filter: 0; fileterIntensity: 0.0; filterMask: 0; captureOrientation: 0;
algolist: 0;
multi-frame: 1;
brp_mask:0;
brp_del_th:null;
brp_del_sen:null;
delta:null;
module: photo;hw-remosaic: false;touch: (-1.0, -1.0);sceneMode: 8;cct_value: 0;AI_Scene: (-1, -1);aec_lux: 0.0;aec_lux_index: 0;albedo: ;confidence: ;motionLevel: -1;weatherinfo: weather?Cloudy, icon:1, weatherInfo:102;temperature: 42;
জাকির হোসেন, আমতলী॥ পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সাত দিনের ভারী বর্ষনে জলাবদ্ধতায় নাকাল আমতলী পৌরবাসী। সবুজবাগ, ক্ষোন্তাকাটা, পল্লবী ও একেস্কুল সংলগ্ন এলাকায় এ অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারন করেছে।
উল্লেক্ষিত তিনটি ওয়ার্ডের হাজার হাজার বাসিন্দারা এখন পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে ঘরবন্ধী অবস্থায় দিনযাপন করছেন। ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কারনে অনেকের রান্না ঘরে পানি প্রবেশ করায় হোটেল থেকে খাবার এনেও ক্ষেতে হচ্ছে।
আমতলী পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে যাত্রা শুরু হয়। সময়ের পরিবর্তনে ২০০৪ সালে দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ২০১২ সালের ডিসেম্বও মাসে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। ৩০ হাজার লোকের বসবাসের প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও এটি এখন মানুষের চরম ভোগান্তির পৌরসভা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
পৌরসভার নয়টি ওয়র্ডের অধিকাংশ এলাকায় পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা এবং বেপরোয়া ভাবে ডোবা নালা ভরাট করে ঘরবাড়ি নির্মান করায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে বলে মত পৌরবাসী। সবচেয়ে বেশী ঘনবসতি পূর্ন ওয়ার্ড হচ্ছে পাঁচ নম্বর সবুজবাগ ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের পল্লবী ও খোন্তাকাটা এলাকা।
এই এলাকার অধিকাংশ ঘরবাড়ির সামনে হাটু কিংবা কোমর সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক পরিবার নিজের হাটা এবং পানির হাত থেকে রক্ষার জন্য বালুর বস্তাদিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না।
বালুর বস্তার উপরে এখন এক থেকে দেড়ফুট পানি জমে গেছে। মঙ্গলবার সকালে আমতলী পৌরসভার ক্ষোন্তাকাটা, সবুজবাগ ও একেস্কুল সংলাগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জলাবদ্ধতায় তলিয়ে গেছে এলাকার পর এলাকা।
অনেকের বাসা বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় তাদের চলচল প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারন করেছে পৌরষবার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সবুজবাগ এলাকায়।
গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সাত দিন ধরে টানা ভারী বর্ষনে সবুজ বাগ লেক প্লাবিত হয়ে পানি এখন ঢুকে পরেছে বাসাবাড়িতে। ঘরের সামনে কোমর সমান পানি জমে যাওয়ায় ঘর থেকে বের হতে পারছেন না বাসিন্দারা।
কয়েকদিন ধরে পানির কারনে স্কুলে যেতে পারছে না স্কুল গামী শিক্ষার্থীরা। স্কুল শিক্ষার্থী আফরিন বেগম জানান, পানির কারনে ঘর থেকে বের হতে পারছি না।
এমনকি কলেজেও যেতে পারিছি না। সবুজবাগের বাসিন্দা গৃহবধূ রেবেকা সুলতানা বলেন, ভাই আমরা পানিতে বন্ধী হইয়া দুই দিন ধরে ঘর থেকে বের হতে পারছিনা।
ঘরের সমনে কোমড় সমান পানি জমে আছে। পানির ভয়ে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে পারছি না। একই এলাকার আশ্রাফুল হোসেন বলেন, মোরা এহন ঘর থেকে বাইর অইতে পারি না।
