নলছিটি প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠির নলছিটিতে নির্যাতনের পর গৃহবধূ নুসরাত জাহান ইভার মুখে তাঁর স্বামী বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যার ঘটনায় পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে মামলা নিতে নলছিটি থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. গাজী রহমান এ নির্দেশ দেন। গৃহবধু নুসরাত জাহান ইভার বাবা গাজী আকতার হোসেন বাদী হয়ে ইভার স্বামী তরিকুল ইসলাম লিংকনকে প্রধান আসামী করে জেলা জজ আদালতে আবেদন করলে শুনানী শেষে আদালত এ নির্দেশ প্রদান করেন। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন ইভার শ্বশুর আহসান হাবিব, শাশুরী জাহানআরা বেগম, ভাসুর মো. সুজন ও তার স্ত্রী হাসি বেগম।
জানা গেছে, হাসপাতালে গৃহবধূ ইভার মৃত্যুর পর স্বামী তরিকুল ইসলাম লিংকনসহ তার পরিবারের সদস্যদের আসামী করে নলছিটি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে মামলা নেয়নি ওসি। এসময় ময়নাতদন্তের চুরান্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মামলা রের্কডভুক্ত করা যাবেনা বলে জানিয়ে দেন তিনি। পরে মেয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে দুপুরে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ইভার বাবা গাজী আক্তার হোসেন। এসময় যৌতুকের দাবিতে ইভাকে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন প্রায়ই নির্যাতন করত বলে অভিযোগ করেন সংবাদ সম্মেলনে।
বাদীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হোসেন জানান, বিজ্ঞ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১/ক/৩ (সংশোধিত ২০০৩) মোতাবেক ইভার স্বামী তরিকুল ইসলাম লিংকনকে প্রধান আসামী করে আরো ০৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত শুনানী শেষে নলছিটি থানার অফিসার ইনচার্জকে ০৩ কার্যদিবসের মধ্যে বাদী পক্ষের এফআইআর নথিভুক্ত করার নির্দেশ প্রদান করেছেন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে , পাঁচ বছর পূর্বে বৈচন্ডী গ্রামের হাবিবুর রহমান হাওলাদারের ছেলে তরিকুল ইসলাম লিংকন হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় নুসরাত জাহান ইভার। বিয়ের পর নানা কারণে ইভাকে নির্যাতন করতো তাঁর স্বামী। এছাড়াও ইভার পরিবারের কাছে দুইলাখ টাকা যৌতুক দাবি করেছিল লিংকন। নির্যাতন সইতে না পেরে গত ৩০ মে দুপুরে ইভা অজ্ঞান হয়ে যায় । পরে স্বামী তরিকুল ইসলাম লিংকনসহ অন্যরা মিলে ইভার মুখে জোরপূর্বক বিষ ঢেলে দেয়। দীর্ঘ ১৫দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে সে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যায়। এদিকে ইভার মৃত্যুর পরেই স্বামী লিংকনের পরিবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে লিংকনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।