মনপুরা প্রতিনিধি ॥ ভোলার মনপুরা উপজেলায় ঘূর্ণীঝড়ের তান্ডভে লন্ডভন্ড হয়ে যায় পুরো উপকূল। ঘূর্ণীঝড় থেমে যাওয়ার পর বিপর্যস্ত মনপুরায় ভেসে উঠেছে ক্ষয়ক্ষতি চিত্র। ঘর-বাড়ি, বেড়ীবাঁধ, সবজি ক্ষেত ও পাকা-কাঁচা রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এছাড়াও শত শত পুকুর ও ঘেরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। এদিকে গত তিন ধরে হাজার হাজার মানুষ ঘর বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। ওই সমস্ত আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ মুড়ি ও বিস্কুট খেয়ে কোনমতে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
তবে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে ক্ষতির চিত্র তুলে ধরা হয় তা মানতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দাসহ জনপ্রতিনিধিরা। তারা জানান, ঘূর্ণীঝড়ে আরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রকৃত চিত্র প্রশাসন তুলে
আনতে পারেনি।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে দুই হাজার পাঁচশত ঘর-বাড়ি ক্ষতি হয়। এর মধ্যে ৫ শত সম্পূর্ণ ও ২ হাজার ঘর-বাড়ি ক্ষতি হয়েছে। তবে জনপ্রতিনিধিরা জানান ৫ হাজারের ওপরে ঘর-বাড়ি ক্ষতি হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১২ টি পয়েন্টে ১৬৫ মিটার বেড়ীবাঁধ সম্পূর্ন ভেঙ্গে গেছে। এছাড়াও ওই সমস্ত ইউনিয়নে ৩২০০ মিটার বেড়ীবাঁধের ক্ষতি হয়। এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৪ কিলোমিটার পাকা সড়ক ক্ষতি হয়। কাঁচা রাস্তা ৬.৮ কিলোমিটার ক্ষতি
হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় হাজিরহাট ও বেড়ীবাঁধহীন কলাতলী ইউনিয়নে।
এছাড়া কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১ শত হেক্টর সবজির ক্ষেত জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতি হয়। এই ব্যাপারে হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন হাওলাদার ও ৪ নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অলি উল্লা কাজল জানান, বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে পুরো উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

৫ হাজারের অধিক ঘরবাড়ি ক্ষতি হয়। এই ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডিভিশন-২ এর নির্বাহী
প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, ক্ষতিগ্রস্থ বেড়ীবাঁধ মেরামতের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।
এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জহিরুল ইসলাম জানান, পুরা উপজেলার ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা করে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সরকারিভাবে সহযোগিতা আসলে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা অনুযায়ী দেওয়া হবে।