খালি পানি আর পানি। পানির লইগ্যা দুই দিন ধইর্যা বাজারে যাইতে পারি নাই। ঘরে যা আছিল হেই বাজার দিয়া খাইছি।
একই এলাকার করিমন নামে এক গৃহবধূ বলেন, ভাই আমনে ঘরে আইয়া দ্যাহেন মোর ঘুমানের ঘর ওসসা (রান্না ঘর) সব জায়গায় পানি আর পানি।
কয়েক দিন ধইর্যা খাডের উপরে চুলা উডাইয়া রানলেও দুই দিন ধইর্যা পানি এত বাড়ছে এহন রান্দাও বন্ধ। নিরুপায় অইয়া হেডেলে গোনে ভাত তরকারী আইন্যা গুরাগারা লইয়া খাইছি।
দুই নম্বর ওয়ার্ডের বকুলনেছা কলেজ, পল্লবী ও খোন্তাকটার অংশে কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধায় বাসা বাড়িতে পানি পবেশ করেছে।
ক্ষোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা লামিয়া নামের এক গৃহবধূ বলেন, ভাই পানি জমে থাকায় ঘর থেকে বের হতে পারছি না। স্বাভাবিক ভাবে কোন কাজ কর্মসহ এক সপ্তাহ ধরে ঘর বন্ধী অবস্থায় কাটাচ্ছি।
পল্লবী এলাকার বাসিন্দা মো. লিটন হাওলাদার বলেন, ভাই পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা না থাকায় এখন ঘর বাড়িতে থাকা দায় হয়ে পরেছে।
বাড়ির আশে পাশে যে দিকে তাকাই শুধু পানি আর পানি। দুই নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত বকুল নেছা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌসি আকতার জানু বলেন, জলাবদ্ধতায় কলেজের আঙ্গিনাসহ সব তলিয়ে গেছে।
নিজেদেও উদ্যোগে একটি প্লাস্টিকের পাইপ বসিয়ে পানি নামাতে হয়েছে। দুই নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. মুছা মোল্লা বলেন, একেস্কুল সড়কের বকুল নেছা কলেজ পল্লবী, ক্ষোন্তাকাটাসহ অধিকাংশ এলাকায় ড্রেন না থাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
এ অবস্থা থেকে আমরা বাঁচতে চাই। তিন নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা হলদিয়া ইউপির সদস্য সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, ঘরের সামনে হাটু সমান পানি।
পানির কারনে এখন ঘর থেকে বের হতে পারছি না। প্রথমে পানি জমার পর বালুর বস্তা দিয়ে হাটা চলা করেছি। এখন পানি বাড়ায় বস্তায়ও কাজ হচ্ছে না। বস্তার উপওে এখন দেড় থেকে দুই ফুট পানি জমে আছে।
তিনি াারো বলেন, এই এলাকায় কোন ড্রেন না থাকায় জলাবদ্ধতায় এই হাল হয়েছে। আমতলী মফিজ উদ্দিন বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমএ হান্নান বলেন, জলাবদ্ধতায় আমার স্কুলের মাঠ এখন ২-৩ ফুট পানির নীচে তলিয়ে রয়েছে। মাঠে পানি থাকায় ছেলে মেয়েরা খেলা ধূলা করতে পারছে না।
পৌরসভার নাগরিক সেবা নিয়ে কাজ করে বেসরকারী সংগঠন এনএসএস ( নজরুল স্মৃতি সংসদ) সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক শাহাবুদ্দিন পাননা বলেন, পৌরসভা হওয়ায় জমির মূল্য অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা ডোবা নালা ভরাট করে ঘরবাড়ি তোলায় এবং জমি বিক্রি করা প্রবনতার কারনে এ অবস্থা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জহিরুল ইসলাম মামুন বলেন, পৌরসভায় যে ভাবে ড্রেন থাকা দরকার তা না থাকায় এই অবস্থা হয়েছে।
এ অবস্থা নিরশনের জন্য তিনি বর্তমান পৌরপ্রশাকের নিকট সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালুর জন্য দাবী জানান। আমতলী পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, সঠিক পরিকল্পনা করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করলে এ অবস্থা হত না।
বর্তমানে জলাবদ্ধতা নিরশনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি নতুন ড্রেনেজ ব্যবস্থা স্থাপন করা গেলে পৌরবাসীর ভোগান্তি কমে আসবে।