• ১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

একে অপরকে দোষারোপে ব্যস্ত ভোগান্তি নগরবাসীর

admin
প্রকাশিত মে ১৯, ২০১৮, ১৮:৪৪ অপরাহ্ণ
একে অপরকে দোষারোপে ব্যস্ত ভোগান্তি নগরবাসীর

এম.এস.আই লিমনঃ
প্রথম রমযানেই নগরবাসীদের ভোগান্তীতে পরতে হয়েছে বিসিসি’র উদাসীনতায়। সব দোষ কাউন্সিলরদের খামখেয়ালিপানায় বললেন পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দীপক লাল। গতকাল জুম্মার পর পরেই বৃষ্টি হয়েছে বরিশাল নগরীতে। প্রথম রমযানের ইফতারের সময়ও নগরীর প্রায় সড়কগুলোয় পানিতে ছিল থৈথৈ।পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কাউন্সিলরদের খামখেয়ালিপনাকেই দোষারোপ করেছেন এর কারন হিসেবে।গতকাল দুপুরে বৃষ্টি হওয়ার কারনে নগরীর কিছু সড়ক পানিতে ঢুবে হাটু জ্বলের পানিতেই দুর্ভোগে পরতে হয়েছে রোজাদার মসুল্লী সহ সাধারন নগর বাসীদের। অভিযোগ করে মুসুল্লীরা জানায়, বিসিসি’র পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা সঠিক ভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করছে না বিধায় ড্রেনে ময়লা আবর্জনাতে আটকে গিয়ে বৃষ্টির পানি রাস্তা থেকে নামতে পারছে না।অভিযোগের বিষয় পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,ওয়ার্ড কাউন্সিলররা তাদের ব্যক্তিগত কাজে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের ব্যবহার করার কারনে ড্রেন পরিস্কার হচ্ছে না ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে আসছে। পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা আরো বলেন ড্রেন পরিস্কার কাজ কাউন্সিলররাই তদারকি করে। অপরদিকে ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী আখতারুজ্জামান হিরু জানায়, প্রয়োজনের তুলনায় তিন গুন বেশী জনবল থাকার পরেও তাদের কাজের বেলায় পাওয়া যায় না। তাদের প্রতিদিন ৮ ঘন্টা কাজের নিয়ম থাকলেও ২ ঘন্টাও কাজ করছে না। তাদের কাজের গাফেলতির দোষ নিজেদের ঘারে না নিয়ে কাউন্সিলরদের ঘাড়ে চাপাচ্ছে বলেও জানান তিনি। অপর দিকে প্যানেল মেয়র মোশারফ আলী খান বাদশা জানায়, পরিচ্ছন্নতার কাজের কর্মীরা মিটিং মিছিলে ব্যস্ত সময় পার করে। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেটা শাঁক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মাত্র। তাদের ওয়ার্ড পরিচ্ছন্ন কিংবা নগরের কাজে ডাকা হলে মিটিং মিছেলে ব্যস্ত বলে আসছে আর নগরবাসীদের দূর্ভোগ সৃষ্টি করে তাদের উপর দোষ চাপাচ্ছে। পরিচ্ছন্নতার কাাজে প্রতিদিন ৪৭৭ জন কর্মরত থাকলেও যথা সময়ে যথাযথ ভাবে অর্ধেকো কাজ করছে না বলেও জানায় তারা। অন্নান্য কাউন্সিলররাই একই কথা জানিয়ে বলেন, পরিচ্ছন্নতা বিভাগের গাফেলতি সেচ্ছাচারীতায় যে ভোগান্তীতে পরতে হচ্ছে নগরবাসীদের সে বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার সিটি মেয়র আহসান হাবীব কামালকে অবহিত করেছেন সকল কাউন্সিলররা।
এদিকে,একটু বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে যায় বরিশাল নগরী। নগরীর প্রাণ কেন্দ্র সদর রোড, গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কসহ নগরীর নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায় পানিতে। যার কারণে অকল্পনীয় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বরিশালবাসীকে। গতকাল দুপুরের বৃষ্টির পানিতে জলবাদ্ধতার সৃষ্টি হয় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে। নগরীর ড্রেনগুলোর ময়লা আবর্জনা পরিচ্ছন্নতা সঠিক ভাবে হওয়ার কারণে এমনটা হচ্ছে বলে নগরবাসীর দাবি। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিভিন্ন স্থানের ড্রেনের মুখ আটকে থাকা ও বৃষ্টিতে পানির পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় সড়কে পানি জমে যায়। বৃষ্টির পর নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোড, কলাপট্টি, স্টেডিয়াম এলাকাসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা-বগুড়া রোড, নবগ্রাম রোড, কালুশাহ সড়ক, মল্লিক রোড, কালিবাড়ি সড়ক, ফকিরবাড়ি ও কাউনিয়ায় ঘুরে দেখা গেছে, সব সড়কেই পানি জমেছে। কোথাও কোথাও হাঁটু পানি হয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন কর্মজীবী মানুষসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। নগরবাসী জানিয়েছে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ২১শ কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার পরও তারা কাজ না করার কারণে নগরীর ড্রেনগুলো ময়লা- আবর্জনায় আটকে থাকছে। এমনকি বছরেও একবার মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো হচ্ছে না। যার কারণে জলাবদ্ধতা ও মশার কামড়ে অতিষ্ঠ বরিশালবাসী।১৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানান, ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করার কারণে এখন বৃষ্টি হলেই তাদের ঘরে পানি ঢুকে যায়। অচল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণেই সড়কগুলোতেও পানি জমে থাকছে বলে জানিয়েছেন তারা। নগরীর কালীবাড়ি রোডের ব্যবসায়ী মো: আনোয়ার হোসেন জানায়, একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায় রাস্তায়। বিশেষ করে শ্রী নাথ চ্যাটার্জী লেনের পুরো রাস্তাই পানিতে ডুবে যায়। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদের। বিসিসি’র ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা না থাকার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিসিসি’র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দিপক লাল মৃধা জানান, কাউন্সিলরা কর্মীদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার কারনেই এমন জলাবদ্ধতার সৃস্টি হচ্ছে।পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দেখভালের জন্য ২২ জন সুপারভাইজার রয়েছেন তাদেরকেও কাউন্সিলদের ব্যক্তিগত কাজ করার জন্য বাধ্য করা হচ্ছে বলেন। ড্রেনেজ ব্যবস্থা আরো গতিশীল করতে তারা কাজ করছেন বলে জানান সিটি মেয়র কামাল। এ ব্যাপারে বিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ড্রেনের মধ্যে বালু ও ময়লা পড়ে থাকার কারণে এমন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া অনেক সড়কের পাশেই ড্রেন নেই; ফলে বৃষ্টি হলেই পানি সড়কে উঠে যাচ্ছে। সেখানে নতুন করে ড্রেন নির্মাণ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।এ বিষয়ে সিটি মেয়র আহসান হাবীব কামাল জানান, রজমান মাসে নগরবাসীদের যাতে কোন দূর্ভোগ সৃষ্টি না হয় সে লক্ষে জোড়দার ভাবে কাজ করবে বিসিসি কতৃপক্ষ।