নিজস্ব প্রতিবেদক:
এগারটি খাতে সেশন ফি আদায় হলেও সাতটিও বাস্তবায়ন হয়না অথচ বরিশাল বিএম কলেজে ভাউচার দিয়ে হাতানো হয় মোটা অংকের টাকা। শুধু তাই নয় এইচএসসি, অনার্স ও মার্স্টাস কোর্সে ভর্তির সময় শিক্ষাথীদের থেকে সরকারি ফি’র চেয়েও বাড়তি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এব্যাপারে বি এম কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: শফিকুর রহমান সিকদার বলেন, অনেকগুলো বিষয় ক্যাম্পাসে বাস্তবায়ন হয়না। সেগুলোর টাকা সরকারি হিসাব নম্বরে জমা হয়ে যায়। কিন্তু ভাউচার দিয়ে কলেজ কতৃপক্ষ তা ভুতুরে কর্মসূচী দেখিয়ে টাকা হিসাব নম্বর থেকে টাকা ব্যয় করে। এসময় তিনি আরো বলেন, বিএম কলেজ একটি শিক্ষার্থীবহুল প্রতিষ্ঠান এখানে একটা প্রোগ্রাম হাতে নিলে একেকটি ডিপার্টমেন্টের জন্য ্কমপক্ষে এক লাখ টাকা প্রয়োজন হয়। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় কিংবা জাতীয় প্রোগ্রাম রয়েছে যা অবশ্যই পালন করার নির্দেশনা থাকে। সুত্রে জানা গেছে, একাদশ ও সম্মান এবং মাস্টার্স পর্বে ভর্তির সময় সেশন ফি ধার্য করা হয় আভ্যন্তরীণ পরীক্ষা ফি ৪শ, ছাত্র সংসদ ২৫, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ৩০, সাহিত্য সংস্কৃতি ৫০, খেলাধুলা ৫০, আভ্যন্তরীণ ক্রীড়া ও কমনরুম ৪০, ম্যাগাজিন ৩০, স্কাউট ২৫, বিএনসিসি ৪০, কাব্য ১০, রেডক্রিসেন্ট ৫, পরিচয়পত্র ৩০, উন্নয়ন তহবিল ২০০, লাইব্রেরী ২৫, মসজিদ মন্দির ৫০, পরিবহন ২৫০, দরিদ্র তহবিল ২০, সেমিনার ফি ৩০সহ ল্যাবরেটরি ফি ১শ টাকা নেয়া হয়। সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে ৪শ ও সম্মান শ্রেণীতে ৫ হাজার ৫শ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। এসময় একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি ফি নেয়া হয়েছে ২৩শ টাকা এবং অনার্স শ্রেণীতে ভর্তি ফি নেয়া হয়েছে ২৫শ ৫০ টাকা। বিএম কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞান, বাংলা ইংরেজী, সমাজ কর্ম, ইসলামের ইতিহাস, ইতিহাস, দর্শন, বাংলা, হিসাব বিজ্ঞান, ফিন্যান্স, অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনাসহ অনার্স কোর্সে একাধিক বিষয় রয়েছে। ভর্তির সময় আদায়কৃত বিভিন্ন বিভাগরে খরচের খাতগুলোর ব্যাপারে অনার্সের একাধিক বর্ষের শিক্ষার্থী জানায়, ভর্তির সময় আমরা যে খাতওয়ারি টাকা দেই তা আদৌ বাস্তবায়ন হয়না। এমনকি অনার্স মাস্টার্স করে বের হয়ে গেলেও সেসব খাতের কোন কার্যক্রম দেখিনা। অথচ টাকা কিন্তু নিয়ে নিয়েছে। এসময় উস্মা