• ১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

নগরীর নৌবন্দরে পণ্যপরিবহন টোল আদায়ে চাঁদাবাজি

admin
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১৭, ২০১৭, ১৬:৪১ অপরাহ্ণ
নগরীর নৌবন্দরে পণ্যপরিবহন টোল আদায়ে চাঁদাবাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥নগরীর নৌবন্দরে পারস্পারিক দোষারোপে পরিকল্পিত কুটকৌশলের কষাঘাতে যাত্রীদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হলেও মুক্তি মিলছেনা পণ্য টোল আদায়ে পরিমল গংদের চাঁদাবাজি থেকে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ইজাড়াদারের এ পরিকল্পিত কুটকৌশলে বছরজুড়ে লাগানো হয়নি পণ্য টোল আদায়ের সরকারি টোল চার্ট সাইনবোর্ড। আর এসুযোগে যাত্রীদের অন্ধকারে রেখে পরিমল গংরা নির্ধারিত টোলের চেয়ে কয়েকগুন বেশি টোল আদায় করছে যাত্রীদের থেকে। বন্দরটির পেটের মধ্যে চলমান এ রামরাজত্ব চলছে কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার মাসতুতো ভাই সম্পর্কের খাতিরে। বরিশাল নৌ বন্দরে যাত্রীদের এ নাভিশ্বাস থেকে সুরাহার ব্যাপারে নৌবন্দর কর্তৃপক্ষের পোর্ট অফিসার মো: মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা ইজাড়াদারকে এ পর্যন্ত তিনবার নোটিশ করেছি টোল চার্ট সাইনবোর্ড গেট সংশ্লিষ্ট স্থানে লাগানোর জন্য, যেন যাত্রীরা সহসাই এ টোল চার্ট দেখে সরকারি নিয়মানুযায়ী টোল দিতে সমর্থ হয়। কিন্তু তার এ বক্তব্য বছরের শুরু থেকে শেষাবধি চলতে থাকলেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু নোটিশের পরও কেন ইজাড়াদার সরকারি নিয়ম অমান্য করে বছরজুড়ে কিভাবে এ চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছে এরকোন সদুত্তর মেলেনি। কিন্তু এব্যাপারে নাম অপ্রকাশের শর্তে দপ্তরটি একাধিকসূত্র জানায়, দলীয় প্রভাবের কারণে এ নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বছর পার করছে পরিমল গংরা। এদিকে বরিশাল নৌবন্দরে পন্যপরিবহন টোল আদায়ের ইজাড়াদার মহানগর শ্রমিকলীগ সম্পাদক পরিমলের সেই পুরানো বুলি ভাই সাইনবোর্ড লাগাবো কিভাবে বন্দর কর্তৃপক্ষই তো দেয়না আর তাদেরকে যে বলবো সেসময়ও হয়ে ওঠেনা। পারস্পরিক দোষারোপেই বছর পার করে অব্যাহত রাখা হয়েছে টোল আদায়ের নামে কয়েকগুন বাড়তি টোল আদায়ের চাঁদাবাজি। যাত্রীরা সরকারি টোল চার্ট দেখে টোল পরিশোধ করতে চাইলে উল্টো পরিমল গংদের ক্যাডার বেষ্টিত রোষানলের শিকাড় হতে হয় হরহামেশাই। বাড়তি টোল আদায়ের এ দুর্দশার চিত্র প্রত্যক্ষ করতে কোন কর্তৃপক্ষকে কোন প্রকার কাঠখড় পোড়াতে হবেনা সরেজমিনে একটু সতর্ক দৃষ্টি রাখলেই সহসাই মিলবে এর প্রমাণ এমনটিই জানালেন ভুক্তভুগী সংশ্লিষ্ট একাধিকসূত্র। এসময় ঢাকা থেকে আসা যাত্রী ফোরকান বলেন আমি আমার স্ত্রীর জন্য একটি সেলাই মেশিন আনি গেটে আমার থেকে দুশ টাকা চায় এরপর আমি গেটের চারপাশে ভিতরে ও বাইরের দেয়ালে কিংবা অন্য কোথাও কোন টোল চার্ট দেখিনি এবং বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে দেড়শ টাকা দিয়ে পার পাই বলে উষ্মা প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় খবর বের হয় তখন একটু আশায় থাকি হয়তো এবার বন্ধ হবে পন্য টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি। কিন্তু যেই সেই। সূত্রে জানাগেছে, বন্দর এলাকার সকল প্রকার মালামাল উঠানো নামানোর জন্য পোর্ট রুলস ১৯৬৬ অনুযায়ী প্রতি কুইন্টাল তিন টাকা এবং ব্যক্তিগতভাবে এ পরিমান পণ্য পরিবহন শুল্কমুক্ত থাকবে এবং সাইকেল ২ টাকা, জীপ ও পিকআপ ১৫টাকাসহ অন্যান্য পণ্যের টোল আদায় বিবরণী টোল আদায় তালিকা বোর্ডে উল্লেখ থাকে। সরেজমিনে এ বোর্ডটি নৌ বন্দরের কোথাও লাগানো হয়নি। না লাগানোর কারণ অনুসন্ধানে বন্দর কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন টেন্ডার হওয়ার পর এ সম্বলিত নিয়মাবলী যারা টেন্ডার পেয়েছে তারাই অনুসরণ করবে অন্যথায় ব্যাবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু টোল আদায়ের ক্ষেত্রে বাড়তি টাকা হাতানোর বিষয়ে কোন সদুত্তর না দিয়ে ইজাড়াদার পরিমল গং রা বলেন আমার শ্যালকও সাংবাদিক ছিলো ভাই আমি তো সাংবাদিকদের আত্মীয়। সরেজমিনসূত্রে, দখিন জনপদের বৃহত্তর ও জনবহুল বরিশাল-ঢাকা নৌ রুট থেকে দৈণিক প্রায় পনেরো সহস্রাধিক যাত্রী আসা-যাওয়া করে এবং প্রতিদিন প্রায় ৬টি তিনতলা লঞ্চ বরিশাল বন্দর থেকে ঢাকা ছেড়ে যায় এবং ঢাকা থেকে এসে কাক ডাকা ভোরে বন্দরে যাত্রী নামিয়ে সন্ধ্যায় ফিরতি যাত্রার জন্য যাত্রী আকর্ষনে অপেক্ষারত থেকে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। পাশাপাশি দিবা সার্ভিসেও রয়েছে যাত্রী সমাগম।