• ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

পোর্ট রোড মৎস্য কেন্দ্রে অবতরণ ফি এক টাকার পরিবর্তে চার টাকা

admin
প্রকাশিত মার্চ ২২, ২০১৯, ১৩:৩৪ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রায় সোয়া এক একর জমিতে নির্মিত বরিশাল নগরীর একমাত্র সরকারি মৎস্য অবতরণ ও প্যাকিং কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এহেন ক্ষতিরমুখে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। বাধ্য হয়ে পোর্ট রোড এলাকায় মৎস্য আড়তদারদের সিন্ডিকেটে গড়ে ওঠা অবতরণ কেন্দ্রে বিভিন্ন ধরণের মাছ বেচাকেনা করছে। দৈণিক শতাধিক টন মাছ অবতরণের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন মৎস্য কেন্দ্রটিতে চারশ ক্যান বরফ উৎপাদনসহ একটি আড়ত ঘর, নিলাম ঘর, প্যাকেজিং ঘরসহ জনবলদের আবাসন ও অফিস ভবন রয়েছে। গত বছর এপ্রিল মাস থেকে টাইলস ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছে স্থাপনাগুলো। সুত্রে আরো জানা গেছে, ৮৫-৮৬ সালে বরিশাল সদরসহ মংলা, খুলনা ও পাথরঘাটায় এ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র স্থাপিত হয়। এরপর কয়েক বছর ধরে চালু থাকার পর এটি বন্ধ থাকে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় পুনুরায় নগরীর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি চালু করার কিছুদিন পর কেন্দ্রটি ফের বন্ধ হয়ে যায়। এনিয়ে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটির অফিস সহায়ক মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, পাথরঘাটা, পিরোজপুর জেলার পারের হাট, পটুয়াখালীর আলীপুর ও মহিপুরে নতুন ও আরো আধুনিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র হচ্ছে। একইসাথে বরিশালের এ কেন্দ্রটি পুনরায় আরো ক্ষমতাসম্পন্ন করে চালুর বিষয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তরের পরিকল্পনা দপ্তর এবং শীঘ্রই তা একনেকে পাস হবে বলে জানা যায়। নগরীর একমাত্র সরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবি ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতির বিষয়ে অনুসন্ধানসুত্রে আরো জানা গেছে, শতকরা চার টাকা দিয়ে ব্যবসায়ীদের মাছ বিকিনি করতে হয় পোর্ট রোড মৎস্য কেন্দ্রে। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় এরকম জিম্মি হয়েই ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে বাধ্য হচ্ছে। বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ, ভোলা, মহিপুর, পাথরঘাটা, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ ও ভারত থেকে মাছ পোর্ট রোডে আসে ট্রলার ও ট্রাকযোগে। এরমধ্যে দৈণিক ৩০/৪০ টন ইলিশ মাছ বিক্রি হয়। এর প্রতি মন বিক্রি হয় ১২/২৪ হাজার টাকা দর ওঠে। আর প্রতি টনে অবতরণ ফি দিতে হয় শতকরা ৪টাকা হারে চার হাজার টাকা অথচ সরকারি অবতরণ কেন্দ্রে ফি ছিলো শতকরা ১ টাকা হারে একহাজার টাকা। শুধু তাই নয় পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, কোড়াল, পোমা ও ভারত থেকে আসা রুই, গাগড়া, মোসম, ম্যাদ, রুই ও কাতলাসহ অন্যান্য মাছ বিক্রি হয় ৩০/৪০টন। এর প্রতি মন বিক্রি হয় ২৫শ/১০ হাজার টাকা। ঠিক একইহারে অন্যান্য মাছের ক্ষেত্রেও প্রতিটনে গুনতে হয় অতিরিক্ত অবতরণ ফি। সরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটিতে বরফও পাওয়া যেতো সুলভ মুল্যে। কিন্তু এখন মৎস্য বিক্রেতাদেরকে চড়া দামে বরফও কিনতে হচ্ছে। এনিয়ে মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি আলম চাপরাশি বলেন, আমরা মাছ নিয়ে আড়তে গেলে যদি কম আড়তদারিতে বিক্রি করতে পারতাম তাহলে খুচরা বাজারেও দাম কম হতো কিন্তু আমাদের এই চিন্তা তো আর বাস্তবায়ন হবেনা তাহলে তো সরকারি অবতরণ কেন্দ্রটি চালু হতো আর আমরাও মোটামুটি ভালো থাকতাম। আর আমাদের সংগঠনের প্রায় তিনশতাধিক মৎস্যজীবি ইলিশ মৌসুমসহ প্রায় বারোমাসই মৎস্য আহোরণ করে। অপরদিকে মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি মো: মনু মিয়া বলেন, ইলিশের মৌসুমে একমাত্র বেশি জমজমাট থাকে কারণ তখন ভারতসহ অন্যান্য দেশেও রপ্তানি বেড়ে যায়। এছাড়া বাকি সময়গুলোতে বাহারি ধরনের মাছ এখানে বিকিকিনি হয়। সেক্ষেত্রে এখানে আড়তদারি ফি তেমন বেশি নেয়া হয়না। তবে মৎস্যজীবি ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে আমিও চাই সরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি আবার চালু হোক।