নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীতে ৪ জন ব্যবসায়ী প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় হরদমে পতিতা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিক ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বীরদর্পে পতিতা বাণিজ্য চলে এমনটাই অভিযোগ সাধারণ মানুষের। পবিত্র মাহে রমজান মাসেও থেমে নেই তাদের অনৈতিক কার্যক্রম। সূত্রমতে, ২০০৫ সালে চন্দ্রমোহন থেকে বারিশালে মাছ বিক্রি করতে আসা মনির নামে এক যুবক নগরীর ৯ নং ওয়ার্ডে এসে অপরাধ জগতের আস্তানা গড়ে তোলে। সেখান থেকেই একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরী করে পতিতা বাণিজ্য শুরু করে মনির ওরফে চন্দ্রমোহন মনির। আর এ সিন্ডিকেটের হাতে একাত্ত্বতা প্রকাশ করে হাত মেলায় নুরুল ইসলাম বাচ্চু, দুলাল, সেলিম, সুমন, চাঁদমারীর টোকাই বাবু, আনোয়ার খান, পলাশপুরের সোহাগ, আলতাফ, হারুন ওরফে তরকারি হারুন, প্যাদা হারুনসহ আরো ৮/১০ জন। এর মধ্যে আর্থিক ভাবে পরিপূর্ণতা ছিলো মনির, সেলিম, বাচ্চু, আজিজ এরা এক এক জনে একাধিক আবাসিক হোটেল ভাড়া নিয়ে মিনি পতিতা পল্লি চালু করে। আর এই কাজে দায়িত্ব পালন করে বেতনভূক্ত হিসেবে হারুন তরকারি হারুন, নুরুল ইসলাম, বক্কার, সুমন, সুজন, দুলাল, আলতাব। পরবর্তীতে আলতাব বেশিদিন চাকুরী করেনি। তিনি ঢাকায় গিয়ে বড় আবাসিক হোটেল ভাড়া নিয়ে অসামাজিক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে নগরীর বিউটি হল গল্লি এলাকায় আবাসিক হোটেল অন্তরা, পায়েল, আল্লারদান, দক্ষিণ চকবাজার এলাকায় হোটেল গালিব এই আবাসিক হোটেল কয়টি চন্দ্রমোহন মনির ভাড়া নিয়ে পতিতা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সেলিম প্রথমে হোটেল চানপুরা ভাড়া নিয়ে মনিরের ছত্রছায়ায় পতিতা ব্যবসা শুরু করে। কয়েক মাস পর চানপুরা হোটেল মালিকের ভাতিজা আনোয়ার খার সাথে সেলিমের দ্বন্দ্ব হয়। তখন সেলিম ঐ হোটেলের উত্তর পাশে আবাসিক হোটেল চিল ভাড়া নিয়ে মনিরের ছত্রছায়ায় পতিতা ব্যবসা পরিচালনা করে। একইভাবে বাচ্চু মিয়া বাউফল এলাকার বাসিন্দা প্রথমে সেখান থেকে বরিশাল নগরীতে একাধিক হোটেলে ম্যানেজার পদে চাকুরী করতেন। সেখান থেকে মনিরের সাথে পরিচয় ঘটে। পরে হোটেল বিসমিল্লা ভাড়া নেয় এবং পোর্ট রোড ব্রিজ সংলগ্ন সী প্যালেস ভাড়া নিয়ে মনিরের সাতে একমত হয়ে পতিতা ব্যবসা করে যাচ্ছে। তবে হোটেল বিসমিল্লাহ ক্লিন রেখেছে ইমেজ ধরে রাখার জন্য। এ ব্যাপারে বাচ্চুর সাথে কথা বলতে চাইলে হোটেলের কর্মচারীরা জানায় তিনি ঢাকায় রয়েছে। একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। অপরদিকে ব্যস্ততম মার্কেট হাজি মোহাম্মদ মহসিন। এই মার্কেটের প্রবেশদ্বারে প্রথমে গড়ে উঠেছে আবাসিক হোটেল মা। সেখানে একাদিক ভাড়াটিয়া মালিক প্রথমে পতিতা ব্যবসা শুরু করে। পরে মার্কেটের ব্যবসায়ী এবং তৎকালীন ওসির নির্দেশে মা হোটেলের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে অবশ্য কিছুদিন ব্যবসা বন্ধ ছিল। বর্তমানে পূর্বের সাইন বোর্ড সরিয়ে ঝিনুক আবাসিক হোটেল সাইন বোর্ড সাটিয়ে পুরোদমে পতিতা বাণিজ্য শুরু করেছে আঃ আজিজ মিয়া। খোঁজনিয়ে জানা যায়, পতিতা ব্যবসা করে মাছ মনির এখন কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। রুপাতলী উকিল বাড়ি সড়কে ৫ তালা বিল্ডিং একাধিক ওয়ার্ডে নামে বেনামে সম্পত্তি, বেশ কয়েকটা মাছের ট্রলার ক্রয় করেছে। যা পরিচালনা করছে মনিরের আপন সহোদর ও বোন জামাইরা। মনিরের প্রতিটি হোটেলে ৮/১০টি বিভিন্ন বয়সি পতিতা রাখে। থানা পুলিশসহ অন্যান্য প্রশাসনের লোক অভিযান শুরু করলে অদৃশ্য কারনে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে মনিরের কানে পৌছে যায়। সাথে সাথে পতিতাদের হোটেল থেকে নামিয়ে পার্কে সিনেমা হলে কিংবা হোটেলের ষ্টাফদের বাসায় আত্মগোপনে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মনিরের একাধিক মোবাইল নম্বরে ফোন করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে হোটেলের কর্মচারীর মালিকের ব্যাপারে বলেন, সাহেব রোজা রাখে, হোটেলে আসেনা। মাঝেমধ্যে আসলেও আবার সাথে সাথে চলে যায়। পতিতা ব্যবসার বিরুদ্ধে সম্প্রতি দেশ জনপদে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় পুলিশ নড়েচড়ে বসেছে। রমজানের মধ্যে প্রতিদিন আবাসিক হোটেল থেকে খদ্দের সহ পতিতা আটক হচ্ছে। এ ব্যাপারে পোর্টরোড মসজিদের মুসুল্লি আলী আকবর বলেন, হোটেল গুলোতে পতিতা ব্যবসা থাকায় ৯ নং ওয়ার্ড ও আশপাশ এলাকায় মাদকের আসর ও বিকিকিনি হচ্ছে। পাশাপাশি উঠতি বয়সি ছেলে-মেয়েদের রয়েছে খারাপির ঝুকির মধ্যে। এ ব্যাপারে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, মাহে রমজান মাসে রমজানের পবিত্রতা বজায় রাখতে পতিতা বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ধারাবহিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং আটকও করা হচ্ছে।