নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নারী নির্যাতন মামলার আসামী পুলিশ কনেস্টবলের কুটকৌশলে দিশেহারা বাদী মুক্তা। মামলার তিন নং আসামী হয়েও সুচতুর এ কনস্টবল তার ছোট ভাইকে তিন নং আসামী জাহির করে আদালতে হাজিরা চালু রেখেছেন। এনিয়ে বন্দর থানাধীন টুঙ্গীবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিংহেরকাঠী গ্রামের ইউপি মেম্বার এব্যাপারে বলেন, চলমান এ মামলায় যে ছেলেকে তিন নং আসামী বলে হাজিরা দেয়ানো হচ্ছে আদতে ঐ ছেলে হলো তিন নং আসামীর ছোট ভাই। এমন কুটকৌশলের ব্যাপারে উস্মা প্রকাশে করে তারা আরো বলেন, অত্র এলাকায় এ পরিবারটি একটি আতঙ্কিত চরিত্র এবং চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে এমামলা সংক্রান্ত স্থানীয় সালিশীতে মামলার আসামীর মাকেও শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে পুলিশি হেফাজতে নেয়ার পর কারাভোগ করতে হয়। শুধু তাই নয় স্থানীয় গণ্যমান্যদের তো নয়ই এমনকি জনপ্রতিনিধিদেরও তোয়াক্কা করেনা এ পরিবার। মামলার বাদীর পরিবারসূত্রে জানা গেছে, সাঈম হোসেন (বাবু) নামের এক কনস্টবল নারী নির্যাতন মামলার ৩নং আসামী হওয়া সত্বেও নিজে আদালতে হাজিরা না দিয়ে ছোট ভাই খোকনকে আদালতে পাঠিয়ে হাজিরার কাজটি সাড়ছেন। কুটকৌশলের এখানেই শেষ নয় চাকুরী প্রাপ্তির আগেও তদন্ত প্রতিবেদনে গোপন করা হয়েছে এ মামলাটির বিষয়টিও। বর্তমানে ওই মামলার চার্জসীটের বাবুর নাম রয়েছে বলে সূত্র জানায়। অভিযোগের তীর যার দিকে সেই বন্দর থানার সিংহেরকাঠী এলাকার সুলতান হাওলাদারের পুত্র। বর্তমানে ডিএমপি উত্তরা থানার পিওএম শাখায় কর্মরত রয়েছে, তার কনস্টবল নাম্বার ৩৫৮৫৮। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোঃ সাঈম হোসেন (এলাকার ছদ্মনাম সাঈম বাবু) প্রতারণা মূলকভাবে সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশ ট্রের্নিং রিক্রুট কনস্টবল হিসেবে চূড়ান্ত নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে পিটিসি খুলনা হতে ৬ মাস মৌলিক প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে কনস্টবল পদে কর্মরত আছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে পুলিশে চাকুরী প্রাপ্তির পূর্বে ১৭ই ফেব্র“য়ারি ২০১০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০১ (সংশোধন আইন) এর ৯(১) তৎসহ দঃবিঃ ৩১৩/ ১৪৩/ ৪৪৮/ ৩২৩/ ৩২৪/ ৩২৫/ ৪২৭ ধারায় কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা হয়। যার মামলা নং- ৪৪। পরবর্তীতে মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে স্থানান্তর হলে আসামী হিসেবে হাজিরা প্রদানের তারিখ পড়ে। ওই সময় যেহেতু তার চাকুরী চলমান তাই ছোট ভাই খোকনকে হাজিরায় পাঠায়। যেহেতু মামলায় বাবুর পিতা , মাতা, ভাই, চাচা, আসামী ছিল, তাই একই সাথে হাজিরা প্রদানের সময় বাবুর স্থলে ছোট ভাই খোকন হাজিরার কাজটি করে দেয়। পরবর্তীতে মামলার ১নং ও ৩নং যথাক্রমে হাসান ও বাবুল নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে আদালত। যা বর্তমানেও বহাল রয়েছে। এদিকে চার্জসীট ভূক্ত আসামীর পুলিশ ভ্যারিফিকেশন এর কাজটি সম্পন্ন হয় সেবিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। মামলার বাদীর ভাষ্যমতে সবকিছু আড়াল করে ভিআর কর্মকর্তার সাথে আতাত করে অতিগোপনে সব কাগজপত্র দাখিল করেছে। বাদি আরো জানান, পুলিশে চাকুরী হওয়ার পূর্বে বাবু এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ছিল। এ বিষয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার সাথে আলাপে তিনি জানান, কেবল পুলিশ বাহিনী নয়, সরকারি যেকোন চাকুরী প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পলাতক বা ফৌজদারী মামলার আসামী কোন ক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। সেক্ষেত্রে চাকুরীর আবেদন পত্রে সুস্পষ্টভাবে এসংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয়। জানা গেছে সেখানেও সম্পূর্ণ তথ্যাদী গোপন করেছে বাবু। মুক্তা বেগম আরো জানান, ৩০ মে ২০১০ সালে মামলাটির চার্জসীট প্রদান করা হয়। আজ বরিশালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলায় হাজিরা গ্রহণ করা হবে।