প্রকাশকারী শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, ছাত্র সংসদ খাতে ২৫ এবং সেমিনার ফি ৩০ টাকা নেয়া হয়। এহিসেবে এবছর প্রায় ছয় হাজার শিক্ষাথী ভর্তি হয়েছে। কিন্তু এসংখ্যক শিক্ষার্থী থেকে সেশন ফির সময় মাত্র দুটি খাতেই নেয়া হয়েছে ৩লাখ ৩০ হাজার টাকা। সেশন ফি’র অন্যান্য খাত তো বাদই দিলাম। কিন্তু এটাকার কোন দৃশ্যমান ব্যয় আমরা দেখিনা। শুধু তাই ভর্তি হয়ে পাস করে বের হওয়ার প্রায় ৫-৬ বছরের মধ্যে এখাতে কোন অনুষ্ঠান বা কার্যক্রম দেখিনাই বা দেখিনা এখনও। অথচ আমাদের এই শিক্ষাজীবনের ৫-৬ বছরের মধ্যে আরো শিক্ষার্থী প্রতি বছর ভর্তি হয়। তাহলে এমোটা অংকের টাকা দিয়ে কি করে কলেজ কতৃপক্ষ। এরকোন সদুত্তর নেই। কারণ কলেজে ছাত্র সংসদ কার্যকর নেই। শুধু তাই নয় প্রতিটি বিভাগে সেমিনারও কার্যক্রম নেই। আর স্যারদের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে মৌখিক পরীক্ষার নাম্বার কম দিবে বা ফেল করাবে। যেকারণে শিক্ষাথীরা কোন বিষয়ে তেমন প্রতিবাদ করেনা। এরকম জিম্মিদশাতেই এমোটা অংকের টাকা হাতানো হয়। এদিকে অনুসন্ধানসুত্রে আরো জানা গেছে, চলতি বছরে বিএম কলেজ কতৃপক্ষ ত্রিশ লাখ টাকা ভাউচার করেছে ছাত্র সংসদ উন্নয়ন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে সেমিনারসহ পরিবহন সংস্কার খাতে। কিন্তু আদৌ চলতি বছরে এধরণের কোন কার্যক্রম কলেজে হয়নি। শুধু তাই নয় কলেজের পরিবহন সেক্টরে চরম নাজুক অবস্থা চলছে বছরের পর বছর অথচ মোটা অংকের টাকা ভর্তি মৌসুমে আদায় করা হয় শিক্ষার্থীদের থেকে এই পরিবহন খাতের জন্য। কলেজ বাসগুলোর মধ্যে দুটি বাস রয়েছে অত্যন্ত ঝুকিপুর্ণ। কিন্তু সংস্কার বিল হাকানো হলেও বাসের পরিবর্তন হয়না। পরিবহন বিভাগে কর্তব্যরত তত্বাবধায়ক এসএম রফিকুল ইসলাম বলেন আমাদেরকে কলেজের প্রশাসনিক বিভাগ থেকে যেরকম দেয়া হয় সেরকমই ব্যয় করতে হয়। অপরদিকে পুন ভর্তির ফি ধরা হয়ে সরকারিভাবে মাত্র ৬০ টাকা সেখানে একেকজন শিক্ষার্থী থেকে নেয়া হয়েছে সাড়ে ১৭শ টাকা। পুনু ভর্তি নেয়া হয় যারা সেশনের সময়েও রেজিস্ট্রেশন করতে পারেনি বা পরীক্ষায় পাস করতে পারেনি কিংবা অনুপস্থিত থেকেছে। বিশেশ পরিক্ষা নিয়ে তাদেরকে পাস করার সুযোগ দেয়া বছর লস নাহয়েই। এধরণের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী থেকে গত বছর মোটা অংকের টাকা হাতানো হয়েছে। আর উপরি হাতানোর এ সিন্ডিকেটে রয়েছে বিএম কলেজের ভর্তি শাখার খন্ডকালিন অফিস সহকারি সবুজ। এব্যাপারে তিনি বলেন আমি আপনার সাথে পরে যোগাযোগ করবো এখন ব্যস্ত রয়েছি।