বাংলাদেশে জীবপ্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব সংকট এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি (এনআইবি)-তে মহাপরিচালক পদে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহেদুর রহমানের নিয়োগ বাস্তবায়নের দাবিতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব বায়োটেকনোলজি গ্র্যাজুয়েটস (বিএবিজি) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। শনিবার বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ড. শাহেদুর রহমানের নিয়োগে বিলম্ব ও তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুশতাক ইবনে আয়ূব লিখিত বক্তব্যে বলেন, জীবপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়নের জন্য অভিজ্ঞ জীবপ্রযুক্তিবিদদের নেতৃত্ব প্রয়োজন, যা ড. শাহেদুর রহমান প্রদান করতে সক্ষম। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক উম্মে সালমা যোহরা (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়), আ.ন.ম তারিকুল ইসলাম (টেকনোওয়ার্থ অ্যাসোসিয়েটসের জেনারেল ম্যানেজার), অজয় রায় (ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি), মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান (বিইউএইচএস), এবং বিএবিজি প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুস সামাদ আজাদ ( জেনবিট হেলথ)।
বক্তারা অভিযোগ করেন, দেশে জীবপ্রযুক্তি খাতে নেতৃত্বের অভাব এবং সরকারি পর্যায়ে দক্ষ জীবপ্রযুক্তিবিদ নিয়োগের ক্ষেত্রে অবহেলা দীর্ঘদিনের। তারা দাবি করেন, অধ্যাপক শাহেদুর রহমানের নেতৃত্বে এনআইবি দেশীয় বায়োটেকনোলজি বিকাশে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। জীবপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। বক্তাগণ বলেন, দেশে প্রতি বছর ১১০০-এর বেশি জীবপ্রযুক্তি বিষয়ে স্নাতক হলেও কর্মসংস্থানের জন্য যথাযথ পরিকল্পনা নেই। কারণ যতবার মহাপরিচালক ছিলেন তারা বিষয় সংশ্লিষ্ট হলেও সরাসরি এই বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। যেহেতু তিনি একজন অভিজ্ঞ গবেষক ও কর্মবীর তাই ড. শাহেদুর রহমানকে এনআইবির মহাপরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হলে এই খাতে সুষ্ঠু নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে।
বক্তারা উল্লেখ করেন, জীবপ্রযুক্তি গ্র্যাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের দাবিতে অধ্যাপক শাহেদুর রহমান বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। করোনা মহামারীর সময় জীবপ্রযুক্তিবিদদের কাজে লাগাতে সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন এবং বিসিএস পরীক্ষায় জীবপ্রযুক্তি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দীর্ঘ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। এছাড়া দেশের প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবপ্রযুক্তি বিভাগের সিলেবাস প্রণয়নেও তিনি অবদান রেখেছেন।
জীবপ্রযুক্তি শিক্ষার্থীদের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এই অধ্যাপক চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় ঝুঁকি নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়, যখন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুলিশের এবং সন্ত্রাসীদের আক্রমণের মুখে পড়েছিল, ড. শাহেদুর রহমান ব্যক্তিগত ঝুঁকি নিয়ে তাদের রক্ষা করেছিলেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অরুণাপল্লিতে আশ্রয়ের জন্য তার সহায়তা পেয়েছিলেন। তিনি সেসময় নিজ দায়িত্বে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি তার অঙ্গীকারের পরিচয় দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অধ্যাপক শাহেদুর রহমানের নিয়োগে বিলম্বের জন্য একটি বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্রকে দায়ী করেন এবং দ্রুত এই নিয়োগ কার্যকর করে যোগদানে বিলম্বের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া হলে দেশজুড়ে কর্মবিরতি ও মানববন্ধনসহ কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।