গলে ৪১, রাজশাহীতে ১৩, রংপুরে ৪১ ও বরিশালে ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।