• ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ঝালকাঠিতে আদালতের বারান্দায় নৃশংস হামলা, বিচার চেয়ে কাঁদলো ভুক্তভোগী পরিবার

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫, ১৯:৩৩ অপরাহ্ণ
ঝালকাঠিতে আদালতের বারান্দায় নৃশংস হামলা, বিচার চেয়ে কাঁদলো ভুক্তভোগী পরিবার

বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল:ঝালকাঠির নলছিটিতে জমি বিরোধের জেরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনায় বিচার চাইতে গিয়ে আদালতের বারান্দায় নৃশংস হামলার শিকার হয়েছে একটি পরিবার। আদালতের বরান্দায় কুপিয়ে জখম করা হয় পরিবারের একজন সদস্যকে।

এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। সোমবার দুপুর দেড়টায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিবারের সদস্য মিরাজ মাঝি জানান, তাদের পরিবারের সাথে প্রতিপক্ষেন দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা একাধিকবার তাদের ঘরে আগুন দেয়, ভাঙচুর চালায়, মালামাল লুটপাট করে এবং ফলদ গাছপালা কেটে নিয়ে যায়। এমনকি ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক কর্তৃক অসহায় পরিবারের জন্য নির্মিত একটি ঘরও হামলাকারীরা ভেঙে লুটপাট করে।

তিনি বলেন, আসামিরা ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের জমি লিখে নেয়ার পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা দাবি করে আসছে। এ দাবি না মানায় প্রতিপক্ষরা একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। ইতিমধ্যে আমাদের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার একটি প্রমাণের অভাবে খারিজ হয়ে গেছে। এমনকি মিথ্যা অভিযোগে একটি হত্যা মামলাও দায়ের করে আমাদের পরিবারকে চাপে রাখার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

সবশেষ হামলার ঘটনাটি ঘটেছে গত ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঝালকাঠি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪র্থ তলায়। এসময় মিরাজ মাঝি ও তার পরিবারের সদস্যরা আদালতের ৪০৪ নম্বর কক্ষের সামনে অবস্থান করছিলেন। এসময় পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ রফিকুল মাঝি (২৩), জহিরুল মাঝি (২৫), মনি আক্তার (৩৫) ও পপি আক্তার (২৭) হঠাৎ আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে।

এসময় ১নম্বর অভিযুক্ত রফিকুল মাঝি তার পকেট থেকে চাকু বের করে জসিম মাঝিকে আঘাত করে। এতে জসিমের নাকে গুরুতর জখম হয়। প্রথমে তাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, হামলার সময় আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত লোকজন চিৎকার শুনে এগিয়ে আসেন এবং পুলিশের সহায়তায় হামলাকারীদের আটক করা হয়। তবে আদালতের বাহিরে আবারও হামলার উদ্দেশ্যে এমদাদুল মাঝি ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। পরবর্তীতে পুলিশ পাহারায় ভুক্তভোগী পরিবার আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।

মিরাজ মাঝি অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা এলাকায় প্রভাবশালী এবং বর্তমান রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। ফলে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন –“আমরা অসহায়, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। জীবনের ভয়ে নিজ বাড়িতে পর্যন্ত থাকতে পারছি না। আমাদের ওপর সংঘটিত নৃশংস হামলার যথাযথ বিচার চাই এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”