• ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আমতলীতে খাদ্য গুদামের ঘাটে ভাঙা সিঁড়ি দিয়ে মালপত্র ওঠানামা, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত আগস্ট ১৮, ২০২৫, ১৯:০৫ অপরাহ্ণ
আমতলীতে খাদ্য গুদামের ঘাটে ভাঙা সিঁড়ি দিয়ে মালপত্র ওঠানামা, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

filter: 0; fileterIntensity: 0.0; filterMask: 0; captureOrientation: 0; algolist: 0; multi-frame: 1; brp_mask:0; brp_del_th:null; brp_del_sen:null; delta:null; module: photo;hw-remosaic: false;touch: (0.63759226, 0.7290276);sceneMode: 8;cct_value: 0;AI_Scene: (-1, -1);aec_lux: 0.0;aec_lux_index: 0;albedo: ;confidence: ;motionLevel: -1;weatherinfo: weather?Rain, icon:6, weatherInfo:104;temperature: 40;

জাকির হোসেন, আমতলী॥ পায়রা নদীর ঘাটে কার্গো থেকে মালপত্র আমতলী খাদ্য গুদামে ওঠানো এবং গুদাম থেকে মালপত্র নামানোর জন্য বাঁশের খুঁটির ওপর কাঠ দিয়ে নিজেদের টাকায় বানোনো নড়বড়ে সিঁড়ি দিয়ে ১৮ বছর ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকরা কাজ করছেন।

ঝুঁকিপূর্ন এই কাজ করতে গিয়ে যে কোনো সময় সিঁড়ি ধসে শ্রমিকদের জীবনহানির মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমতলী উপজেলা খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২২ বছর পূর্বে ২০০৩ সালে জেলা খাদ্য অফিস আমতলী খাদ্য গুদাম ঘাটের পায়রা নদীতে কারগো থেকে সরকারী মাল উঠানো এবং নামানোর জন্য লোহার খুটির উপর ১০ ফুট পাঁকা (ঘাটের কিনারে) এবং নদীর দিকে ২০ ফুট কাঠের পাটাতন দিয়ে একটি সিঁড়ি নির্মান করে দেয়।

২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরের সময় সিঁড়িটির ঢালাইয়ের একটি অংশ এবং কাঠের তক্তা এবং সামনের খুটি ধসে পড়ে। এর পর রোয়ানু রিমালসহ বিভিন্ন দুর্যোগের সময় পায়রা নদীর জলোচ্ছাসে সিঁড়িটি নদীর মাটিতে মিশে যায়।

এর পর সরকারী ভাবে সিঁিড়টি আর কোন সংস্কার করা হয়নি। এ অবস্থায় শ্রমিকরা নিরুপায় হয়ে নরবড়ে ওই সিঁড়ির সামনের অংশে নিজেদের টাকায় বাঁশের খুটির উপর কাঠের তক্তা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে মাল ওঠানো এবং নামানোর কাজ করছেন।

বাঁশের খুটি এবং কাঠের তক্তা পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকরা প্রতিবছরই এভাবে নিজেদের টাকায় বাঁশ কাঠের তক্তা কিনে সংস্কার করছেন।

রবিবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, লোহার সিঁড়িটির পাকা ঢালাই এবং সমানের অংশ সম্পূর্ন ধসে পরায় বাঁশের খুটির উপর কাঠের তক্তা দিয়ে শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অত্যান্ত কষ্ট করে কারগো থেকে ৫০-১০০ কেজি ওজনের চালের বস্তা মাথায় করে উপরে তুলছেন।

এতে তাদের ভোগান্তি আর বিরম্বনার যেন শেষ নেই। এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে ইতিপূর্বে সিঁড়ি থেকে বস্তাসহ নীচে পরে ২০১৬ সালে ৩জন এবং ২০১৮ সালে ৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

শ্রমিক হাবিব ফকির জানান, কার্গো থেকে চাউলের বোস্তা উডাইতে ভয় পাই। চাউলের বোস্তা লইয়া বাঁশের খুডির উপরে উডলে সিড়ি খালি লড়তে থাহে হেই সময় ব্যামালা ডর লাগে।

আরেক শ্রমিক বাদশা বয়াতি বলেন, মাল উডানের সময় যদি মোগো পা ফইসকা যায় হেলে সোজা পনিতে পইর‌্যা মোরা মইর‌্যাও যাইতে পারি। ঘাটের শ্রমিক সরর্দার মো. আনিছুর রহমান বলেন, ১৮ বছর ধরে খাদ্য গুদামের ঘাটের সিঁড়িটি খুবই খারাপ অবস্থায় আছে।

খালের দিকের খুটি এবং পাটাতন না থাকায় বাঁশের খুটির উপর তক্তা দেওয়া সিঁড়ি দিয়ে শ্রমিকরা ভয়ে মাল উঠাতে চায় না। তারপরও বাঁশের খুটির উপর আলগা তক্তা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহু কষ্টে শ্রমিকরা মাল ওঠানো এবং নামানোর কাজ করছে।

দ্রুত সিঁড়িটি নতুন ভাবে নির্মানের দাবী জানান তিনি। আমতলী উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শান্তি রঞ্জন দাস বলেন, সিঁড়িটির অবস্থা খুব খারাপ।

এই সিঁড়ি দিয়ে মাল উঠানোর সময় যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এটি নতুন ভাবে নির্মানের জন্য উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে জানানো হয়েছে।

আমতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোসাম্মাৎ শারমিন জাহান বলেন, খাদ্য গুদাম ঘাটের সিড়িটি নির্মানের জন্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তানভির হোসেন আমতলী খাদ্য গুদামের ঘাটের দুরবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, এটি সংস্কারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বার বার জানানো হয়েছে। এবং বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তাদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।