বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল॥ বরগুনার পাথরঘাটায় বিদ্যুৎ সংকট এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামান্য ঝড়ো হাওয়া বা আকাশে বজ্রপাত হলেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
জানা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলা পুরোপুরি নির্ভরশীল পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া গ্রিডের ওপর, যা এখান থেকে প্রায় ৬৬ কিলোমিটার দূরে।
দীর্ঘ এই লাইনে যেকোনো স্থানে সমস্যা দেখা দিলেই পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়। এতে উপজেলার ১৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিদ্যুৎ লাইনের মাধ্যমে সঞ্চালিত ৬০ হাজার গ্রাহকের প্রায় ৩ লাখ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন। বিশেষ করে বৈরী আবহাওয়ার সময় বিদ্যুৎ না থাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে স্কুল-কলেজের পড়াশোনায় মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। গরমে ফ্যান ছাড়া ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের, ল্যাবরেটরি কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও বিদ্যুতের সংকট ভয়াবহ সমস্যা তৈরি করছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নীল রতন সরকার জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় জরুরি সেবা ব্যাহত হচ্ছে। পরীক্ষার রিপোর্ট দিতে দেরি হচ্ছে এবং ফ্রিজে রাখা ভ্যাকসিনও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বিএফডিসি পাথরঘাটায় বিদ্যুৎ সংকট সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে। বিদ্যুৎ না থাকায় আইস প্ল্যান্টগুলো নিয়মিত চালু রাখা যাচ্ছে না। এতে বরফ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় প্রচুর মাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
জেলে ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। বাজারের ফ্রিজে রাখা মাছ, মাংসসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যও দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা দ্রুত পাথরঘাটায় একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রিড স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, এটি হলে শুধু জনজীবন স্বাভাবিক হবে না, বরং দেশের অন্যতম বৃহত্তম মৎস্য খাতও টিকে থাকবে।
পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পাথরঘাটা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আরিফ শাহরিয়ার ফাহাদ বলেন, ৬৬ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইনের যেকোনো জায়গায় সমস্যা হলে পাথরঘাটার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যা খুঁজে বের করে মেরামত করতে সময় লাগে।
তবে ইতোমধ্যে বরগুনায় নতুন গ্রিড সংযোগের অনুমোদন হয়েছে। এটি চালু হলে সমস্যা সমাধান হবে।তবে সময় লাগবে প্রায় এক বছর।