বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল ॥ উজিরপুর উপজেলার ভরসাকাঠী গ্রামে ২য় স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছে পাষন্ড স্বামী বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের ভরসাকাঠী গ্রামের মৃত আঃ রহিম হাওলাদারের ছেলে ছালাম হাওলাদার খোলনা গ্রামের ইসমাইল হাওলাদারের মেয়ে নাছিমা বেগমকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিবাহ করে। তাদের দাম্পত্য জীবনে ১ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। এছাড়াও লম্পট ছালাম হাওলাদার, শাহানাজ বেগম, হাফিজা বেগম, খাদিজা বেগমসহ ৪ নারীকে বিবাহ করে।
নির্যাতনের শিকার নাছিমা বেগম কান্না করে সাংবাদিকদের জানান, সে তা বাবার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে বিদেশে যান। প্রবাসে থেকে কয়েক বছরে উপার্জিত প্রায় ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় তার স্বামী ছালাম হাওলাদার। এমনকি তার টাকা দিয়ে জমি কিনে পাকা ভবন নির্মাণ করে। কিছু দিন পূর্বে নাছিমা বেগম বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরে টাকার হিসেব চাওয়ায় লম্পট ছালাম হাওলাদার ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং তাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে ফেলে লাশ গুম করার হুমকি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৮ জানুয়ারি রাতে ঘরের দরজা বন্ধ করে হাত-পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এরপর ৯৯৯ এ ফোন করলে উজিরপুর মডেল থানার এসআই আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থল থেকে নির্যাতনের শিকার নাছিমা বেগমকে উদ্ধার করে। তবে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান নাছিমা বেগম।
নাছিমা বেগম আরো অভিযোগ করে বলেন, তার টাকায় কেনা জমি ও ভবন তার নামে লিখে দেয়ার কথা বলে তার স্বর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে পাষন্ড স্বামী। এছাড়াও ইতিপূর্বে ছালাম হাওলাদার তার স্ত্রীকে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় মারধর করে গর্ভে থাকা শিশুকে হত্যা করেও ক্ষ্যন্ত হয়নি। এরপরেও তার অমানবিক নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। অপরদিকে বিয়ের নামে প্রতারণার শিকার হয়ে একাধিক নারী স্বর্বস্ব হারিয়েছে।
স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি জানান, ছালাম হাওলাদার লম্পট ও নারীলোভী। সে বিয়ের নামে ব্যবসা করে। প্রতারণা করে ৪ নারীকে বিয়ে করে। এরমধ্যে ৩ জনকে বিদেশে পাঠিয়ে প্রতারণা করে স্ত্রীদের আয় উপার্জনের টাকা হাতিয়ে নিয়ে মাদক ও জুয়ায় মক্ত হয়। বিয়ে করা তার নেশা ও পেশায় পরিনত হয়েছে। পরবর্তীতে তার স্ত্রী দেশে ফিরে আসলে হামলা চালায় এবং হত্যার হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এদিকে বিচারের দাবীতে নির্যাতনের শিকার নাছিমা বেগম দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছালাম হাওলাদারকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমার স্ত্রীকে আমি মারধর করেছি, আমি আমার স্ত্রীর টাকা দিয়ে ভবন নির্মাণ করেছি, তাতে সমস্যা কেথায়।
উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাফর আহম্মেদ জানান, অভিযোগ প্রাপ্তির পরে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে ওই নারীলোভী প্রতারককে গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ও এলাকাবাসী।