কলাপাড়া প্রতিনিধি ॥ দেশব্যাপী চলছে কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় ধাপ। মানুষের মাঝে বিরাজ করছে অজানা আতঙ্ক। এ বছরে সাগরকন্যা খ্যাত পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় থার্টিফার্স্ট নাইটের নেই কোনো আয়োজন। তারপরো বছরের শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় এবং নতুন সূর্যদয়কে বরণ করতে ভিড় জমিয়েছে হাজারো পর্যটক।
সমুদ্রের ঢেউয়ে সাঁতার কাটাসহ দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতজুড়ে পর্যটকরা নেচে-গেয়ে প্রিয়জনের সাথে আনন্দে মেতেছেন। বাড়তি পর্যটকদের আনাগোনায় প্রাণচাঞ্চল্যটা ফিরে এসেছে কুয়াকাটায়।
এদিকে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণে ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও থানা পুলিশের সমন্বয়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সামাজিক দূরত্ব এবং মাস্ক ব্যবহারে প্রশাসন তৎপর থাকলেও সৈকতজুড়ে পর্যটকরা ছিল উদাসীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৈকতের জিরো পয়েন্ট, লেম্বুর চর, ঝাউবন, গঙ্গামতির লেক, কাউয়ার চর, মিশ্রিপাড়া, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন পল্লী এবং শুটকি পল্লীসহ দর্শনীয় স্পটে রয়েছে পর্যটকদের উচ্ছাসিত উপস্থিতি। কেউ নিজের স্মর্টফোনে সেলফি তুলছে। আবার কেউ বা গান, আড্ডা-গল্পে মেতে রয়েছে।
এদিকে প্রতিবছর ইংরেজি পুরনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয় হোটেল ও মোটেলগুলোকে। কিন্তু এ বছর তা চোখে পড়ছে না। তবে হোটেল-মোটেলে রুম বুকিং বেড়েছে। মহামারী করোনা কাটিয়ে একটি সুন্দর বছর পাওয়ার প্রত্যাশা করেছে স্থানীয় হোটেল-মোটেল মালিক।
কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা নসুরুল আলম ও শিলভিয়া সাফা বলেন, ক’দিন আগে আমেদের বিয়ে হয়েছে। দু’জনের সিদ্ধান্ত ছিলে ২১ সালে প্রথম দিনটা কুয়াকাটা কাটাবো। তাই বৃহস্পতিবার সকালে এখানে এসে পৌঁছেছি। দুপুরে হোটেলের রুম থেকে বেড়িয়ে বিভিন্ন স্পর্ট ঘুরেছি। এখাকানর পরিবেশ খুবই ভালো।
সৈকতজুড়ে উপচেপড়া ভিড় থাকলেও দেখা যায়নি স্বাস্থ্যবিধি
ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় থেকে আসা পর্যটক সুমনা ইসলাম বলেন, এর আগেও কুয়াকাটায় এসেছি। এ বছর ফ্যামিলিসহ ইংরেজি পুরনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে এখানে এসেছি।
কুয়াকাটা ইলিশ পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচলাক রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটের নেই কোনো আয়োজন। তারপরও ব্যাপক পর্যটকরের চাপ রয়েছে। আমারাও সাধ্যমতো সেবা দিচ্ছি।
আবাসিক হোটেল খাঁন প্যালেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাসেল খান জানান, নতুন বছরকে সামনে রেখে আমাদের হোটেলের রুম বুকিংয়ে ছাড় দেয়া হয়েছে।
পরিবারের সাথে বছরের প্রথম সূর্য দেখতে এসেছেন অনেকেই
অভিজাত হোটেল সিকদার রিসোর্ট এন্ড ভিলা’র জেনারেল ম্যানেজার ফয়সাল মাহমুদ চৌধুরি জানান, আমাদের হোটেলের রিজার্ভেশনের উপর আজকের জন্য ৫০% ছাড় রয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থবিধি মেনে নতুন বছরকে সামনে রেখে বারবিকিউ পার্টিও রয়েছে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জানান, আমাদের হোটেলকে নতুন করে সাজিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা গেস্ট রাখছি।
ট্যুর অপারেটারস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা’র (টোয়াক) সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, বিশেষ দিনগুলোতে কুয়কাটায় পর্যটকদের চাপ বেশি থাকে। নতুন বছর উপলক্ষে গত দুইদিন ধরে পর্যটকদের আগমন বেড়ে গেছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের এএসপি এম এম মিজানুর রহমান বলেন, আগত পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ দর্শনীয় স্থানে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যদের টহল অব্যাহত রয়েছে। জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে পূর্ব দিকে গঙ্গামতি, পশ্চিম দিকে লেম্বুর বন পর্যন্ত আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশ থাকবে। মোবাইল টিম ও রেসকিউ টিমও নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে।