এস.এন পলাশ ॥ বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় এক ধরনের স্থবিরতা কাজ করছে সংগঠনটির তৃনমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে। যে কারনে বেশ নাখোশ ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবী নতুন নেতৃত্ব আসলে প্রানচাঞ্চল্যতা আসে। কিন্তু এখানে এর ব্যতিক্রম। কয়েকজন পদবিহীন নেতার নেতৃত্বে চলছে এখন ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটির বরিশাল মহানগর ও জেলা শাখা। এই দুই ইউনিট নিয়ে এখন বেশী তোড়জোড় চালাচ্ছেন বরিশাল ছাত্রলীগের চার ছাত্রলীগ নেতা। ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই চার নেতাই এখন বরিশাল জুড়ে তাদের নেতৃত্ব বিরাজ করার চেষ্টায় রয়েছে। অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ছাত্রলীগ নেতা। জানা গেছে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম ও ছাত্রলীগ নেতা রইজ আহম্মেদ মান্না মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সম্পাদক পদের জন্য বেশ দৌড়ঝাপ করছেন। এই দুইজনের মধ্যে অবশ্য আতিকুল্লাহ মুনিম বিএম কলেজ কেন্দ্রীক রাজনীতিতে বেশী তৎপর। বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে তাকে অনেকেই বাকসু’র অঘোষিত ভিপি বলে সম্বোধন করেন। আর রইজ আহম্মেদ মান্নার কোন পদ না থাকলেও বরিশাল ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রমে তাকেই পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন একাধিক সূত্র। এছাড়া মহানগর ছাত্রলীগের আরেক উল্লেখযোগ্য নেতা গোলাম মোস্তফা অনিক (অনিক সেরনিয়াবাত)। তবে তিনিও বেশ সক্রিয় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে এবং বিগত কর্মকান্ডের কারনে তাকে নিয়েও বেশ আলোচনা রয়েছে। কেননা তিনি যে সময় থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সেই সময় বর্তমান অনেক ছাত্রলীগ নেতা রাজনীতির মাঠেই আসেনি। এমনটাই দাবী ছাত্রলীগের একটি অংশের। অপরদিকে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত ও সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব হোসেন খান দৌড়ঝাপ করছেন জেলা ছাত্রলীগের কমিটির জন্য। এদের মধ্যে বেশী আলোচিত রাজীব হোসেন খান। যার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করিম রেজা হত্যার ঘটনায় ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছিলো। তবে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন থাকায় তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে না পরায় সেই থেকেই আলোচিত হয়ে ওঠে তরুন এই ছাত্রলীগ নেতা। তৃনমূল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দাবী, এই চার নেতার হাতেই উঠতে পারে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব। তবে এই নিয়ে নাখোশ রয়েছেন অনেকেই। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের একটি অনুষ্ঠানের বাইরে ছাত্রলীগের দুই গ্র“পের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে রইজ আহম্মেদ মান্না ও রাজীব হোসেন খান তাদের প্রতিপক্ষ ওবায়দুল সেরনিয়াবাত এবং সাইফুল সেরনিয়াবাতের উপর হামলা চালায়। এই ঘটনার পর পুনরায় আলোচনায় আসে ওই দুই নেতা। পরে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এক বিবৃতিতে ওই ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতের বিষয়টি জানালে ছাত্রলীগের মধ্যে আভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়টি চেপে যায়। বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ভাই থাকতে বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের মধ্যে কোনো কোন্দলের সৃষ্টি হবে না। যদি হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও কোনো কিছু ভাববেন না আমাদের এই নেতা। তবে এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন দীর্ঘদিন যাবত কমিটি এলোমেলো থাকলেও দলের কার্যক্রমে পিছিয়ে নেই। তিনি আরো বলেন আমরা কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি দিবো, কাউন্সিলে যারা নির্বাচিত হবে তাদেরকে আমরা যোগ্য মনে করবো। এদিকে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম দেশজনপদকে বলেন, ‘আমরা ছাত্রলীগের জন্য কাজ করছি। আমাদের নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, যেটা ভালো মনে করেন সেটাই করবেন। এছাড়া আমরা চার ছাত্রলীগ নেতার এক্টিভিটি ভালো থাকায় আমাদের নিয়ে আলোচনা রয়েছে। তাছাড়া অন্য কাউকে তো ছাত্রলীগ করতে বারন করা হয়নি। ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত।’