• ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

গৃহবধূর লাশ উদ্ধার রহস্য উদঘাটন দলবদ্ধ ধর্ষণ শেষে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখে খালে

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত এপ্রিল ৮, ২০২৪, ১৪:৪২ অপরাহ্ণ
গৃহবধূর লাশ  উদ্ধার রহস্য উদঘাটন  দলবদ্ধ ধর্ষণ শেষে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখে  খালে

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : আমতলী সদর ইউনিয়নের উত্তর টিয়াখালী গ্রামে নিখোঁজের ২২ঘন্টা পর খাল থেকে হোসনেয়ারা (৪০) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিহত হোসনেয়ারার ভগ্নিপতির মতলেব সিকদারের নেতৃত্বে ৫ জন দলবদ্ধ ধর্ষণ শেষে তাকে খুন করে লাশ খালে ফেলে রাখে বলে দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্ধী দিয়েছে সন্দেহভাজন আসামী মতলেব সিকদার। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী অনুয়ায়ী আরো ৪ জনকে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

আমতলী থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার সময় উত্তর টিয়াখালী গ্রামের হারুন গাজীর স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ২২ ঘন্টা পর বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার সময় ওই গ্রামের কাটাখালী ভাড়ানীর খাল থেকে গৃহবধূ হোসনেয়ারা বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় ওই দিন নিহত হোসনেয়ারা বেগমের ভগ্নিপতি মতলেব সিকদারকে সন্দেহ ভাজন আসামী হিসেবে আটক করে জিঞ্জাসাবাদ করে পুলিশ। সে হোসনেয়ারা বেগমকে দর্ষণ শেষে হত্যার কথা স্বীকার করে। তার এ স্বীকারোক্তির পর পুলিশ ৫ এপ্রিল শুক্রবার তাকে আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আরিফুর রহমানের আদালতে সোপর্দ করে।

সেখানে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী প্রদান করে। জবানবন্ধীতে সে জানায় টিয়াখালী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস গাজী, মো. ফারুক মৃধা, মো. আবুল হোসেন ও ছোট নীলগঞ্জ গ্রামের শহীদ হাওলাদার মিলে অপহরনের পর মঙ্গলবার রাতে ওই গ্রামের ছোবহান গাজীর বাড়ির সামনে একটি ঝোপের মধ্যে নিয়ে হোসনেয়ারাকে দলবদ্ধ শর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে তাকে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে রাখে। হেসনেয়ারা বেগম হত্যার এঘটনায় গত ৪ এপ্রিল তার ভাই মো. হালিম মৃধা বাদী হয়ে আমতলী থানায় অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ তদন্তে ধর্ষণ শেষে হোসনেয়ারাকে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে রাখার রহস্য উদঘাটনের পর এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়।

নিহত হোসনেয়ারা বেগমের স্বামী হারুন গাজী জানান, তার ভায়রা মতলেব সিকদার প্রায়ই তার স্ত্রী হোসেনেয়ারাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে মানষিক নির্যাতন করত। নিহত হোসনেয়ারা বেগমের মা জাম্বিলা খাতুন বলেন, মোর মাইয়াডায় কি দোষ হরছিল। ওরে এরহম মাইর‌্যা হালাইছে। আমি এইয়ার বিচার চাই। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমতলী থানার এসআই মো. আশ্রাফ আলী জানান, নিহত হোসনেয়ারার শরীরে, গলার নীচে এবং জিহ্বায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। তিনি আরো বলেন, হোসনেয়ারা বেগমের লাশ উদ্ধারের পর তার ভগ্নিপতি মতলেব সিকদারকে সন্দেহ ভাজন হিসেবে আটক করে জিঞ্জাসাবাদ করি। সে আমতলী উপজেলা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকের নিকট ৫জনে মিলে ধর্ষণ শেষে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্ধী দিয়েছে। আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাখয়াত হোসেন তপু বলেন, গৃহবধূ হোসনেয়ারাকে ধর্ষণ শেষে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

এর সাথে জড়িত ৫জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এর মূল হোত মতলেব সিকদার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকের নিকট ১৬৪ ধারায় ধর্ষণ শেষে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্ধী দিয়েছে। এঘটনার সাথে আরো কেউ জড়িত থাকলে তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।