অবশেষে করোনাভাইরাস অ্যান্টিবডি পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি বলেন, অনেক দিনের দাবি ছিল অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দেওয়ার। এখন এটা চালু করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছি। আপনাদের যখন বললাম, তখন থেকেই এটা চালু হয়ে গেল।
দেশে এখন অ্যান্টিবডি পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিট আছে কি না জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনীয় যা কিট লাগে তা আনা হবে। তবে এই মুহূর্তে সরকারের কাছে কিট আছে কি না- তা এখনও জানা নেই। অ্যান্টিবডি টেস্টের কিট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও আমদানি করতে পারে। বিভিন্ন হাসপাতালে বা সংস্থায় নিতে পারে। কাজেই এখানে বাধা নাই। আমাদের হাসপাতালেও ব্যবহার করতে পারে, অন্যান্য জায়গায়ও ব্যবহার হতে পারে।
বাংলাদেশের কোম্পানি গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস গতবছর একটি র্যাপিড টেস্টিং কিট তৈরি করলেও ‘মানোত্তীর্ণ’ হয়নি বলে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে সে সময় নানা বিতর্ক হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট নভেল করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য ব্যবহার করা যাবে না। তবে বাংলাদশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র বোঝার জন্য দেশে অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দেওয়া যায়। এ কারণে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও বিভিন্ন সময় অ্যান্টিবডি পরীক্ষা চালুর পরামর্শ দিয়েছিল।
শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ হলে এর বিরুদ্ধে লড়তে শরীরই এক পর্যায়ে প্রতিরোধী ব্যবস্থা তৈরি করে তৈরি করে নেয়, যাকে বলে অ্যান্টিবডি। আর যে জীবাণুর প্রতিক্রিয়ায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তাকে বলে অ্যান্টিজেন। সেই অ্যান্টিবডির কাছে ভাইরাস পরাজিত হলে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।
কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পাঁচ থেকে ১০ দিন সময় লাগতে পারে। ফলে, অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার আগে র্যাপিড কিটে নমুনা পরীক্ষা করা হলে ফলাফল নেগেটিভ হবে। অর্থাৎ, শরীরে ভাইরাস থাকলেও এই পরীক্ষায় তা ধরা পড়বে না।
আবার কেউ আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠলেও তার রক্তে অ্যান্টিবডি থেকে যাবে। ফলে তার শরীরে ভাইরাস না থাকলেও র্যাপিড কিটের টেস্ট ফলাফল পজিটিভ আসবে।
সে কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরীক্ষার আরটি-পিসিআর বা অ্যান্টিজেন টেস্টের সঙ্গে যেন অ্যান্টিবডি পরীক্ষাকে গুলিয়ে ফেলা না হয়, সে বিষয়ে জোর দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।