• ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

নগরীর টিয়াখালীতে জমি নিয়ে তুলকালাম কান্ড!

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৪, ২০২৪, ০১:৩০ পূর্বাহ্ণ
নগরীর টিয়াখালীতে জমি নিয়ে তুলকালাম কান্ড!

বিডি ক্রাইম ডেস্ক,বরিশাল॥ বরিশাল মহানগরীর ২৩ নং ওয়ার্ডের টিয়াখালী এলাকার ঘরামি বাড়ির পোল সংলগ্ন একটি জমি নিয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। এ নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ উঠেছে উভয় পক্ষ থেকে। স্থাণীয় ব্যাক্তিদের কাছ থেকে জানা যায়, গত ২৩ নভেম্বর ঘরামি বাড়ির পোল সংলগ্ন সাগরদি মৌজার ১১৫৯ খতিয়ানের এসএ ১৮৩৫, ১৮৩৮ ও ১৮৩৯ নং দাগের যার বর্তমান বিএস ডিপি ৮৫৯ নং খতিয়ানের ৭২৭৫ দাগের মোট ৯৯.৫০ শতাংশ জমি টিনের বেড়া ও সাইনবোর্ড লাগিয়ে জমি দখলে নেন নগরের হরিনাফুলিয়া এলাকার বাসিন্দা আ: মমিন উদ্দীন কালু।

 

পরবর্তীতে খবর পেয়ে ওই জমির ৫৬ বছর যাবৎ ভোগ দখল করা মৃত মালেক হাওলাদারের ছেলে আনোয়ার হোসেন ও তার ভাইয়েরা ওই টিনের বেড়ার এক অংশ এবং সাইনবোর্ড খুলে ফেলে। এ নিয়ে সরজমিনে জমির মালিক দাবী করা মৃত মালেক হাওলাদারের ছেলে আনোয়ার হোসেন ও মৃত ওহাজ উদ্দীন হাওলাদার এর ছেলে আ: মমিন উদ্দীন কালু’র সাথে কথা বলে এ প্রতিবেদক। মৃত মালেক হাওলাদারের ছেলে আনোয়ার হোসেন জানান, ১৯৪৮ সালে সুখদা সুন্দরী ও সারদা সুন্দরী সাগরদী মৌজার এসএ ১১৫৯ খতিয়ানের এসএ ১৮৩৫, ১৮৩৮ ও ১৮৩৯ নং দাগের যার বর্তমান বিএস ডিপি ৮৫৯ নং খতিয়ানের ৭২৭৫ দাগের মোট ৯৯.৫০ শতাংশ জমি জরিনা খাতুন ও নুকল চন্দ্র সরদার এর কাছে বিক্রি করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালে জরিনা খাতুনের একমাত্র ছেলে মোজাম্মেল আলী খান ১৯৬৮ সালে বিক্রি করেন আ: মালেক হাওলাদার, জবান আলী হাওলাদার ও ছফেদ আলী হাওলাদার এর কাছে।

 

 

পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে জবান আলী ও ছফেদ আলী তাদের ক্রয়কৃত জমি বিক্রি করেন মালেক হাওলাদারের স্ত্রী আয়শা বেগম এর কাছে। এরই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘদিন যাবৎ আনোয়ার ও তার পরিবারের অন্যান্যরা জমিটি ভোগ দখল করে আসছে। যে জমিতে তাদের একটি দোকানও রয়েছে। যা বর্তমানে ভাড়া দেয়া।

 

তিনি আরো জানান, এই ৫৬ বছরের মধ্যে কোন সময় আ: মমিন উদ্দীন কালু কখনই ওই জমি দাবী করেননি। কিন্তু হঠাৎ করে তিনি একটি জাল ডিক্রির মাধ্যমে বর্তমানে ওই জমির মালিক দাবী করে টিনের বেড়া ও সাইনবোর্ড লাগিয়ে অবৈধভাবে আমাদের পৈত্রিক জমি দখল নিতে চান। এ বিষয়ে মমিন উদ্দীন কালু’র চাচাতো বোন নীলা জানান, আমার জানামতে মমিন উদ্দীন কালু’র পিতা কখনও ওইখানে জমি ক্রয় করেনি। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তিনি ওই দখল নিতে চান। স্থানীয় আদম আলী খাঁন নামের এক ৮০ বছরের বৃদ্ধা জানান, কালুর বাবা কিভাবে এতো সম্পত্তির মালিক হয়েছে সেইটা আপনারা আগে দেখুন। তারপর, কালু নিজে আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় থাকাকালীন বহু জমি দখল করেছে।

 

আমি অনেক বছর ধরেই দেখছি এই জমিতে আনোয়ার হোসেন এর পরিবার চাষাবাদ এবং দোকান তুলে ভাড়া নিচ্ছেন। এমনকি আমার জানামতে এই জমির খাজনা তারাই বহন করে। অপরদিকে মৃত ওহাজ উদ্দীন হাওলাদার এর ছেলে আ: মমিন উদ্দীন কালু জানান, তার পিতা ১৯৫৭ সালে নিলামের মধ্যে দিয়ে ওই সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। যার সকল কাগজপত্র তার কাছে রয়েছে। জমিটি এতদিন অন্যত্র দখল হয়েছিলো তাই আদালতের রায়ের মাধ্যমে আমি আমার জমি দখল বুঝে নিয়েছি। এছাড়াও আমার নিজের নামে এসএ ও বিএস রেকর্ড রয়েছে এবং সরকারের খাজনা আমি নিয়মিত পরিশোধ করে আসছি। তাই আমার জমি আমি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দখল বুঝে নিয়েছি।

 

 

তবে আনোয়ার হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার জমিতে গিয়ে সাইবোর্ড ও টিনের বেড়ার একটি অংশ কুপিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করে। তবে ঘরামীর পোল এলাকার ব্যবসায়ী মিঠু বলেন, আমি অনেক বছর আগ থেকেই জেনে আসছি ওই জমির একটি বৃহৎ অংশের মালিক মমিন উদ্দীন কালু। তবে বর্তমানে আনোয়ার ও তার ভাইয়েরা জমিটি অবৈধ দখলের পায়তারা করে আসছে। এছাড়াও ছোট বেলা থেকেই ওই জমিতে মমিন উদ্দীন কালু পিতা ওহাজ উদ্দীন হাওলাদারকে চাষবাস করতে দেখে আসছেন ওই এলাকার ৫৫ বছরের অবিনাশ ঘরামী।

 

 

পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, ওহাজ উদ্দিন হাওলাদারের মৃত্যুর পর তার ছেলে ওই জমির ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়েছেন। এখন একটি মহল জমিটি নিয়ে অবৈধ দখলের পায়তারা চালিয়ে আসছে। যার ধারাবাহিকতায় জমিটিতে থাকা সাইনবোর্ড ও টিনের বেড়া রাতের আধারে কুপিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে।

প্রিয় পাঠক, এই জমি বিরোধের বিষয়ে অনুসন্ধানে গিয়ে এই প্রতিবেদক বেশকিছু চানচাল্যকর তথ্য পেয়েছে যা আগামী কয়েকটি ধারাবাহিক পর্বে আপনাদের জন্য তুলে ধরা হবে। বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন পত্রিকার পাতায়।