বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল॥ চরফ্যাশনে আট বছর বয়সী শিশু কন্যাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মো. কামাল নামের এক হোটেল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
গত ৩১ আগষ্ট শিশুর ভাড়াটিয়া বাসায় ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় প্রভাবশালী বাড়ির মালিক পল্লি চিকিৎসক হারুনের ৫ হাজার টাকা দিয়ে ধামাচাপার চেষ্টায় মামলা করতে ব্যর্থ হন ভিক্টিম শিশুর পরিবার ।
পরে বিষয়টি স্থানীয় ভাবে জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার রাতে ওই ভিক্টিম শিশুর মা থানার আশ্রয় নিলেও অজ্ঞাত কারনে অভিযোগ প্রত্যাক্ষাণ করে ফিরে আসেন।
পরে স্থানীয় মাতাব্বরদের সমোঝতায় ভিক্টিম পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা তুলে দেন অভিযুক্তের পরিবার।
তবে সুশিল মহলের ভাষ্য ওই ভিক্টিম নারী স্থানীয় বাসিন্ধা না হওয়ার কারনে রাজনৈতিক কুটকৌশল ও থানা পুলিশের কারসাজিতে শিশু ধষর্ণ চেষ্টার মতো জগণ্য ঘটনার বিচার পাননি ভিক্টিম শিশু ও তার পরিবার।
ভিক্টিম পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনার ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। এতে সমাজের অবক্ষয় ও অপরাধের প্রবনাত বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভিক্টিম শিশু কন্যা জানান, প্রতিদিনের মতো মা মালামাল বিক্রির জন্য বাসা থেকে চলে যান। শিশু একাই ঘরে ছিলেন। দুপুরে সে গোসল করতে গোসলখানায় গেলে অভিযুক্ত হোটেল মালিক কালাম কাকা আমাদের ঘরে আসেন। এবং আমি গোসলখানা থেকে বের হলে আমাকে ঝাঁপটে ধরে খারাপ কাজ করতে চেষ্টা করেন।
আমি চিৎকার দেয়ার চেষ্টা করলে আমার মুখে চেপে ধরে টাকা দেয়ার লোভ দেখান। পরে তার জবরদস্তীতে আমি চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে কালাম আমাকে ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে মা বাসায় ফিরে এলে বিষয়টি আমি তাকে জানাই।
ভিক্টিম শিশুর মা জানান, তিনি লক্ষিপুর জেলার রায়পুর থানার বাসিন্দা। চরফ্যাশন পৌসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পল্লি চিকিৎসক মো. হারুনের বাসায় ভাড়া থেকে তিনি ফেরি করে গ্রামগঞ্জে কাচের মালামাল বিক্রি করেন। তার শিশু কন্যা একাই ঘরে থাকতেন।
চরফ্যাশন থানা রোডের হোটেল মালিক কালামের দোকানে ভাত খাওয়ার সুবাধে তার সাথে পরিচয় হয়। ওই পরিচয়ের সুত্রে ধরে তিনি তার ভাড়া বাসায় আসা যাওয়া করতেন।
গত ৩১ আগষ্ট ঘটনার দিন তিনি মামলামাল বিক্রির জন্য গ্রামে চলে যান। এবং তার শিশু কন্যা একাই বাসায় ছিলেন। তিনি বাসায় না থাকার সুযোগে ওইদিন দুপুরে হোটেল মালিক কালাম তার বাসায় যান। এবং তার শিশু কন্যাকে গোসলখানায় গোসলরত অবস্থায় ঝাঁপটে ধরে ধর্ষনের চেষ্টা করেন।
বিকালে তিনি বাড়ি ফিরে এলে শিশু কন্যা তাকে বিষয়টি জানান। পরে তিনি বিষয়টি স্থানীয়দের জানালে বাড়ির মালিক পল্লি চিকিৎসক হারুন বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য তাকে ৫ হাজার টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেন।
এতে আমি রাজি না হওয়ার পল্লি চিকিৎসক হারুন আমার শিশু কন্যাকে ছাদের চিলে কোঠায় অবরুদ্ধ করে রাখেন।
পরে বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সহযোগিতায় আমি থানা পুলিশের শরনাপন্ন হলেও নানা জটিলতার কারনে আমি মামলা করিনি।
মামলা না করায় পুলিশ একটি অনাপত্তি রাখেন। পরে রাতে স্থানীয় মাতাব্বরের মধ্যস্থতায় শালিশ হয় এবং অভিযুক্ত কালামের ছেলে আমাকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
অভিযুক্ত হোটেল ব্যবসায়ী মো. কালাম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ওই নারী আমার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ালে আমি বিষয়টি ওই নারীর ঘর মালিককে জানাই। পরে সে আমাকে মামলার ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। আমার বিরুদ্ধে ওই নারীর দেয়া অভিযোগ সঠিক নয়।
সমোঝতাকারী পল্লি চিকিৎসক হারুন জানান, এঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। অহেতুক আমাকে জাড়ানো হচ্ছে।
চরফ্যাশন থানার জেষ্ঠ উপ-পরিদর্শক হারুন অর রশিদ জানান, ওই নারী থানায় আসালে তাকে মামলা করার জন্য বলা হলেও তিনি মামলা করেননি। পরে তার কাছ থেকে একটি লিখিত অনাপত্তি রেখে তাকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে। পরে কি হয়েছে তা আমার জানা নাই।