• ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৩শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

চরফ্যাশন হাসপাতাল চত্বরে মাইকিং শব্দের যন্ত্রণা

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত অক্টোবর ২৮, ২০২৪, ১৭:৫৭ অপরাহ্ণ
চরফ্যাশন হাসপাতাল চত্বরে মাইকিং শব্দের যন্ত্রণা

আমির হোসেন চরফ্যাশন॥ চরফ্যাশনে হাসপাতাল চত্বর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সড়কে মাইকিং শব্দ দূষণে বিপাকে রোগী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। শব্দের যন্ত্রণায় এখন কার কথা কে শুনে? জানা যায়, শব্দ দূষণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত।

এগুলোর ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের নেই কোন নজরদারি। প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতায় হাসপাতালে রোগী আনতে মাইকিং এর শব্দদূষণের কারনে ভর্তিরত রোগীরা অস্বস্তিতে।

শব্দ দূষণে সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সরকারি ও প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারিয়ান ও জটিল অপারেশন রোগীরা। শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠান সড়ক গুলোতে এই সকল মাইকিং চলছে ঘুরে ঘুরে।

বিশেষ করে শুক্রবার বন্ধেরদিন ঢাকা বরিশাল-ঢাকা থেকে আগত নামিদামি ডাক্তারদের দেখাতে সারাদিন অর্ধশতাধিক মাইক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সড়ক, সরকারি হাসপাতাল, শরিফ পাড়া সদর রোডসহ পাড়া মহল্লায় মাইকিং করে শব্দ দূষণে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

আগেরদিন থেকে শহরজুড়ে প্রচার প্রচারণা চলতে থাকে। এছাড়াও গ্রামের সাধারণ রোগীদের আকৃষ্ট করতে সাপ্তাহ জুড়ে মাইকিং চলে অর্ধশতাধিক প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর।

সাধারণ মানুষের কাছে মাইকের শব্দ দূষণ যন্ত্রণা দায়ক। এই দূষণের সাথে জড়িত প্রাইভেট হাসপাতালের অসাধু মালিক চক্র। শরিফ পাড়া এলাকার ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী কামাল হোসেন মিয়াজি বলেন, প্রতিনিয়ত মাইকিং শব্দের কারনে ব্যবসা পরিচালনায় ব্যঘাত ঘটছে।

শব্দ দূষণের প্রচলিত আইন থাকলেও তারা মানছেনা। চরফ্যাশন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মাইকের আওয়াজে লেখাপড়ায় অমনোযোগী।

তিনি মনে করেন শব্দ দূষণের কারনে কোমলমতি শিশুদের স্নায়ুর উপর ক্ষতিকর প্রভাবে মস্তিস্কের ক্ষতি হচ্ছে। চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শোভন বসাক বলেন,শব্দদূষণের কারণে দুশ্চিন্তা, উগ্রতা, উচ্চ রক্তচাপ, টিন্নিটাস, শ্রবনশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাতসহ অন্যান্য ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে।

এছাড়াও, অন্যান্য শারীরিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে স্মরণশক্তি হ্রাস, মানসিক অবসাদ ইত্যাদি হতে পারে। প্রতিনিয়ত শব্দ দূষণে শিশু ও বয়স্করা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ নয়েজ কন্ট্রোলের মতে, শব্দ দূষণের কারনে হাইপার টেনশন, আলসার, হৃদরোগ, মাথাব্যথা বা স্নাযুর সমস্যা হতে পারে।

এমনকি অতিরিক্ত শব্দের পরিবেশে থাকলে শিশুর জন্মগত ক্রুটির তৈরি হতে পারে। চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরীন হক বলেন, একজন গণমাধ্যমকর্মীর কাছ থেকে জানতে পেয়েছি চরফ্যাশনে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীদের আকৃস্ট করতে শহরজুড়ে মাইকিং এ রীতিমত অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ।

কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরদ্ধে শব্দ দূষণর অভিযোগ প্রমাণিত হলে এক মাসের কারান্ড পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডিত প্রদানের বিধান রয়েছে।

দ্বিতীয়বার কেউ একই অপরাধ করলে ছয় মাসের কারাদন্ড অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডিত দেয়ার বিধান রয়েছে।

শব্দ দূষণের কারনে ভুক্তভোগী কোন নাগরিক অভিযোগ করলে প্রচলিত আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।