• ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

গৌরনদীতে রাস্তার পাশের গাছ কেটে নিচ্ছেন মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান

admin
প্রকাশিত জুলাই ৩, ২০১৯, ১৮:১৮ অপরাহ্ণ
গৌরনদীতে রাস্তার পাশের গাছ কেটে নিচ্ছেন মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান

গৌরনদী প্রতিনিধি

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া থেকে ছয়গ্রাম পর্যন্ত এলজিইডি নির্মিত গ্রামীন রাস্তার দু’পাশে জন্মানো ছোট বড় রেন্ট্রি, মেহগিনি চাম্বলসহ নানা প্রজাতির বনজ গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন উপজেলার মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু। সরকারের কোন দপ্তরের কর্মকর্তাগন এতে বাঁধা দিচ্ছেন না। এমনকি গাছগুলোর মালিকানাও দাবি করছেন না সরকারের কোন দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান। ফলে এ নিয়ে উপজেলাবাসীর মনে নানা ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।

খোজ নিয়ে জানাগেছে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে জাতীয় সংসদের তৎকালিন চীফ হুইপ আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র নির্দেশে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ মাহিলাড়া টু পয়সার হাট ভায়া ছয়গ্রাম এর এলজিইডি নির্মিত এ গ্রামীন রাস্তাটিকে অধিগ্রহন করে উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়। এর মাঝে ১৯৯৯ সালের ২০এপ্রিল তৎকালীন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে ওই রাস্তার মাহিলাড়া টু ছয়গ্রাম অংশের দু’পাশের ৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৫০-৫০ ভাগ মালিকানা চুক্তিতে সামাজিক বনায়নের লক্ষে বনজ গাছের চারা রোপনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এরপর তিনি ওই বছরের ১৫ জুনের মধ্যে ওই রাস্তার দু’পাশে রেন্ট্রি বেহগিনি, চাম্বল, শিশু বাবলাসহ বিভিন্ন প্রজতির ১৮১০টি বনজ গাছের চারা রোপন করেন। এরই মধ্যে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাস্তাটি অধিগ্রহন না করে সেটি আবার এলজিইডিকে ফিরিয়ে দেন। এর ফাঁকে গাছগুলো বড় হতে থাকে। গত দু’তিন সপ্তাহ পূর্বে বড় হওয়া গাছগুলোর মধ্য থেকে ৬/৭টি বড় গাছ ও ১৫/২০টি মাঝাড়ি গাছ মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু কেটে নেন।

কোন প্রকার নিলাম বা টেন্ডার ছাড়া সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে ৫০-৫০ভাগ মালিকানার এ গাছ চেয়ারম্যান একা কেন কেটে নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে ওই রাস্তার মাহিলাড়া টু ছয়গ্রাম অংশের দু’পাশের ৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৫০-৫০ ভাগ মালিকানা চুক্তিতে সামাজিক বনায়নের লক্ষে বনজ গাছের চারা রোপনের চুক্তি বলে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ওই রাস্তার পাশের ৬/৭টি গাছ কাটা হয়েছে। সেখানে আমার, বা ইউনিয়ন পরিষদের কি করার আছে। গাছগুলো আমি লাগালেও রাস্তার ওই জমিতো এখনো সরকারের না।

সরকারের কোন দপ্তর বা বিভাগ রাস্তাটির ওই জমিতো অধিগ্রহন করেনি। এলজিইডি রাস্তাটি উন্নয়ন করলেও যার যার জমির অংশের ওপর দিয়ে রাস্তা গেছে ভূমি জরিপের রেকর্ডে তার তার নামেই রাস্তার জমির অংশের মালিকানার রেকর্ড রয়েছে। সুতারং সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে চুক্তিতে ওই গাছ আমি লাগালেও আমি এবং সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বা এলজিইডি, অথবা সরকারের কোন দপ্তর ওই গাছের মালিকানা দাবি করতে পারছিনা।

গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ অহিদুর রহমান জানান, রাস্তাটি এলজিইডির কিন্তু গাছ কার তা আমি বলতে পারছিনা। তবে এটুকু জানি এলজিইডি’র রাস্তার পাশের থাকা সামাজিক বনায়নের গাছ কাটতে হলে উপজেলা পরিষদের সভায় অনুমোদন নিয়ে টেন্ডার বা নিলামের মাধ্যমে গাছ কাটতে হবে। কিন্তু মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু কাওকে কিছু না জানিয়ে গাছ কেটে নিয়েছেন।