অনলাইন ডেস্ক ॥ গোয়েন্দাদের কাছে মুখ খুলতে শুরু করেছেন রিমাণ্ডে থাকা যুবলীগের দুই শীর্ষ নেতা খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া ও জি কে শামীম।বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।জিজ্ঞাসাবাদে ঢাকার ক্রীড়া ক্লাবের আড়ালে ক্যাসিনোর নিয়ন্ত্রণ করতেন এমন প্রায় ৫০ জন গডফাদারের নাম বেরিয়ে এসেছে ।
সেই তথ্যের ভিত্তিতে এখন খোঁজা হচ্ছে ব্রাদার্স ক্লাবের সভাপতি যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, দফতর সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সরোয়ার হোসেন বাবু, সহসভাপতি আনোয়ারুল ইকবাল সান্টুসহ এক ডজন নেতাকে।
মহিউদ্দিন মহির বিরুদ্ধে গণপূর্ত, বিদ্যুৎ ভবন, শিক্ষা ভবন, খাদ্য ভবনসহ বিভিন্ন এলাকায় টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের তথ্য উঠে এসেছে। রেজা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর ঢাকায় একাধিক বাড়ি, ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। ঢাকা-বরিশাল রুটে আলিশান লঞ্চ আছে তার। লঞ্চের নাম রয়েল ক্রুজ-২। অবৈধভাবে কয়েকশ কোটি টাকা বানিয়ে আরও একাধিক লঞ্চের মালিক হয়েছেন তিনি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি আনোয়ার ইকবাল সান্টুকেও খোঁজা হচ্ছে। তার বিত্তবৈভবের অনুসন্ধানে নেমেছেন বিভিন্ন সংস্থার লোকজন । সিটি কর্পোরেশন, গণপূর্ত, ওয়াসা, রাজউক, শিক্ষা ও বিদ্যুৎ ভবনের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে । এসব ভবনে ঠিকাদারি করে কয়েক বছরেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন সান্টু। যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহজাহান ভুঁইয়া তার মূল শক্তি বলে জানা গেছে।জি কে শামীম ও তার একটা সিন্ডিকেট রয়েছে।
গাজী সরোয়ার বাবু যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালের পরিচালক এবং হাসপাতালের ক্রয় কমিটির চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ- হাসপাতালে একটি ডিম ১৪০ টাকা ও কলা ১৭০ টাকা নেয়া হয়। চার বছর ধরে রোগীদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। সদরঘাটের গেটওয়াল মার্কেটের সভাপতিও গাজী সরোয়ার হোসেন বাবু। তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ৪০টি দোকান দখলে নেয়ার অভিযোগ আছে । এছাড়া সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসা, রাজউকসহ বিভিন্ন ভবনের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতনকেও খোঁজা হচ্ছে । প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ভাঙিয়ে বিদ্যুৎ ভবনে বড় বড় কাজ ভাগিয়ে নিয়েছেন তিনি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত এই রতন সিটি কর্পোরেশনের কাজও নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
এছাড়া ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, আরামবাগ ও দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাবে ক্যাসিনো চালানোর জন্য ইতিমধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদের নাম প্রকাশ হয়েছে।এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।