নিজস্ব প্রতিবেদক
আটকের পর নেতাকর্মীদের পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রি দল(বাসদ) এর বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মষীনা চক্রবর্তী। গত ১৯ এপ্রিল ব্যাটারিচালিত রিক্সা শ্রমিক-মালিক সংগ্রাম কমিটির মিছিল থেকে আটককৃত বাসদের ৬ নেতা-কর্মীকে থানা হেফাজতে রেখে ঘটনার দিন রাতে ও পরের দিন ২০ এপ্রিল সকালে পুলিশের নির্যাতনের এ অভিযোগ আনা হয়। আজ শনিবার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১২টায় নগরের ফকির বাড়ী রোস্থা বাসদ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ তিনি এ কথা জানান। লিখিত বক্তব্যে ডাঃ মনিষা চক্রবর্তী বলেন, গত ১৯ এপ্রিল ব্যাটারিচালিত রিক্সা সংগ্রাম কমিটি ও বাসদের আয়োজনে ভূখা মিছিল ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে নেতা কর্মীদের নিয়ে ফেরার পথে পুলিশ বিনা উস্কানিতে পুলিশ বিক্ষোবকারীদের হামালা চালায়। পরে আটক নেতা কর্মীদের কোতয়ালি মডেল থানার দোতলার একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাসদের জেলা কমিটির আহবায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুম্মন ও আমাকেসহ আটক নেতা-কর্মীদের দুই দফায় অমানবিক ও ভাষায় বর্ননাহীন নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনকারী পুলিশ সদস্যরা কে নারী আর কে পুরুষ তার বাদ বিচার করেনি। তিনি বলেন, নির্যাতনের ভংঙ্কর চিত্র ছিলো ২০তারিখ সকালে। পুলিশ ওইদিন সকালে আমাদের সদর হাসপাতালে মেডিক্যাল চেকআপের জন্য নিয়ে যায়। পরে সকাল ১০টায় থানায় এনে উপ-পরিদর্শক( এসআই) হাসানসহ পুলিশ সদস্যরা আমাকেসহ বাসদ জেলা কমিটির আহবায়ক রুম্মান ও নাসরিন আক্তার টুম্পাকে চর থাপ্পর মারতে থাকে। এক পর্যায়ে লাঠি দিয়ে বেধরক পেটায় ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। এছাড়া ঘটনার দিন রাতে নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ রিক্সা শ্রমিকসহ বাসদ নেতাদের ধরে এনে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখায়। সকালে পুলিশ তাদের উপরেও নির্যাতন চালিয়েছে। সংবাদ সম্মেলন বাসদ আহবায়ক ইমরান হাবিব রুম্মান, শ্রমিক নেতা মিঠুন চক্রবর্তীসহ আটক ১৫ নেতা কর্মী নিঃশ্বর্ত মুক্তি দবীসহ ৫দফা দাবী পেশ করে। দাবী গুলো হলো, পুলিশী হেফাজতে শ্রমিক নেতৃবৃন্ধর উপরে নিপীড়ন নির্যাতনের বিচার, বিভিন্ন শ্রমিক এলাকায় গণগ্রেফতার, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি নির্যাতন বন্ধ করা, শ্রমিক নেতৃবৃন্ধ বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা ও ব্যাটারিচালিত রিক্সার লাইসেন্স প্রদান করে নগরীতে গণপরিবহনের শৃঙ্খল ফিরিয়ে আনা। এ সকল দাবী পুরন না হওয়া পযর্ন্ত তারা তাদের আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির বরিশাল জেলার সভাপতি আ্যাডভোকেট একে আজাদ, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ সম্পাদক অধ্যাপক জলিলুর রহমান, গণসংহতির আন্দোলনের আহবায়ক দেওয়ান আব্দুর রশিদ নিলু, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিকদল (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক সাইদুর রহমান প্রমূখ। অভিযোগ প্রসংঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার এসএম রুহুল আমিন বলেন, আটক বাসদ নেতা কর্মীদের পুলিশ হেফজতে নির্যাতন ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। এর ধরনের যদি জাসদের পক্ষ কোন অভিযোগ থেকে থাকে তা হলে তারা লিখিত অভিযোগ দিতে পারে। অভিযোগ পেলে বিষয়টি আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উল্লেখ্য গত ১৯ এপ্রিল বরিশালে ব্যাটারি চালিত রিক্সা শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির ভূখা মিছিল ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে পুলিশের সাথে বাসদ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ সময়ে ডা. মনীষাসহ ৬নেতা কর্মীকে আটক করেছিলো পুলিশ। পরে নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে আটক আরো ১১ রিক্সা ও বাসদ নেতা কর্মীকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের পুলিশের দায়ের করা একটি মামলায় তাদের জেল হাজতে পাঠায়। ওই মামলায়্ গত মঙ্গলবার মনীষা চক্রবর্তী অর্ন্তবর্তীকালীন জামিনে মুক্তি পায়।